প্রকৃতি ও প্রযুক্তির যুগপদ আয়োজনে আপামর শিশু-কিশোরদের অনাবিল আনন্দ দেয়ার মধ্য দিয়ে শনিবার রাতে শেষ হলো চার দিনব্যাপী স্মার্ট চিলড্রেন কার্নিভাল। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে রাজধানীর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত উৎসবে বিশেষভাবে সক্ষম ও পথ শিশুদের উপস্থিত ছিলো চোখে পড়ার মতো। ভবিষ্যতের স্মার্ট নাগরিকদের জন্য আগামী বছর থেকে সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে নিয়মিত এই উৎসব অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছে আয়োজকরা।
সন্ধ্যায় সমাপনীতে এ ধরনের আয়োজন অন্তর্ভূক্তিমূলক স্মার্ট বাংলাদেশে স্মার্ট নেতৃত্ব সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে প্রত্যাশা করেছেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেছেন, আমাদের স্মার্ট শিশুরাই হবে আগামী দিনের স্মার্ট নাগরি উল্লেখ করে বলেন এজন্য তাদের সৎ ,সহনশীল, উদ্ভাবন, সমস্যার সমাধানকারী ও মানবিক গুণাবলীর অধিকারী হতে হবে। আমাদের শিক্ষার্থীরাই হবে চ্যাম্পিয়ন অব দি স্টেট। তারা আত্মশক্তিতে বলিয়ান হয়ে এগিয়ে যাবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, আজকের শিশু কিশোরদের যেভাবে গড়ে তুলবো, আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ সেভাবেই গড়ে উঠবে। বর্তমান প্রজন্মের শিশু কিশোরদের আমরা নৈতিকতা শিক্ষা, মূল্যবোধ এবং দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে তাদেরকে পরিবেশ বান্ধব চিন্তা,উদ্ভাবনী নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।
তিনি আরো বলেন, এবার প্রথম বারে শিশু-কিশোরদের ব্যাপক উপস্থিতি আমাদের মুগ্ধ করেছে। প্রতি বছর সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে স্মার্ট চিলড্রেন কার্নিভাল আয়োজন করা হবে। পর্যায়ক্রমে বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আয়োজিত হবে এ অনুষ্ঠান।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জনাব মোঃ মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে আয়োজিত এই সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মো. সামসুল আরেফিন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলোজি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু।
এ সময় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবটিক্স এন্ড মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারপার্সন ড. সেঁজুতি রহমান, বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান এবং বাংলাদেশ রোবট অলিম্পিয়াডের সভাপতি অধ্যাপক ড. লাফিফা জামাল।
আরো বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক রণজিৎ কুমার ও সামদানী ফাউন্ডেশনের সভাপতি নাদিয়া সামদানী।
অনুষ্ঠানে অলিম্পিয়াডের মোট ৫টি ক্যাটাগরিতে বিজয়ী ৪২ শিক্ষার্থীর হাতে পুরস্কার তুলে দেন আমন্ত্রিত অতিথিরা। ক্যাটাগরিগুলো হলো ক্রিয়েটিভ ক্যাটাগরি, রোবট ইন মুভি, ফিজিক্যাল কম্পিউটিং, ড্রোন মেজ ও রোবটিকস কুইজ। এ বছরের মূল থিম ছিল ‘দ্য অলিম্পিক’। এই থিমের ওপর নির্ভর করেই প্রতিযোগিরা রোবট তৈরী করে। জাতীয় পর্বের বিজয়ীদের মধ্য থেকে নির্বাচিতদের পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে আবাসিক ক্যাম্পের মাধ্যমে বাংলাদেশ দল গঠন করা হবে, যারা ২৫তম আন্তর্জাতিক রোবট অলিম্পিয়াডে জানুয়ারি ২০২৪ এ অংশগ্রহণ করবে গ্রিসের এথেন্সে।
উল্লেখ্য, অলিম্পিয়াডের সব ক্যাটাগরির অনলাইন বাছাই পর্ব থেকে নিবাচিত শিক্ষার্থীদের নিয়ে এই জাতীয় পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে সারা বাংলাদেশের ৩০০ টি সংসদীয় আসনে অবস্থিত ৩০০ টি শেখ রাসেল স্কুল অব ফিউচার ল্যাবের মধ্যে ৬৫টি ল্যাবে হাতে-কলমে সরাসরি এবং অবশিষ্ট ২৩৫টি ল্যাবে অনলাইন প্লাটফর্মের মাধ্যমে রোবোটিক্স কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।