বনানীর প্রধান কার্যালয়ে সাতজন সফল নারী ফ্রিল্যান্সারকে সম্মাননা প্রদান করেছে আইটি স্কিল দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের লার্নিং প্ল্যাটফর্ম “শিখবে সবাই” । “শিখবে সবাই সফল নারী ফ্রিল্যান্সার সম্মাননা- ২০২৩” সন্মাননা পাওয়া সাত নারী হলেন- নাফিসা তাবাসসুম দিশা (২৯) (ফ্রিল্যান্স ইউ আই/ইউ এক্স ডিজাইনার), সাবিহা আফরোজ (২৪) (ফ্রিল্যান্স গ্রাফিক্স এন্ড ইউ আই ডিজাইনার), সুরাইয়া সাকিলা সুকলা (২৮) (ফ্রিল্যান্স ফুল স্ট্যাক ওয়েব ডেভেলপার), চম্পা হোসেইন (৪০) (ফ্রিল্যান্স ফুল স্ট্যাক ওয়েব ডেভেলপার), সুরভী আক্তার (৩২) (ফ্রিল্যান্স গ্রাফিক্স ডিজাইনার), ঝুমা বেগম (৩১) (ফ্রিল্যান্স গ্রাফিক্স অ্যান্ড মোশন গ্রাফিক্স ডিজাইনার) এবং তারতিলা আক্তার (৩২) (ফ্রিল্যান্স গ্রাফিক্স ডিজাইনার)।
সম্মাননা গ্রহণের আগে নিজেদের সফলতার পেছনের গল্প উপস্থিত দর্শকদের সামনে তুলে ধরেন বিজয়ীরা। এছাড়াও নারী হিসেবে সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে সফলতার পেছনে গল্প বলেন তারা। এ সময় তারা “শিখবে সবাই”-এর প্রশিক্ষকদের ধন্যবাদ জানান এবং তাদের সঠিক দিকনির্দেশনা সাফল্যের পেছনে বিশেষভাবে অবদান রেখেছে বলে উল্লেখ করেন।

২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করা “শিখবে সবাই”-এর চীফ অপারেটিং অফিসার আব্দুল কাদের অনুষ্ঠানে জানান, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ‘শিখবে সবাই’ আইটি দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণকে দেশের তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছে দিতে কাজ করে আসছে। এজন্য শিখবে সবাই তাদের প্রতিটি প্রফেশনাল কোর্স অফলাইনের পাশাপাশি অনলাইনেও পরিচালনা করে। যা প্রতিষ্ঠানটির স্লোগান “বাদ যাবে না কেউ, শিখবে সবাই” এর স্বার্থকতা বহন করে।
গত বৃহস্পতিবার সফল সাত নারী ফ্রিল্যান্সারের হাতে স্মাননা তুলে দিয়ে “হাসিমুখ সমাজ কল্যাণ সংস্থা”-এর সহপ্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী নুসরাত আক্তার বলেন, “ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে দেশের প্রতিটি নাগরিকের সমান দায়িত্ব এবং কর্তব্য রয়েছে। বর্তমানে ঘরে বসে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের কাজে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন নারী ফ্রিল্যান্সাররা। ফ্রিল্যান্সিং দেশের নারীদের কর্মসংস্থানের অন্যতম একটি খাত হতে পারে। তার বাস্তব উদাহরণ আজকের এই সফল নারী ফ্রিল্যান্সাররা। মাধ্যমিক পর্যায় থেকে আইটি স্কিল ডেভেলপমেন্টে প্রাধান্য দিতে পারলে আগামী দিনে বাংলাদেশ অনেক দক্ষ ফ্রিল্যন্সার তৈরি করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক উন্নয়ন সাধন করতে পারবে।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে “প্রেসক্রিপশন বাংলাদেশ”-এর প্রতিষ্ঠাতা এবং হেলথ এডুকেটর ইসরাত ইরিনা বলেন, “বর্তমান সময়ের ট্র্যাডিশনাল চাকরি থেকে ফ্রিল্যান্সিংয়ে কাজ করা নারীদের জন্য বিশেষ সুবিধা বহন করে। নারীরা পরিবারের সব ধরনের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি নিজেদের প্রফেশনাল সেক্টরে সাফল্যের সঙ্গে কাজ করতে পারছেন। একইসঙ্গে পরিবারে আর্থিক অবদানও রাখতে পারছেন। ফ্রিল্যান্সিং বা রিমোট এমপ্লয়মেন্টের সুবাদে ঘরে বসে নারীরা প্রাত্যহিক শহুরে জীবনের দূষণ থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারছেন। এতে করে আমাদের আগামী প্রজন্ম আরও বেশি সুস্থ সবল হয়ে পৃথিবীতে আসছে।”
ইসরাত ইরিনা জানান, বর্তমান সরকার ফ্রিল্যান্সিং খাতকে প্রাধান্য দিচ্ছে। ফ্রিল্যান্সিংয়ের পেছনে দক্ষতা উন্নয়নকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে আরও সহজলভ্য করতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এছাড়াও “শিখবে সবাই সফল নারী ফ্রিল্যান্সার সম্মাননা-২০২৩” অনুষ্ঠানের সভাপতি এবং “শিখবে সবাই”-এর চীফ অপারেটিং অফিসার জনাব আব্দুল কাদের বলেন, “সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এরই সুবাধে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে আজ ইন্টারনেট সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। ফলে দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে যেকোনো বয়সের প্রশিক্ষণার্থী শিখবে সবাই এর প্রফেশনাল আইটি ট্রেনিং কোর্সে অংশগ্রহণ করে নিজেদের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন সাধন করতে পারেন।”

তিনি আরো বলেন, “শিখবে সবাই সফল নারী ফ্রিল্যন্সার সম্মাননা”-এর এটি দ্বিতীয় আসর। প্রতিষ্ঠার পর থেকে দেশে সফল ফ্রিল্যান্সার গড়তে অবদান রেখে চলেছে “শিখবে সবাই”। এখন পর্যন্ত প্রায় ২১,০০০-এর বেশি শিক্ষার্থীকে আইটি সেক্টরে দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ দিয়েছে। গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, পিএইচপি এবং লারাভেল, মোশন গ্রাফিক্স, ভিডিও এডিটিং, ডিজিটাল মার্কেটিং এর মতো আরও বেশকিছু কোর্স করিয়ে থাকে “শিখবে সবাই”।
এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটি বেশকিছু সামাজিক উন্নয়ন প্রজেক্ট নিয়েও কাজ করে চলেছে। এর মধ্যে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল মার্কেটিং প্রশিক্ষণ, সুবিধাবঞ্চিত কিশোর-কিশোরীদের গ্রাফিক্স ডিজাইন প্রশিক্ষণ এবং বেকার যুবক-যুবতীদের প্রশিক্ষণ প্রকল্প অন্যতম।