বঙ্গবন্ধু-২ আর্থ অবজারভেশন স্যাটেলাইট সিস্টেম এর সঙ্গে সহযোগিতার জন্য সম্মতিপত্র স্বাক্ষর করেছে ফ্রান্স। সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের করবী হলে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিএল) এবং ফ্রান্সের এয়ার বাস ডিফেন্স অ্যান্ড এসএএস-এর মধ্যে এ নিয়ে একটি সমঝোতা সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। বিএসসিসিএল চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ এবং এয়ার বাস ডিফেন্স অ্যান্ড এসএএস চেয়ারম্যান ও সিইও ফিলিপ ব্যাপটিস্ট সমঝোতা স্মারক বিনিময় করেন।
একইসময়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) ও ফ্রান্সের ফ্রান্স উন্নয়ন সংস্থার (এএফডি) মধ্যে এ চুক্তি হয়।
বঙ্গবন্ধু-২ স্যাটেলাইট : বিএসসিসিএল- এয়ার বাস ডিফেন্স সমঝোতা স্মারক সই
লেটার অব ইনটেন্ট বিষয়ে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানির (বিএসসিএল) চেয়্যারম্যান শাজাহান মাহমুদ জানিয়েছেন, বঙ্গবন্ধু-২ এলইও (লো আর্থ অরবিট) প্রকৃতির স্যাটলাইট হবে। এতে ৩টি স্যাটেলাইট একসঙ্গে থাকবে। এটির কাজ হবে সমুদ্র ও ফসলের অবস্থা পর্যবেক্ষণ। এলওআই অনুসারে এয়ারবাস বঙ্গবন্ধু-২ স্যাটেলাইট তৈরি ও উৎক্ষেপণের পাশাপাশি দেশে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্যাটলাইট তৈরির কারখানা স্থাপনেও সহযোগিতা করবে ইউরোপীয় বিমান নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান এয়ারবাস। এজন্য এয়ারবাস প্রাথমিকভাবে একটি কারগরি প্রস্তাব দিয়েছে। শিগগিরই তারা আর্থিক প্রস্তাব দেবে।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামনে হয় এ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হয়। পরে দুই নেতা দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসেন। বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল কালাম আব্দুল মোমেন, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম প্রধানমন্ত্রীর পাশে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও বিপরীত দিকে ম্যাক্রোঁর সঙ্গ ফ্রান্স সরকারের বিশেষ দূত প্যাসকেল ল্যামি, বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মেরি মাসদুপুই প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে যে বন্ধুত্বপূর্ণ বন্ধনের সূচনা করেছিলেন, তা নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে। আজ ফ্রান্স ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের একটি ঐতিহাসিক দিন, যা পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে বিকশিত হচ্ছে।
আর ম্যাক্রোঁ বলেছেন, “ফ্রান্স বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইটের পেছনে ভূমিকা রেখেছে। জ্বালানি ও সামরিক খাতের পাশাপাশি সংস্কৃতি, শিক্ষা ও ঐতিহ্যের ক্ষেত্রে আপনারা ফ্রান্সের প্রতি আস্থা রাখতে পারেন। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।”
সংবাদমাধ্যম এএফপি জানিয়েছে, ফরাসি মহাকাশ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান থালোস ইতোমধ্যে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রাডার ব্যবস্থা স্থাপনের কাজ করছে। একই প্রতিষ্ঠান ২০১৮ সালে উৎক্ষেপণ করা বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ তৈরি করেছিল।
২০২১ সালে শেখ হাসিনার ফ্রান্স সফরের সময় দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতার বিষয়ে লেটার অব ইনটেন্ট সই হয়। এবারে দ্বিতীয় স্যাটেলাইট ফ্রান্স কেনার বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষর হল।
সেইসাথে সরকার বাংলাদেশ বিমানের জন্য তাদের যুক্তরাষ্ট্রের বোয়িং উড়োজাহাজ বহর থেকে সরে এসে ফরাসি এয়ারবাসের কাছ থেকে ১০টি বিমান কেনার বিষয়েও চেষ্টা করছে।