নতুন (২০২৪-২০২৫) বাজেটে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কর অব্যাহতি পুরোপুরি তুলে নেওয়ার বিষয়টি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ। এছাড়াও রোববার (১২ মার্চ) জাতীয় রাজস্ব ভবনে এনবিআরের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন অর্থমন্ত্রী ও অর্থ প্রতিমন্ত্রীর ওয়াসিকা আয়শা খান।
এদিকে একই দিনে বাংলাদেশ সচিবালয়ে অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ, জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি এম রাশিদুল হাসান, সহ-সভাপতি (অর্থ) ইকবাল আহমেদ ফখরুল হাসান। এসময়ে বেসিসের প্রাক্তন সভাপতি ফাহিম মাসরুর এবং সাবেক জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি সামিরা জুবেরী হিমিকা সাক্ষাৎকার কালীন আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনায় কর অব্যাহতি বিষয়ে বেসিস প্রেসিডেন্টস ফোরাম কর্তৃক বেসিসের সাবেক সভাপতি হাবিবুল্লাহ এন করিমের নেতৃত্বে গঠিত সাত সদস্য বিশিষ্ট কমিটির তৈরি তথ্য উপাত্তসহ একটি প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
অপরদিকে আগারগাঁওয়ের এনবিআর ভবনের সম্মেলন কক্ষে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে তথ্য প্রযুক্তি খাতে কর অব্যাহতি উঠানোর প্রস্তাব বিবেচনা করার জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয় অর্থমন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। এছাড়া আগামী বাজেটের বিভিন্ন দিকে সম্পর্কে তথ্য আদান-প্রদান করেছে উভয়পক্ষ। কিন্তু এ বিষয়ে এখনো ইতিবাচক অবস্থানে নেই এনবিআর।
সূত্রমতে, এমন পরিস্থিতিতে কর অব্যাহতি পুরোপুরি তুলে না দিয়ে, এ খাতে অল্প অল্প করে করারোপ করা যায় কি না বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। এসব বিষয়ে আগামী ১৪ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আমাদের দিনব্যাপী বৈঠকে বসছে এনবিআর। বৈঠকে উপস্থাপনের জন্য এরই মধ্যে পেপার ও প্রেজেন্টেশন তৈরি করা হয়েছে। সেখানে আগের সিদ্ধান্তের কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। নাম গোপন রাখার শর্তে সংস্থাটির একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, খুব গুরুত্বপূর্ণ মনে না করলে প্রধানমন্ত্রী এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য নাও করতে পারেন। অর্থাৎ আগের সিদ্ধান্তই বলবৎ হতে পারে।
এদিকে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের স্বার্থেই রাজস্ব বোর্ডের সিদ্ধান্ত পূণের্বিবেচনা করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বেসিস সভাপতি রাসল টি আহমেদ। তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শীতায় বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তিনিই ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করে স্মার্ট বাংলাদেশ রূপকল্প দিয়েছেন। স্মার্ট বাংলাদেশ বাধাগ্রস্ত হয় এমন কোনো সিদ্ধান্তেই তিনি সায় দেবেন না বলে আমাদের বিশ্বাস ও আস্থা রয়েছে। আমরা বিষয়টি সবাইকে বোঝাতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছি।
এর আগে খাত সংশ্লিষ্ট প্রায় সকল পক্ষের প্রতিনিধিদের নিয়ে অনুষ্ঠিত সেমিনারে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে আগামী ৩ বছর কর অব্যাহতি রাখার প্রস্তাব দিয়েছেলেন অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ভিসিপিয়াব) প্রেসিডেন্ট এবং অনুষ্ঠানের সভাপতি শামীম আহসান। তিনি বলেন, দাবিকৃত তিন বছরের কর অব্যাহতির মেয়াদ শেষে, ১ শতাংশ থেকে ২ শতাংশ এর মধ্যে একটি বার্ষিক কর হার প্রবর্তন করা যেতে পারে। বাংলাদেশের জিডিপিতে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অবদান ১ দশমিক ৯ শতাংশ। তার দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছিলেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ চৌধুরী এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।