সিঙ্গাপুরের গ্রান্ড হায়াত হোটেলে অনুষ্ঠিত এশিয়া প্যাসিফিক রিজিওনাল ইন্টারনেট গভর্ন্যান্স ফোরামের (এপিআরআইজিএফ) ১৩তম সম্মেলনে গুগল, ফেসবুক, ইউটিউব ও টুইটারের মতো বৈশ্বিক টেক জায়ান্টগুলো বাংলাদেশে অফিস স্থাপন না করায় স্থানীয় মানের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে অভিমত জানিয়েছে বিআইজিএফ। একইসঙ্গে এই অঞ্চলের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলেও বৈশ্বিক ইন্টারনেট প্রশাসনের নজরে আনা হয়েছে।
বুধবার সমাপনী দিনে টেক জায়ান্টগুলো যেহেতু এ বিষয়ে উন্নাসিক; সেজন্য সফটওয়্যার স্থানীয়করণ এবং স্থানীয় ভাষা পরিষেবার ক্ষেত্রে এই অঞ্চলের টেক জায়ান্টদের আঞ্চলিক জোট ‘এশিয়া ইন্টারনেট কোয়ালিশন’ (এআইসি)-এর দৃষ্টি কেড়েছে বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম (বিআইজিএফ)। জাতীয়ভাবে ইন্টারনেটের সার্বভৌমত্ব অক্ষুন্ন রেখে সার্বজনীন আইন প্রণয়নে অংশীজনদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে একটি বৈশ্বিক মানের নীতি প্রণয়নে বিআইজিএফ-এআইসি নীতি সংলাপ আয়োজনের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল।
সভায় প্রস্তাবটি উপস্থাপন করেছেন বিআইজিএফ চেয়ারপার্সন এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান হাসানুল হক ইনু। এসময় সংগঠনটির মহাসচিব মোহাম্মাদ আব্দুল হক অনু তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন।
সভায় এআইসি’র পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সংস্থাটির পলিসি কমিউনিকেশন ম্যানেজার তাইসা গ্রেস অ্যান্টনি (Taisha Grace Antony) ও গ্লোবাল গভর্নমেন্ট রিলেশন পিটিই লিমিটেডের গভর্নমেন্ট রিলেশনস অ্যানালিস্ট মার্ক চ্যান (Mark Chan)।
সভার আলোচনা বিষয়ে বিআইজিএফ চেয়ারম্যান হাসানুল হক ইনু ডিজিবাংলা-কে জানান, সময়ের প্রয়োজনে আমাদের দেশে টেলিযোগাযোগ আইন, আইসিটি অ্যাক্ট ২০০৬, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট ২০১৮ সংশোধন শুরু হয়েছে। এছাড়াও এভিডেন্স অ্যাক্ট ২০২২, ডিজিটাল সার্ভিস অ্যাক্ট, ডিজিটাল কারেন্সি অ্যাক্ট, ডাটা প্রটেকশন অ্যাক্ট, ওটিটি পলিসি/অ্যাক্ট এর খসড়া করা হয়েছে। পাশাপাশি ব্রডব্যান্ড পলিসি রিভিউ করা হচ্ছে। ফলে আইনগুলো যেনো জনবান্ধব হয় সে জন্য অংশীজনদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে বিআইজিএফ অন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা ও সমন্বয়ের ওপর গুরুত্ব দিয়ে এআআইসি’র সঙ্গে ডায়ালগ আয়োজনের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এতে ইন্টারনেটের এই গ্লোবাল ভিলেজে নিজেদের স্বকীয়তার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও কাজ করা সহজ হবে।
প্রসঙ্গত, এশিয়া ইন্টারনেট কোয়ালিশন হচ্ছে এশিয়া প্রশান্তমহাসগরিয় অঞ্চলে ইন্টারনেট নীতি প্রণয়ন ও অ্যাডভোকেসির একমাত্র সংগঠন যা এই অঞ্চলে অ্যাপল, মেটা, ফেসবুক ও গুগলের মতো প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্ব করে। তাই এই সংগঠনটির সঙ্গে নতুন নতুন আইন ও নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা এবং বিভিন্ন ইস্যুতে অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বিআইজিএফ।