শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ টেলিকমের আরো ১১ কর্মীর বরখাস্ত স্থগিতের আদেশ বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ। মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর), বিচারপতি মুজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহিউদ্দীন শামিম এর আদালতে এই রায় প্রদান করেন।
এর আগে একই আদালতে গ্রামীণ টেলিকম এর ২৭ জনের আবেদনের প্রেক্ষিতে একই রায় প্রদান করেন বিজ্ঞ আদালত। এ নিয়ে চাকুরীচ্যুত ৯৯ জনের মধ্যে ৩৮ জন কর্মীর চাকুরী বরখাস্ত স্থগিতাদেশ বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ।
গত বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগের ভার্চুয়াল বেঞ্চ গ্রামীণ টেলিকম এর ট্রেড ইউনিয়নের সেক্রেটারি ফিরোজ মাহমুদ হাসানের চাকুরির বরখাস্তটি স্থগিতের আদেশ দিয়েছিলেন।
এই শুনানিতে ফিরোজ মাহমুদ এর পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন ও বিজ্ঞ আইনজীবী মো. ইউসুফ আলী।
প্রসঙ্গত, গত ৫ নভেম্বর গ্রামীণ টেলিকমের ট্রেড ইউনিয়নের সেক্রেটারি ফিরোজ মাহমুদ হাসানের বরখাস্তের আদেশ স্থগিত করে আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের ওই স্থগিত আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ টেলিকম। বৃহস্পতিবার তাদের আবেদন নাকচ করে দেয় আপিল বিভাগ। ফলে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ বহাল থাকলো আপিল বিভাগেও।
আইনজীবীরা জানান, শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের (বি-২১৯৪) সঙ্গে আলোচনা না করেই এক নোটিশেই ৯৯ কর্মীকে ছাঁটাই করেছেন নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান স্বাক্ষরিত এক নোটিশের মাধ্যমে এ ছাঁটাই করা হয়েছে। এরপর এই নোটিশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়।
বকেয়া পাওনা পরিশোধ না করায় ২০১৬ সালে প্রথম মামলা করেন গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ১৪ কর্মী। পরে WPPF এর বকেয়া পাওনা চেয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে ৯৩টি মামলা করে তার প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি গ্রামীণ টেলিকমের বর্তমান কর্মীরা। ঢাকার শ্রম আদালতে সবমিলিঢে ১০৭টি মামলা করা হয়। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির সাবেক ১৪ কর্মী পাওনা টাকার জন্য আরও ১৪টি মামলা করেন।
উচ্চ আদালতের এই রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন এর সভাপতি মো: কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসান সহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা।