বৈষম্য ও দুর্নীতির অভিযোগে এবার উত্তপ্ত বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। নতুন উপদেষ্টা সচিবালয়ে অফিসে যোগ দেয়ার পরই রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আগারাগাঁও বিটিআরসি ভবনের পাদদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারি।
বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন বিটিআরসির ইঞ্চিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশন বিভাগের সিনিয়র সহকারি পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আমীন। এসময় ‘বৈষম্য ও দুর্নীতি করা বর্তমান চেয়ারম্যানের পদত্যাগ এবং চেয়ারম্যানের সঙ্গে অনিয়ম-দুর্নীতির সহযোগী প্রশাসন বিভাগের উপ-পরিচালক ও একান্ত সচিব মো. আমজাদ হোসেন নিপু, ইঞ্চিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশন বিভাগের উপ-পরিচালক মাহদী আহমদেরও বিচার চান তারা। একইসঙ্গে বিটিআরসি গ্রাহক পর্যায়ে নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবা দেয়ার ক্ষেত্রেই ভূমিকা রাখবে বলেও দাবি করেন তারা।
সূত্রমতে, এ সময় বিটিআরসি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মহিউদ্দিন আহমেদ ও তিন কমিশনার উপস্থিত ছিলেন না। ফলে তারা ফাইন্যান্স বিভাগের কমিশনার মুশফিক মান্নান চৌধুরীর কক্ষে গিয়ে সহায়তা চান এবং বিভিন্ন স্লোগান দেন। স্লোগান দিতে দেখা যায় বিভিন্ন ফ্লোরেও। স্বল্পমেয়াদী বিক্ষোভের পর ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ আমিনুল হক কমিশনার, প্রকৌঃ শেখ রিয়াজ আহমেদ অফিসে প্রবেশ করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেছেন, আমি সবাইকে শান্ত থাকতে বলেছি। আমি মনে করি, বিটিআরসি নিজস্ব নিয়মে; প্রক্রিয়া মেনে চলবে। অভিযুক্তদের ওএসডি করা যেতে পারে। এর পর তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত হতে পারে।
এদিকে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে বিটিআরসি’র একান্ত সচিব মো. আমজাদ হোসেন নিপু পালিয়ে যান। পড়ন্ত দুপুরে বিটিআরসি’র ৯ম তলায় অপর অভিযুক্ত মাহদীকে আটকে রাখেন বিক্ষুব্ধরা। এসময় ভাইস চেয়ারম্যান আমিনুল হক তাদের কাছে গিয়ে দাবি-দাওয়া শোনেন।
সূত্রমতে, এমন পরিস্থিতিতে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বিটিআরসি-তে যাওয়ার খবর থাকলেও তিনি আসেননি। তবে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আমিরুল ইসলাম তদন্তে আসেন। শুনানিতে টেলিকম অপারেটরগুলোর প্রতিনিধিরাও অংশ নেন। অভিযোগের ভিত্তিতে দুই জনকে ওএসডি করা হতে পারে বলে জানিয়েছে একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র।
এ নিয়ে বিক্ষোভের নেতৃত্বে থাকা আরেক কর্মকর্তা প্রশাসন বিভাগের সিনিয়র সহাকারি পরিচালক মোঃ আব্দুস শাহীদ চৌধুরী জানান, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেবেন। অনিয়ম, দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের বিচার চাইবেন।
এদিকে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ এক সংবাদবিজ্ঞপ্তিতে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ দাবি করে গ্রাহকের অব্যবহৃত ইন্টারনেট ডাটা ব্যবহার করার সুযোগ না দেওয়া এবং ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের এক দেশ এক রেট গাইডলাইন বাস্তবায়ন না করতে পারায় বিটিআরসি’র শীর্ষ কর্মকর্তাদের স্বেচ্ছায় পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে আমাদের আহ্বান থাকবে এদেরকে আইনের আওতায় আনা উচিত। সেই সাথে কমিশনে দুর্নীতিবাজ দের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা উচিত।