সাম্প্রতিক বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালীন একাধিকবার দেশব্যাপী মোবাইল ইন্টারনেট ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট শাটডাউন হওয়ার পেছনের কারণ অনুসন্ধানের প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে জানা যায়, চলমান আন্দলনের সময় ডাটা সেন্টারে আগুন লাগার সাথে ইন্টারনেট বন্ধের কোন সম্পর্ক ছিল না।ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ও বিটিআরসি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মহিউদ্দিন আহমেদের নির্দেশনায় সারাদেশে ইন্টারনেট শাটডাউন করা হয়েছিল।
এতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয় এবং বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়। দেশব্যাপী মোবাইল ইন্টারনেট ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট শাটডাউনের কারণ এবং সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা মোঃ নাহিদ ইসলাম এর নির্দেশক্রমে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৭ (সাত) সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। গঠিত কমিটি প্রাথমিক প্রতিবেদন দাখিল করেছে।
সূত্রমতে, এই প্রতারণায় প্রথম মদদ দিয়েছেন আইএসপিএবি সভাপতি ইমদাদুল হক। দুইটি টেলিভিশনে প্রথমে খাজা টাওয়ারে আগুন বিষয়ক এই অপতথ্য দেয়ার পাশাপাশি প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সুর মিলিয়ে এই দাবি প্রতিষ্ঠায় কাজ করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। সেসব বক্তব্যের ভিডিও ফুটেজও রয়েছে। মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়েছে। ইন্টারনেট শাটডাউনে আইএসপিএবি সভাপতি’র দলীয় পরিচয় এবং অবস্থান সুস্পষ্ট হয়েছে বলে মনে করছেন এই খাতের ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে তারা তার পদত্যাগও দাবি করেছেন।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইন্টারনেট বন্ধের সাথে ডাটা সেন্টারে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি সম্পৃক্ত করে প্রচারনার মাধ্যমে সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জাতির সাথে মিথ্যাচার ও প্রতারণা করেছেন। গত ১৫-১৬ জুলাই ২০২৪ সময়কালে মোবাইল ইন্টারনেট এবং গত ১৮ জুলাই ২০২৪ হতে ২৩ জুলাই ২০২৪ পর্যন্ত ও ৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধ ও চালু করার বিষয়টি ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রশাসনিক অনুমোদন ব্যতিরেকে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এর মৌখিক নির্দেশক্রমে “বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন“ (বিটিআরসি) এর চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদ এর নির্দেশনায় সম্পন্ন করা হয়।
অপরদিকে, গত ১৭ জুলাই ২০২৪ থেকে ২৮ জুলাই ২০২৪ পর্যন্ত এবং ৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখে মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ ও চালু করার বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন “ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার“ (এনটিএমসি) এর নির্দেশনায় সম্পন্ন করা হয়।
মন্ত্রণালয় সূত্রে প্রকাশ এ বিষয়ে অধিকতর তদন্ত চলমান আছে।