ওয়াশিংটন পোস্টের পুলিৎজার পুরস্কারপ্রাপ্ত কার্টুনিস্ট অ্যান টেলনিস পত্রিকার মালিক জেফ বেজোসের ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন প্রকাশে বাধা দেওয়ার পর পদত্যাগ করেছেন। খবর বিবিসি।
টেলনিস একটি কার্টুন তৈরি করেছিলেন যেখানে জেফ বেজোস, মেটার প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ এবং ওপেনএআই-এর সিইও স্যাম অল্টম্যানকে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি মূর্তির সামনে হাঁটু গেড়ে টাকা দিতে দেখা যায়। কার্টুনে ডিজনির মালিকানাধীন এবিসি নিউজের প্রতিনিধিত্ব করতে মিকি মাউসকেও একই ভঙ্গিতে দেখানো হয়েছে।
ওয়াশিংটন পোস্টের সম্পাদকীয় পৃষ্ঠার সম্পাদক ডেভিড শিপলি কার্টুনটি প্রকাশ না করার কারণ হিসেবে বিষয়টির পুনরাবৃত্তি এড়ানোর কথা বলেছেন। তবে টেলনিস এই সিদ্ধান্তকে “গেম চেঞ্জার” এবং “মুক্ত সংবাদপত্রের জন্য বিপজ্জনক” বলে আখ্যা দিয়েছেন।
শুক্রবার একটি সাবস্ট্যাক পোস্টে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে টেলনিস লিখেছেন, “২০০৮ সাল থেকে এই পত্রিকার সাথে কাজ করছি। এত বছর ধরে কখনো এমন হয়নি যে, আমি যাকে বা যেটাকে লক্ষ্য করেছি তা নিয়ে কার্টুন তৈরি করায় আমার কাজ আটকে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এবার তা হলো।”
তিনি বলেন, “কার্টুনটি সেই বিলিয়নিয়ার প্রযুক্তি ও গণমাধ্যম প্রধানদের সমালোচনা করেছিল, যারা ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষে সুবিধা পাওয়ার চেষ্টা করছেন।”
তবে শিপলি তার সিদ্ধান্তের পেছনে কোনো অশুভ প্রভাব থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে একই বিষয়ের উপর একটি কলাম প্রকাশ করেছি এবং আরেকটি স্যাটায়ার কলাম প্রকাশের জন্য নির্ধারিত ছিল। তাই কার্টুনটি পুনরাবৃত্তি এড়ানোর জন্য প্রকাশ করা হয়নি।”
এর আগেও টেলনিসের একটি কার্টুন ওয়াশিংটন পোস্টে বাতিল হয়েছিল। ২০১৫ সালে, তিনি টেক্সাসের সিনেটর টেড ক্রুজের দুই মেয়েকে বানরের মতো চিত্রিত করেছিলেন। তখন পত্রিকাটি বলেছিল, তাদের সম্পাদকীয় নীতিতে শিশুদের বিষয়বস্তু এড়িয়ে চলা হয়।
সম্প্রতি জেফ বেজোস ঘোষণা দেন, ট্রাম্পের অভিষেক তহবিলে অ্যামাজনের মাধ্যমে ১ মিলিয়ন ডলার অর্থ সহায়তা এবং ১ মিলিয়ন ডলার সমমূল্যের অবদান রাখবেন। ট্রাম্পের পুনঃনির্বাচনকে “অসাধারণ রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তন” বলে বর্ণনা করেন তিনি এবং মার-এ-লাগোতে ট্রাম্পের সাথে নৈশভোজে অংশ নেন।
ওয়াশিংটন পোস্ট এই পদক্ষেপের জন্য ব্যাপক সমালোচনার সম্মুখীন হয়। নির্বাচনের আগে কমলা হ্যারিসকে সমর্থন জানাতে পত্রিকার সম্পাদকীয় বোর্ডকে বাধা দেওয়ার ঘটনায় পত্রিকাটি ২.৫ লাখের বেশি গ্রাহক হারায়।
ডিবিটেক/বিএমটি