মোবাইল ইন্টারনেটের ধীরগতি, কলড্রপ, বিনা ঘোষণায় ডেটার মূল্য বৃদ্ধি, এমএফএস এর অতিরিক্ত চার্জ ইত্যাদি বিষয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন মোবাইল সেবা গ্রাহকরা। শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত উন্মুক্ত গণশুনানীতে এসব অভিযোগ করেন পথচারী ১৫ জন গ্রাহক।
রাজধানীর বাসাবো’র শেখ বাদশা উদ্দিন মিন্টু, পুরনা ঢাকার অধিবাসী আমিনুল ইসলাম, বাবুবাজার থেকে আগত জামিল হোসেন, মালিবাগ থেকে আসা তৌহিদুল ইসলাম সাগর, শান্তিনগর থেকে শাহাদাত হোসেন শাকিল, যশোর থেকে আগত মোয়াল্লেম হোসেন, রংপুর থেকে শেখ আয়েশ প্রমুখ এসব অভিযোগ করেন। অভিযোগ করে বেশ কয়েকজন রিক্সা চালকরা। তাদের অভিযোগ, বাড়িতে এক হাজার টাকা পাঠাতে আমাদের কাছ থেকে ২০ টাকা কেটে রাখা হয়। বাড়িতে কথা বলতে গিয়ে হ্যালো হ্যালো করতেই টাকা শেষ হয়ে যায়।
প্রতিষ্ঠার ১০ বছর পূর্তি উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবের গেটের সামনের টেবিল-চেয়ার পেতে এই শুনানির আয়োজন করে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।
গণশুনানিতে প্রধান অতিথি হিসেবে বিইআরসির সাবেক সদস্য মুকুল ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, বর্তমান সরকারের উচিত টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট সেবা সংস্কারে গ্রাহকদের বিভিন্ন দাবি দেওয়া অভিযোগ এবং মানসম্পন্ন নিরবিচ্ছিন্ন সেবা নিশ্চিত করতে সুনির্দিষ্ট রোড ম্যাপ ঘোষণা দাবি করেন। সেটা হতে পারে ১৫ দিন এক মাস কিংবা দুই মাস।
সংগঠনের উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সাবেক পরিচালক খালিদ আবু নাসের বলেন, টেলিযোগাযোগ সেবার ইকোসিস্টেমের প্রতিটি ধাপে ধাপে যে লুণ্ঠন হয় সেটি কমাতে পারলে এখনই ১০ থেকে ১২ শতাংশ মূল্য কমানো সম্ভব। প্রতিযোগিতার কথা বলা হলেও এ সেবায় প্রতিযোগিতা নেই। নিয়ন্ত্রণ কমিশন এবং সরকার এ ব্যাপারে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, গত দেড় মাসে ইন্টারনেট ডাটা ও ভয়েস কলের মূল্য হঠাৎ কেন বৃদ্ধি পেল এর ব্যাখ্যা কমিশনের কাছে চাই। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মেসেজের চার্জ হঠাৎ ৫ টাকা থেকে ১০ টাকা বৃদ্ধি কেন পেল বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে জবাব চাই। দেশের শতভাগ গ্রাহকের দাবি আনলিমিটেড মেয়াদহীন ইন্টারনেট ডাটা তার প্রতি উপদেষ্টা বিটিআরসি এবং অপারেটর সম্মান প্রদর্শন না করলে আগামী দিনে ইন্টারনেট ডাটা বয়কটের মতো কঠিন কর্মসূচি আমরা ঘোষণা করব।
এসময় সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আবুবক্কর সিদ্দিক বলেন, বিগত সরকারের সময় মন্ত্রণালয় যেভাবে ছিল এখনো তাই আছে। পরিবর্তনের কোন লক্ষণ আমরা দেখছি না।
জলধার রক্ষা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সাঈদ ইবনে রানা বলেন, ইন্টারনেট আর পানির মধ্যে এখন খুব একটা পার্থক্য নাই। পানি ছাড়া যেমন জীবন চলে না ইন্টারনেট ছাড়াও তেমন আর জীবনে চলে না। তাই নবাবের চিহ্ন ইন্টারনেট প্রাপ্তির জন্য সকল উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।