ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের খবর বিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছতে গলদঘর্ম হচ্ছেন স্থানীয় সংবাদকর্মীরা। কম্পিউটারে খবর কম্পোজ করে ফ্লাশড্রাইভে ভরে এরপর বিমান যোগে অফিসে পাঠাচ্ছেন সেখানে কর্মরত আন্তর্জাতিক মিডিয়ার কর্মরত সাংবাদিকরা। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ১৮-এর এক বিশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। উপত্যকাটিতে মোবাইল ও ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়ায় এমন ভোগান্তি আর বিড়ম্বনায় পরছেন সংবাদ কর্মী। স্থানীয় অনলাইন পোর্টালগুলো বন্ধ থাকায় বেকার রয়েছেন সেখানে কর্মরত সাংবাদিকরা।
সূত্রমতে, প্রেসক্লাবের পরিবর্তে একটি বেসরকারি হোটেলে মিডিয়া সেন্টার খোলা হলেও সেখানে শতাধিক সাংবাদিকদের জন্য রয়েছে চারটি কম্পিউটার ও একটি মোবাইল ফোন। আর কম্পিউটারগুলোতে ইন্টারনেটের গতিও অতিমাত্রায় কম। একটি সাধারণ ফাইল আপলোড হতে সময় নেয় ঘণ্টাখানেক। তার ওপর মরার উপর খাঁড়ার ঘা- দু’টি কম্পিউটার বেশিরভাগ সময় দখলে রাখছেন সরকারের তথ্য বিভাগের কর্মকর্তারা।
গত সপ্তাহের শেষ দুই দিন একটা খবরও আদান-প্রদান করতে পারেননি স্থানীয় সাংবাদিকরা। শুধু যেসব টেলিভিশন চ্যানেলের আউটডোর ব্রডকাস্টার (ওবি) ভ্যান রয়েছে, সেগুলো দিয়ে কিছু খবর উপত্যকার বাইরে পাঠানো সম্ভব হয়। এক্ষেত্রে লিখিত খবর পড়ে রেকর্ড করে তা সহযোগী চ্যানেলের ওবি ভ্যানের সাহায্যে পাঠাতে থাকেন অনেকেই। মূল অফিসে সেসব খবর শুনে ফের টাইপ করে প্রকাশ করা হয়। বেশির ভাগ সাংবাদিকই ছবি ও ভিডিও ফ্লাশড্রাইভে ভরে হাতে হাতে পাঠাচ্ছেন।
এমন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের কিছু কর্মী ফ্লাশড্রাইভে খবর দিয়ে একজনকে প্লেনে করে দিল্লি পাঠিয়ে প্রথমবারের মতো কাশ্মীরের বড় খবরগুলো প্রকাশ করতে থাকেন। অন্তত এক সপ্তাহ ধরে বেশিরভাগ সাংবাদিকই এ পথ অনুসরণ করেছেন।
সিএনএন ও নিউজ১৮’র ব্যুরো চিফ মুফতি ইসলাহ জানান, সরকারের পক্ষ থেকে খোলা মিডিয়া সেন্টারের ইন্টারনেটের গতি এতটাই কম যে সাত মিনিট পরও একটি মেইল লোড হয় না। তিনটি ছবি আপলোড করতেই দুই ঘণ্টা লেগে যায়।
আউটলুক ম্যাগাজিনের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক নাসির গানাই জানিয়েছেন, মিডিয়া সেন্টারে ইমেইল ব্যবহারের চেয়ে প্লেনে চড়ে দিল্লি যাওয়া সহজ।
এদিকে গতির প্রকটতার সঙ্গে মিডিয়া সেন্টারের কম্পিউটার হ্যাক করে ইমেইলে লগ-ইন করা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন গণমাধ্যম কর্মীরা। জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মীর হিলাল বলেন, সাংবাদিকদের দাবি সত্ত্বেও প্রেসক্লাবে না গিয়ে একটি বেসরকারি হোটেলে মিডিয়া সেন্টার খোলায় সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক।