মোট ৩ অধ্যায় ৬৯টি ধারা নিয়ে গত ৪ জুলাই ডিজিটাল বাণিজ্য পরিচালনা নির্দেশিকা ২০২১ প্রকাশ করেছে সরকার। এর তৃতীয় অধ্যায়ে ডিজিটাল মাধ্যমে বাণিজ্য পরিচালনার নিয়মে মাল্টিলেভেল মার্কেটিংকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ব্যাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি ছাড়া সকল ধরনের ডিজিটাল ওয়ালেট বা গিফট কার্ড অথবা ক্যাশ ভাউচারের মাধ্যমে ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে না। তবে ‘এসক্রো’ সুবিধা নিয়ে শতভাগ পণ্যমূল্য অগ্রিম গ্রহণ করতে পারবেন ডিজিটাল ব্যবসায়ীরা।
মঙ্গলবার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে নীতিমালার এসব শর্ত তুলে ধরে বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুন্সি বলেছেন, আগ্রাসী নয় প্রতিযোগিতা মূলক ডিজিটাল ব্যবসায়ের স্বার্থেই এই নীতিমালা। এটা লঙ্ঘন করলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে। তবে শাস্তি নয়, সুশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতেই এই এই নীতিমালা বলে মত দিয়েছেন মন্ত্রী।
ই-ক্যাব আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে সূচনা বক্তব্যে সীমাহীন ডিসকাউন্টের বাণিজ্য মডেল নিয়ে উদ্বেগের পরিপ্রেক্ষিতে ডিজিটাল ব্যাবসায়কে ভোক্তা ও ব্যবসায় বান্ধব করতে দ্রুততার সঙ্গে ডিজিটাল বাণিজ্য পরিচালনা নির্দেশিকা ২০২১ প্রণয়ন করা হয়েছে বলে জানান বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ। আর নীতিমালার অভিযোগ নিষ্পিত্তিতে প্রতিটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানে একজন কমপ্লায়েন্স পার্সন রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে বলে জানান বাণিজ্য সচিব।
বক্তব্যে ই-ক্যাব সভাপতি শমী কায়সার বলেছেন, গত এক বছরে উত্থাপিত ভোক্তাদের নানা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উদ্যোক্তারা যেনো সমতার ভিত্তিতে এই এসওপিটি প্রণয়ন করা হয়েছে। আর এটা বাস্তবায়নে ভোক্তাদের মধ্যে ডিজিটাল লিটারেসি বিষয়ে সচেতন করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন তিনি।
বক্তব্যে নীতিমালার কঠোর প্রয়োগের ওপর জোর দিয়েছেন বেসিস প্রেসিডেন্ট সৈয়দ আলমাস কবির। তিনি বলেন, দেশে দীর্ঘদিন ধরেই কপিরাইট আইন লঙ্ঘন হচ্ছে। এই নীতিমালাটাও যেন তা না হয়। প্রয়োজনে অপরাধীদের ট্রেডলাইসেন্স বাতিল করতে হবে। তবে উদ্যোক্তাদের হাত-পা বেধে সাঁতার কাটতে বাধ্য না করার বিষয়েও আমাদের নজর রাখতে হবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ই-ক্যাব সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহেদ তমাল জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ব্যাংক কোনো অভিযোগ আসলে ই-ভ্যালি ও আলিশা মার্টের মতো প্রতিষ্ঠানের সদস্যপদ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেবে ই-ক্যাব। তবে এর আগে তাদেরকে সতর্ক করা হবে। এরপরও নিয়মের লঙ্ঘন হলে আইনশৃঙ্খলা কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হবে ই-ক্যাব।
সংবাদ সম্মেলনে ডব্লিউটিও মহাপরিচালক হাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, পণ্য দেওয়ার কথা বলে চেকের মাধ্যমে যারা টাকা দিতে চেষ্টা করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান মোঃ মফিজুল ইসলাম ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন পরিষদের মহাপরিচালক বাবলু কুমার সাহা, আইএসপিএবি মহাসচিব এমদাদুল হক, উই সভাপতি নাসিমা আক্তার নিশা সংবাদ সম্মেলনে সংযুক্ত ছিলেন।