স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে বিজয়ের মাসের প্রথম দিন বুধবার বর্ণাঢ্য আয়োজনে রাজধানীর নিউ এলিফ্যান্ট রোডে অবস্থিত দেশের সর্ববৃহৎ আইটি মার্কেট কম্পিউটার সিটি সেন্টারে (মাল্টিপ্ল্যান) শুরু হলো মাসব্যাপী প্রযুক্তি পণ্যে ‘বিজয় উৎসব-২০২১’। ভার্চুয়ালি মেলা প্রাঙ্গনে সংযুক্ত হয়ে মাসব্যাপী এই উৎসবের উদ্বোধন করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “ডিজিটাল বাংলাদেশে এখন কম্পিউটার পণ্য বা সেবা পৌঁছে দিচ্ছে আমাদের কম্পিউটার ব্যবসায়ীরা। আমি ধন্যবাদ জানাই কম্পিউটার সিটি সেন্টারকে। যারা সারাদেশ ব্যাপী কম্পিউটার পণ্য ও সেবা পৌঁছে দিচ্ছে আমি তাদেরকে আরো একবার ধন্যবাদ জানাই। করোনার এই অবস্থায়ও ব্যবসায়ীরা যে সেবা দিয়ে গেছে, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। বিজয়ের এই কম্পিউটার উৎসব দেশ ব্যাপী ছড়িয়ে যাক ও সফল হোক।”
তিনি আরো বলেন, আমরা ৫জি ১২ ডিসেম্বরে প্রবেশ করব। স্যামসাং, নোকিয়াসহ অনেকেই বাংলাদেশে কাজ শুরু করেছে। আমরা এখন বাংলাদেশ থেকে কম্পিউটার কম্পিউটারসহ অনেক প্রযুক্তি পণ্য রপ্তানি করছি। উন্নত দেশ হতে আমাদের ৪১ সাল লাগবে না।
অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক মুক্তিযুদ্ধকালীন ঢাকা জেলা কমান্ডার (বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্স (বিএলএফ)) ও সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তফা মহসীন মন্টু বলেন, সাইবার নিরাপত্তার বিষয়টি জোরালোভাবে তুলে ধরেন এবং জন কল্যাণে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করার তাগিদ দেন। তথ্যপ্রযুক্তি জাতীর জন্য তখনই সুফল বয়ে আনবে, যখন মানব কল্যাণে এর ব্যবহার হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন এ আয়োজনের আহ্বায়ক ও কম্পিউটার সিটি সেন্টারের সভাপতি তৌফিক এহেসান। আহ্বায়কে বক্তব্যে তৌফিক এহেসান বলেন, “দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে বৃহত্তম আইটি পণ্যের শপিং মল হিসেবে ইতোমধ্যে সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কম্পিউটার সিটি সেন্টার পরিচিতি লাভ করেছে। শুধু তাই নয়, এই মার্কেটটি প্রযুক্তি পণ্যেও মান ও প্রতিযোগিতামূলক দাম এর জন্যও সারাদেশে প্রযুক্তি পণ্য ক্রেতাদের কাছে বিশ্বস্ত একটি নামও বটে।
ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রগতি ও তথ্যপ্রযুক্তির সর্বাধুনিক প্রযুক্তি পণ্যের বিপণন ও প্রদর্শনীর আয়োজন থাকবে এ বিজয় উৎসবে। আমাদের লক্ষ্য দেশের সর্বস্তরের মানুষের মাঝে ও ঘরে ঘরে তথ্য-প্রযুক্তি পৌঁছে দেওয়া, কম্পিউটারসহ তথ্যপ্রযুক্তি পণ্যের ব্যবহারের বিস্তৃতি ব্যাপক হারে বাড়ানো।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র, গ্লোবাল ব্র্যান্ড (প্রা:) লিমিটেডের চেয়ারম্যান আব্দুল ফাত্তাহ, স্মার্ট টেকনোলজিস (বিডি) লিমিটেডের পরিচালক জাফর আহমেদ, এক্সেল টেকনোলজিস লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক গৌতম সাহা, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামীলীগ এর ১নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট কাজী মোর্শেদ হোসেন (কামাল)।
কম্পিউটার সিটি সেন্টার শপ হোল্ডার্স সোসাইটি আয়োজিত ‘বিজয় উৎসব-২০২১’ নিয়ে শুরু থেকেই প্রযুক্তিপ্রেমীদের মনে অধীর আগ্রহ ছিল। উদ্বোধনী দিনেই সেই আগ্রহ উপস্থিত প্রযুক্তিপ্রেমীদের মধ্যে লক্ষ্য করা যায়। মাসব্যাপী বিজয় উৎসব- ২০২১ এ থাকবে নানান ধরনের আকর্ষণীয় আয়োজন। প্রযুক্তি পণ্যের আমদানীকারক ও ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্যের বিপণন ও প্রদর্শনী করবে এই বিজয় উৎসবে।
১ম থেকে ১০ম তলা পর্যন্ত বিশাল জায়গাজুড়ে ৭৫০টি প্রতিষ্ঠান তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের সর্বাধুনিক প্রযুক্তিপণ্য ও কলাকৌশল প্রদর্শন করবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বিজয় উৎসবে থাকবে প্রযুক্তি পণ্যের ওপর বিশেষ মূল্যছাড়, বিভিন্ন অফার, উপহার সামগ্রীসহ বিভিন্ন ইভেন্টের আয়োজন। থাকবে মুজিব শতবর্ষের আলোচনা সভা, ৪টি সেমিনার, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিষয়ক বিশেষ উপস্থাপনা, বিজয় উৎসব উপলক্ষে ৭ দিন ফ্রি সার্ভিসিং, চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, বিজয়ের গানের প্রতিযোগিতা, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে অবদান রাখা মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা এবং আরও থাকছে ১২ ডিসেম্বর ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবসের বিশেষ র্যালি।
এবারের এই বর্ণাঢ্য উৎসব আয়োজনে স্পন্সর হিসেবে যুক্ত হয়েছে আসুস, এসার, বেনকিউ, করসিয়ার, ফ্যানটেক, গেমডিয়াস, গিগাবাইট, হিকভিশন, ক্যাসপারস্কি, কিংসম্যান, এলজি, লেনোভো, এমএসআই, মিশন, এমএসআই, নেটিস, নেক্সটজেন, র্যাপো, রায়ান্স, সিডনিসান, টেনডা, থার্মালটেক, টগি, টিপি-লিংক, ট্রানসেন্ড, ইউএনভি ইউনিআরস, ভিউসনিক, ওয়াল্টন কম্পিউটার, ওয়াল্টন ল্যাপটপ এবং টিপসই। পরিশেষে, বিজয় উৎসব-২০২১ এর আহ্বায়ক আয়োজনে অংশগ্রহনকারী সকল স্পন্সর প্রতিষ্ঠানের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।