তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে: পলক
ডিজিটাল উদ্ভাবনে সকলকে সংযুক্ত করার প্রত্যয়ে আগামী ১৭মে দেশজুড়ে পালিত হবে বিশ্ব টেলিযোগাযোগ তথ্যসংঘ দিবস। ‘ডিজিটাল উদ্ভাবন, টেকসই উন্নয়ন’ প্রতিপাদ্যে এবারই প্রথম এই আয়োজনে যুক্ত থাকছেন টেলিকম ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সরকারি-বেসকারি অংশীজনেরা। আর ডিজিটাল উদ্ভাবনে বহুপক্ষীয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের মাধ্যমে টেকসই সমৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্য ছোঁয়ার কথা জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
এসময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিশ্রুত সেবা না দিলে মোবাইলফোন অপারেটরগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য শক্ত নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘বিটিআরসিকে (বাংলাদেশে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) এক্সটার্নাল আইটি অডিট করতে হবে, ফাইন্যান্সিয়াল অডিট করতে হবে। তবেই আমরা বুঝতে পারব কেন একজন সাংবাদিক সচিব মহোদয়ের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করছেন। দেখা যাচ্ছে এক মিনিট পর সচিব মহোদয় ওই পাশ থেকে বলছেন, হ্যালো হ্যালো, আবার বলবেন কী বললেন বুঝতে পারিনি। ড্রপ হওয়ার আগেই কিন্তু এ রকম হচ্ছে। একটা টেকনোলজিক্যাল এরর হচ্ছে এখানে। এ বিষয়গুলো রেগুলার প্রবলেম।’
‘এর ফলে সময় নষ্ট হচ্ছে, অর্থ নষ্ট হচ্ছে, অ্যাটেনশন নষ্ট হচ্ছে। বিরক্তি তৈরি হচ্ছে। মোবাইল অপারেটররা বলেছেন এটা ওদের জন্যও লস। টেকনোলজিক্যাল সমস্যা হলে ওদের লস। কল ড্রপ হলো বা ড্রপ না হলেও আমি যে আমার কথা শেষ করতে পারলাম না এটার কোন ক্ষতিপূরণ আমি গ্রাহক হিসেবে পাচ্ছি কিনা। সেটার রেকর্ড বিটিআরসির কাছে থাকছে কিনা, কিংবা আমরা ওই রেকর্ড দেখিয়ে বাধ্য করতে পারছি কিনা’- যোগ করেন পলক।
খাত সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, ডিজিটাল প্রযুক্তি মহাসড়ক বিনির্মাণের অগ্রগতি, চ্যালেঞ্জ, সম্ভাবনা এবং পরিবর্তিত বিশ্বে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ইন্টারনেট অব থিংস, রোবোটিক্স, ব্লকচেইন, মাইক্রোচিপ ডিজাইনিং, সাইবার সিকিউরিটিসহ বিভিন্ন প্রযুক্তির মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশের ভিত্তি আজ সুদৃঢ় হয়েছে। এমন বাস্তবতায় ডিজিটাল উদ্ভাবনে সকলকে সংযুক্ত করতে এবং স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের মাধ্যমে টেকসই সমৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা করতে পারে তা অন্বেষণে একটি কার্যকর উদ্যোগ হিসেবে বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবসকে কাজে লাগাতে হবে।
পলক বলেছেন, আগামীতে যারা প্রযুক্তিতে এগিয়ে থাকবে তারাই ব্যবসা-বাণিজ্য, আন্তর্জাতিক লেনদেনে ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকবে।
প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান টেলিটকের মোট ৫০০০টি এবং বিটিসিএলের ৫৩৪ টি টাওয়ারসহ সকল মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটরদের ৪৩,০৩১ টি টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছে। মহাকাশে বাংলাদেশের পদচারণার প্রথম সোপান বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ সফলভাবে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে যার মাধ্যমে আমরা বিশ্বের ৫৭তম স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণকারী দেশ হিসেবে অভিষিক্ত হয়েছি। এরই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণের কাজ শুরু করেছি। কুয়াকাটায় দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবলের পর তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। শূণ্য থেকে শুরু করে বর্তমানে দেশের ১৭টি কারখানায় মোট চাহিদার শতকরা ৯৭ভাগ মোবাইল উৎপাদন করা হচ্ছে।
রবিবার সচিবালয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস-২০২৪ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী। এসময় ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান, বিটিআরসি মহাপরিচালক প্রকৌশলী মহিউদ্দিন আহমেদ, টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ সাহাব উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেছেন, ‘মোবাইল নেটওয়ার্কের ক্ষেত্রে আমরা কাঙ্ক্ষিত জায়গায় হয়তো পৌঁছাতে পারিনি। একেবারে দুর্বল বলা যায় না। পরিস্থিতি আরও উন্নয়নে আমরা এ বিষয়ে নিয়মিত তদারকি করছি।’