দাবি পাওনা আদায় নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি’র সঙ্গে মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন ও রবি’র বিরোধ যেন কাটছেই না। লাইসেন্স বাতিল বিষয়ে ব্যাখা চেয়ে অপারেটরদের দেয়ার বিটিরাসি’র ট্রাম্প কার্ড খ্যাত নোটিশ নিয়ে সৃষ্ট উত্তেজনা এখনো থামেনি। নোটিশ পেয়ে কেবল আদালতে মামালা ঠুকেই ক্ষান্ত হয়নি দুই অপারেটর। চিঠির জবাব দিতেও তারা শেষ ক্ষণ পর্যন্ত প্রলম্বিত করেছে। অপরদিকে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তাফা কামালের আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান উদ্যোগেরও দৃশ্যমান কোনো গতি দেখা যাচ্ছে না।
গ্রামীণফোন ও রবি তাদের জবাবে বিটিআরসিকে যে চিঠি দিয়েছে তাতে দুটি কারণ দর্শিয়েছে তারা। সেখানে প্রথমটিতে আদালত ও দ্বিতীয়টিতে আইনের রেফারেন্স দেয়া হয়েছে। সাড়ে ১৩ হাজার কোটি টাকা পাওনা দাবি আদায়ে ৫ সেপ্টেম্বর লাইসেন্স (টুজি-থ্রিজি) কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে চেয়ে ১ মাসের সময় দিয়ে দুই অপারেটরকে শোকজ নোটিশ দিয়েছিল বিটিআরসি।
সূত্রমতে, কারণ দর্শাও নোটিশ প্রাপ্তির ৩০ দিন বাকি থাকার এক দিন আগে ৩ অক্টোবর বিটিআরসিকে নোটিশের জবাব দেয় গ্রামীণফোন ও রবি। যদিও ওই দিন গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে বারবার জানতে চাওয়া হলেও এ বিষয়ে তারা কোনো মন্তব্য করেনি। একইভাবে বিটিআরসি’র পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।
অবশ্য ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে আইন ও শৃঙ্খলার সীমার মধ্যে থেকেই সমাধানের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এখন পর্যন্ত মিডিয়ার কাছে বলার মতো তেমন কোনো কিছু হয়নি। তবে আশা করছি, আগামী সপ্তাহের মধ্যে উদ্যোগের ইতিবাচক বিষয় পরিলক্ষিত হতে পারে।
এদিকে রোববার (৬ অক্টোবর) দুই অপারেটরের কারণ দর্শাও নোটিশের বিষয়ে জানা গেছে। নোটিশে বিটিআরসি’র দোষ খুঁজে জবাব দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে- বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন থাকায় এই বিষয়ে বিটিআরসি এমন কারণ দর্শানো নোটিশ দিতে পারে না। এছাড়াও টেলিযোগাযোগ আইনের ২৬ ধারা অনুযায়ী পাবলিক ডিমান্ড রিকভারি (পিডিআর) অ্যাক্টে পাওনা আদায়ে মামলা করার সুযোগ থাকার পরও ৪৬ ধারায় লাইসেন্স বাতিলের মতো পদক্ষেপ নেয়ায় বিটিআরসি’র সিদ্ধান্তের প্রতি উষ্মা প্রকাশ করেছে দুই অপারেটর জিপি ও রবি।
এ বিষয়ে রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম বলেছেন, ‘বিতর্কিত নিরীক্ষা আপত্তির পরিপ্রেক্ষিতে বিটিআরসি আমাদের কাছে যে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছে তার আইনগত কোনো ভিত্তি নেই। কারণ এ লিগ্যাল নোটিশ জারির আগেই আদালতে এ বিষয়ে একটি মামলা বিচারাধীন আছে। আর বিচারাধীন কোনো বিষয়ের ওপর কোনো মন্তব্য আমাদের পক্ষে করা সম্ভব নয়। তবে এ বিষয়ে আমরা আগে যা বলেছি নতুন করে তার ওপর কিছু বলার নেই।’
অপরদিকে গ্রামীণফোন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘লাইসেন্স বাতিল সংক্রান্ত বিটিআরসির ভিত্তিহীন শোকজ নোটিশটি যেহেতু তুলে নেওয়া হয়নি, সেহেতু গ্রামীণফোন তাদের প্রত্যুত্তর দাখিল করেছে।