আজাদুল হক:
ফেব্রুয়ারীতে “কোন” সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর সামনে উপস্থাপিত বক্তব্যে আমরা বলেছিলাম যে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশে নাসার মতন (তবে বাংলাদেশের জন্য প্রযোজ্য) একটি স্পেস সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হোক। জানি, এটা শুনে অনেকে নাক সিটকেছেন। মুচকি হাসি হেসেছেন। কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন, যে দেশে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করা যায় না, পেঁয়াজের দাম বাড়ানো আটকানো যায় না, ট্রেনের সংঘর্ষ আটকানো যায় না সেই দেশে আবার মহাশূন্যের গবেষণা!
এতে মন খারাপ করার কিছু নেই। বাংলাদেশকে নিয়ে নাক সিটকানোর ঘটনা আগেও ঘটেছে। একাত্তরেও অনেকে নাক সিটকেছেন। তারা বলেছিলেন বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী বাহিনীর সাথে লড়াই করবে এই শুকনা পাতলা বাঙ্গালিরা! তার পরিনতি সবার জানা।
আমরা কিছু পাগল টাইপের মানুষ আছি। রাজনীতি আমাদের মাথার ওপর দিয়ে চলে যায়। ধন, দৌলত, টাকা, পয়সা, গাড়ী, বাড়ী, এইসবের প্রয়োজনকে অস্বীকার করিনা কিন্তু শুধু এর পেছনে দৌঁড়াই জীবনটা কাটাতে চাই না। কিছু উল্টা পাল্টা করতে চাই। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, মেধা দিয়ে বদলে দিতে চাই কিছু সংজ্ঞা।
আমরা আনন্দের সাথে জানাচ্ছি যে বাংলাদেশে স্পেস সেন্টার প্রতিষ্ঠার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে আমাদের পিকো স্যাটেলাইটের গ্রাউন্ড স্টেশনের কাজ প্রায় শেষ। ক্যালিফোর্নিয়ার ল্যাবে টেলিমেট্রি ডাটা পেতে শুরু করেছে আমাদের প্রবাসী ইঞ্জিনিয়াররা। এমাসেই ঢাকায় এন্টেনা লাগানোর পর গ্রাউন্ড স্টেশনের কাজ শেষ হবে। আমরা আশা করছি জানুয়ারীতেই এর শুভ উদ্বোধন করা হবে।
হাওয়ায় ভাসছে খবর যে প্রধানমন্ত্রী আমাদের কথা গুরুত্বের সাথে নিয়েছেন এবং পদ্মার ওপারে, মাদারীপুরের কাছে ৭৭ একর জায়গা দেবার কথা ভাবছেন যেখানে শুধু মহাশূন্য নয়, মানুষের জীবনে বদলে দেয়া সব রকম প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা হবে।
আমাদের স্বপ্নের এই সবে শুরু। এর শেষ বলে কিছু নেই। যারা বলে আমরা পারব না, তাদের আমরা বলি – যদি কেউ পারে তবে আমরাই পারব।
কারণ – আমাদের বুকে আছে বাংলাদেশ।
লেখক: ম্যাক্স গ্রুপের প্রধান নির্বাহী ও নাসার সাবেক সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার