বাংলাদেশে তৈরী একটি মাইক্রোকন্ট্রলার ডেভলাপমেন্ট বোর্ড,যার নকশা থেকে শুরু করে এসেম্বলী সবই হয়েছে বাংলাদেশে। বাংলাদেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও জাতীয় অধ্যাপক মরহুম জামিলুর রেজা চৌধুরীর নামে উৎসর্গ করে এই ডেভলপমেন্ট বোর্ডটির নাম দেয়া হয়েছে জেআরসি বোর্ড। এই জেআরসি বোর্ড নিয়ে সারা বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে দেশে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো ব্যবহারিক কর্মশালা। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুর্বণ জয়ন্তীতে আয়োজিত “সুবর্ণ জয়ন্তী হ্যাকাথন-২০২১” এর অংশ হিসেবেই এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
এই হ্যাকাথন-এ নিবন্ধিত আট শতাধিক প্রতিযোগিদেরকে নিয়ে গত ১৯ মার্চ তারিখে একটি অনলাইন কর্মশালা করানো হয়,যেখানে তাদেরকে নতুন এই ডেভলাপমেন্ট বোর্ডটি সর্ম্পকে বিস্তারিত জানানো হয়। কর্মশালা শেষে নিবন্ধিত প্রতিযোগিদের অংশগ্রহণে ২১ মার্চ একটি অনলাইন কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়,যার ভিত্তিতে মূল প্রতিযোগিতার জন্য সেরা ২০ টি দলকে নির্বাচিত করা হয়।
নির্বাচিত এই দলগুলোকে নিয়েই এই ব্যবহারিক কর্মশালার আয়োজন করা হয়। ২৫ মার্চ সকাল থেকে শুরু হয়ে দুই দিন ধরে একটানা এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। রাজধানীর লালমাটিয়ায় অনুষ্ঠিত এই আবাসিক ক্যাম্পে সারা দেশ থেকে নির্বাচিত ২০ টি দলের মোট ৭৫ জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করে। দুইদিনব্যাপী এই ব্যবহারিক কর্মশালায় প্রতিযোগিরা নতুন বোর্ডটি দিয়ে হাতেকলমে অনুশীলনের মাধ্যমে মূল প্রতিযোগিতার জন্য প্রস্তুতি গ্রহনের সুযোগ পায়।
কর্মশালায় প্রতিটি দল মূল প্রতিযোগিতায় সমাধানের লক্ষ্যে একটি সমস্যা বা চ্যালেঞ্জ নির্বাচন করেন এবং আয়োজকদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় উপকরন নিয়ে তাদের নির্বাচিত সমস্যা বা চ্যালেন্জটি সমাধানের লক্ষ্যে কাজ শুরু করেন।
কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীরা হোম অটোমেশন ও মনিটরিং, বিল্ডিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, এগ্রিকালচার ও ফার্মিং সমাধান, লাইব্রেরী ডেভেলপমেন্ট এন্ড ইমপ্লিমেন্টেশন, ম্যাস নেটওয়ার্কিং সিস্টেম ইমপ্লিমেন্টেশন এবং ইন্টারনেট অব থিংস এই ক্যাটাগরীগুলোতে কিভাবে জেআরসি বোর্ডকে কাজে লাগানো যায়, তা নিয়ে কাজ করেন।এই কর্মশালায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরাই পরবর্তীতে দুইদিনব্যাপী “সুবর্ণ জয়ন্তী হ্যাকাথন-২০২১” এ অংশ নেয়ার সুযোগ পাবে।
কর্মশালা চলাকালীন সময়ে স্বাধীনতার সুর্বণ জয়ন্তীর প্রথম প্রহরে কম্পিউটার সার্ভিসেস লিমিটেডের পরিচালক নীরা হাসানাত খান এবং ব্যাবস্থাপনা পরিচালক মমলুক সাবির আহমদ উপস্থিত থেকে অংশগ্রহণকারীদেরকে উৎসাহিত করেন। স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিকে স্মরণীয় করে রাখতে এ সময় তারা উপস্থিত সবাইকে নিয়ে সুর্বণ জয়ন্তীর কেকও কাটেন। দুইদিনব্যাপী এই ব্যবহারিক কর্মশালা
সমন্বয় করেন কম্পিউটার সার্ভিসেস লিমিটেডের মাহেরুল আজম কোরেশী এবং ফজলে এলাহী তন্ময়।
“প্রযুক্তির বিকাশে অর্জিত হোক স্বাধীনতা” মূলমন্ত্র নিয়ে আয়োজিত দুইদিন ব্যাপী হ্যাকাথন-এ বিশটি দল অংশগ্রহনের সুযোগ পাবেন। আর এ দলগুলোর মধ্য থেকে প্রথম স্থান অর্জনকারী দলটি পাবে ৫০,০০০ টাকার প্রথম পুরষ্কার,দ্বিতীয় পুরষ্কার ২৫,০০০ টাকা এবং তৃতীয় পুরষ্কার হিসেবে থাকছে ১৫,০০০ টাকা। এছাড়াও অংশগ্রহনকারী প্রতিটি দলের জন্যেই থাকছে আকর্ষণীয় উপহার।
“সুবর্ণ জয়ন্তী হ্যাকাথন-২০২১” এর মূল আয়োজক কম্পিউটার সার্ভিসেস লিমিটেড, বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক এবং বাংলাদেশ ফ্লায়িং ল্যাবস। সার্বিক পৃষ্ঠপোষকতায় থাকছে ‘কার্নিভাল ইন্টারনেট’ ও ‘বিডি পিয়ার’। সার্বিক সহযোগিতায় জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর।