দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) নূর হোসেন হল মাঠে বৃহস্পতিবার বিকেলে বৈষম্য বিরোধী শিক্ষার্থী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হাবিপ্রবির সমন্বয়ক সানজিদা পারভিন রিপার সভাপতিত্বে ৪ সদস্যের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল উপস্থিত ছিলেন।
দেড় হাজারের মতো ছাত্র-জনতা উপস্থিতিতে সমাবেশে বক্তাদের মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ, সারজিস আলম, তারিকুল ইসলাম, আবু সাঈদ লিওন।
সমাবেশে বক্তারা অবিলম্বে ছাত্রলীগের মতো ফেসিস্ট আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধকরণ, ৭২ এর সংবিধান বাতিল এবং গত আগস্ট ২০২৪ এর গণহত্যায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতারর করাসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং গ্রেফতারকৃতদের জামিন না দেয়ার দাবি জানান। এছাড়া বক্তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের মধ্যে যাতে কোনো প্রকার অনৈক্য এবং ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি না হয়, সেদিকে সব শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান।
বক্তারা আরো বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে অনৈক্য সৃষ্টি হলে পতিত আওয়ামী স্বৈরাচারের দোসররা পুনরায় দেশে ক্ষমতা লাভের চেষ্টা করবে।

এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই মধ্যবিত্ত পরিবারের। তারা রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে পড়তে আসেন না। তারা নিজের ও পরিবারের হাল ধরতে আসেন। তবে সময়ের প্রয়োজনের বিষয়টি ভিন্ন কথা। ৫ আগস্টের পর একটা জেনারেশন কনফ্লিক্ট দেখা যাচ্ছে। সিনিয়র রাজনীতিবিদরা তরুণ প্রজন্মের ত্যাগকে অবজ্ঞা করছেন।’
তিনি বলেন, ‘কোনোভাবে যদি ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও তার দোসররা ক্ষমতায় আসে, তাহলে প্রথমেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনেকে টার্গেট করবে।’
শিক্ষকদের উদ্দেশে হাসনাত আরো বলেন, শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতকে পুঁজি করে আপনারা আপনাদের ক্যারিয়ার বিনির্মাণ এবং প্রমোশন বাণিজ্যের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হবেন না। শিক্ষকদের অনেক কিছুর দায়ভার আছে। শিক্ষক হচ্ছে এমন একটা পরিচয়, যেটার জন্য রাজনীতি করার প্রয়োজন হয় না।শিক্ষকতার চেয়ে রাজনীতি পরিচয়টাকে যখন মুখ্য করতে চান তখন শিক্ষার্থীদের সাথে আপনাদের বিচ্ছিন্নতা তৈরি হয়।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, ‘নেতৃত্ব তৈরির জন্য ছাত্র সংসদ চালু করতে হবে। প্রতিবছর ছাত্র সংসদের নির্বাচন করলেই কেবল সুষ্ঠু নেতৃত্ব তৈরি সম্ভব। কেউ যদি দলীয় মনোনয়ন নিয়ে কোনো ক্ষমতায় যান কিংবা চেয়ারে বসেন, তিনি শুধু তার ঊর্ধ্বতনদের সন্তুষ্ট করারই চেষ্টা করবেন।’
তিনি বলেন, ‘লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি নির্দিষ্ট পক্ষের স্বার্থকে বাস্তবায়নের চেষ্টা করে। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আসল উদ্দেশ্য নয়। বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের যুগের পর যুগ এগিয়ে নিতে পারে।’ ভবিষ্যতে তিনি হাবিপ্রবিকে বাংলাদেশের সেরা ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি হিসেবে দেখার প্রত্যয় ব্যাক্ত করেন।