অর্ধ শতাব্দীরও বেশি সময় পর চাঁদে আবার মানুষ পাঠানোর পরিকল্পনায় আরও একধাপ এগিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও মাঝপথেই ফের বাধার সম্মুখীন হলো মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। কেননা পৃথিবীর কক্ষপথ থেকে চাঁদের দিকে যাওয়া ‘ক্যাপস্টোন’ স্যাটেলাইটের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে সংস্থাটি।
পৃথিবীর কক্ষপথ থেকে চাঁদে যাওয়ার সময় হঠাৎ করেই স্যাটেলাইটটির সঙ্গে যোগাযোগ হারিয়ে ফেলে নাসা। স্যাটেলাইটটির কম্পিউটারগুলোর সঙ্গে পুনরায় যোগাযোগ স্থাপন করতে কাজ করে যাচ্ছে নাসার বিজ্ঞানীরা।
এক বিবৃতিতে নাসা জানিয়েছে, “৪ জুলাই ‘ক্যাপস্টোন’ স্যাটেলাইটের সফল উৎক্ষেপণের পর ‘ডিপ স্পেস’ নেটওয়ার্কের সঙ্গে যোগাযোগ সংশ্লিষ্ট সমস্যার মুখে পড়েছে মহাকাশযানটি।”
MISSION UPDATE: Teams are working to re-establish contact with our #CAPSTONE spacecraft which experienced communications issues while in contact with the Deep Space Network. Additional updates will be provided as soon as possible: https://t.co/gRhJKAAZPn pic.twitter.com/IHuurVI5Bm
— NASA Ames (@NASAAmes) July 5, 2022
প্রায় ২৫ কেজির এই কিউবাকৃতির ‘সিসলুনার অটোনমাস পোজিশনিং সিস্টেম টেকনোলজি অপারেশন্স অ্যান্ড ন্যাভিগেশন এক্সপেরিমেন্ট ’ বা ‘ক্যাপস্টোন’ এর চাঁদে যাওয়ার বিষয়টি উঠে এসেছিল প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট এনগ্যাজেটের প্রতিবেদনে। আর স্যাটেলাইটটির যোগাযোগ হারানো নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সিনেট।
গত সপ্তাহে নিউ জিল্যান্ড থেকে একটি ‘ইলেকট্রন’ রকেটে স্যাটেলাইটটির উৎক্ষেপণ করেছিল মহাকাশ সরঞ্জাম নির্মাতা রকেট ল্যাব। পরবর্তী ছয় দিনে পৃথিবীর কক্ষপথ থেকে প্রয়োজনীয় গতি সংগ্রহ করে চাঁদের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছিল স্যাটেলাইটটি। যাত্রাটি তুলনামূলক ধীরগতির হওয়ায় নভেম্বর মাসের আগ পর্যন্ত এর চাঁদে পৌছানোর সম্ভাবনা নেই। চাঁদের কাছাকাছি কোনো এক ‘রেকটিলিনিয়ার হেলো’ কক্ষপথে স্যাটেলাইটটি স্থাপনের কথা ছিল নাসার, যা এর আগে কখনও হয়নি। তবে, যোগাযোগ হারানোর কারণে সেই সম্ভাবনাও এখন প্রশ্নের মুখে পড়েছে।
বহুল প্রতীক্ষিত ‘গেটওয়ে’ মহাকাশ স্টেশনের জন্য একই কক্ষপথ ব্যবহারের পরিকল্পনা করছিল সংস্থাটি, যেখানে আর্টেমিস প্রকল্পের অধীনস্থ সকল ‘দীর্ঘ সময়ের’ চন্দ্রাভিযানকে সমর্থণ দেওয়ার কথা কক্ষপথটির। নভোচারীদের জন্য একটি ল্যাব ও থাকার জন্য কয়েকটি আবাসন সুবিধা থাকতে পারে এই মহাকাশ ফাঁড়িতে। তবে, অন্তত ২০২৪ সালের আগে অভিযানটি শুরুর সম্ভাবনা নেই।
গত সপ্তাহের খবর অনুযায়ী, ‘আর্টেমিস ১’ অভিযানের জন্য ২৩ অগাস্ট ও ৬ সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে একটি উৎক্ষেপণের লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে নাসা। চাঁদে যাত্রা মানব শরীরে কী ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে, সেটি যাচাইয়ের জন্য এই উৎক্ষেপণে যাত্রীবিহীন একটি মডিউল পাঠাবে নাসা। জুন মাসে আর্টেমিস ১-এর একটি সফল ‘ওয়েট লঞ্চ’ পরীক্ষা করেছিল সংস্থাটি।