পানির দরে ইন্টারনেট সেবা দিতে অপারেটরদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব) এমদাদ উল বারী। সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে সেবাদাতাদের প্রতিটি স্তরে সরকারি-বেসরকারি প্রতিটি পর্যায়ে ব্যান্ডউথ ক্রয়-বিক্রয়েও ‘এক দেশ এক রেট’ বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছিলো মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন। এরপর তৃণমূলে সুলভে ইন্টারনেট পৌঁছে দিতে না পারার বিষয়ে এনটিটিএন কোম্পানিগুলোকে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছে মোবাইল অপারেটররা। এমন পরিস্থিতিতে ইন্টারনেটের দাম কমাতে গত ২৯ অক্টোবর টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসিকে প্রস্তাবনা দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইআইজিএবি)।
সংগঠনের (আইআইজিএবি) পক্ষ থেকে বিটিআরসিকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, বর্তমানে বিদ্যমান থাকা বাজারমূল্যের চেয়েও বিভিন্ন স্ল্যাবে দাম কমিয়ে বিটিআরসিতে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। গত ৩১ আগষ্ট এই প্রস্তাবনাটি গ্রহণ করেছে বিটিআরসি। প্রস্তাবনা অনুযায়ী, ১-৫০০ এমবিপিএস ফ্লোর প্রাইস ২১৫ এবং সিলিং ২৬৫ টাকা ধরা হয়েছে। এর পর ক্রমান্বয়ে বাল্ক পরিমানের ভিত্তিতে ক্রমান্বয়ে এ দাম ফ্লোর ও সিলিং প্রতি ৫ টাকা করে কমেছে। রেভিনিউ শেয়ার হবে ফ্লোর প্রাইসের ওপর।
এর আগে আইএসপি’র পর ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে আইআইজি’র জন্য এক দেশ এক রেট-এ ঢাকার ভেতরে ৫০ থেকে ১০০০ এমবিপিএস এর জন্য ঢাকার মধ্যে ৩৬৫ টাকা এবং ঢাকার বাইরে এনটিটিএন খরচ ধরে ৩৯৯ টাকা ধরে ফ্লোর-সেলিং মূল্য বেধে দিয়েছিলো বিটিআরসি। এই ট্যারিফটি বেধে দেয়া হয়েছিলো ৫ বছরের জন্য। সেই সময় শেষ হওয়ার আগেই নতুন প্রস্তাবনা দিয়েছে আইআইজিএবি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আইআইজিএবির প্রস্তাবিত ব্যান্ডউইথের দাম কমানো হলে আইএসপিগুলো প্রতি মেগা ব্যান্ডউইথে ৫০-৭৫ টাকা (বিভিন্ন স্ল্যাবে) কমাতে বা গ্রাহকের কাছ থেকে কম রাখতে পারবে। এতে করে গ্রাহকের ইন্টারনেট খরচ কমবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আইআইজিএবির সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, ইন্টারনেট ব্যবহারের হার বৃদ্ধি এবং প্রান্তিক পর্যায়ে ইন্টারনেট পৌঁছানো এবং ব্যবহারকারী বাড়াতে আমাদের এই উদ্যোগ। বর্তমান সরকারও চাইছে ইন্টারনেটের দাম কমাতে। ফলে সরকারের সাথে আমরাও উদ্যোগী হয়েছি। এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে ইন্টারনেটের দাম কমবে। ব্যবহারকারীরা সুলভ মূল্যে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবে।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আইআইজি খাতে ব্যান্ডউইথ (বিভিন্ন স্ল্যাবে) যে মূল্য বিক্রি হচ্ছে সেই দর নির্ধারণ হয়েছে ২০২১ সালে। ৩ বছরের বেশি সময় পার হয়েছে। এখনও সেই দামে ব্যান্ডউইথ বিক্রি হচ্ছে। এই মূল্য রিভিউয়ের সময় হয়েছে। মূল্য রিভিউ হলে ইন্টারনেটের দাম কমবে।
এ নিয়ে বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এমদাদ-উল বারী বলেছেন, ডিজিটাল সেবা সম্প্রসারণ করতে ইন্টারনেটের দাম কমাতেই হবে, যা নিয়ে কাজ করছে বিটিআরসি। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো উদ্যোগ নিলে ব্যান্ডউইথের দাম কমানোর বিষয়টি সহজ হতে পারে।