মোবাইল ইন্টারনেটের গতিতে উগান্ডার চেয়ে ৪১ ধাপ পেছনে অবস্থান করছে বাংলাদেশ। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইন্টারনেটের গতি কেমন, তা তুলে ধরে প্রতি মাসে স্পিড-টেস্ট গ্লোবাল ইনডেক্স নামে প্রতিবেদন প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ওকলা।
তবে ওকলার এই প্রতিবেদন নাকচ করে দিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, আমি ওকলার ওই রিপোর্ট বিশ্বাস করি না। কারণ ওকলা আমাদের সরকারি কর্তৃপক্ষের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। আপনি ব্যক্তিগত একটি প্রতিবেদন দিয়ে দিলেন, সেটা আমি স্ট্যান্ডার্ড হিসেবে মেনে নেবো, তা হবে না। ওকলা কোনো স্ট্যান্ডার্ড না।
সোমবার (২০ নভেম্বর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। ওকলার তথ্য নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে মন্ত্রী আরো বলেছেন, ওকলা গতি মাপের সময় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সঙ্গে তারা কথা বলেনি।
এসময় বিটিআরসিকে টেলিকম খাতের অভিভাবক উল্লেখ করে মানদণ্ড নির্ধারণ করেত বিটিআরসির কাউকে সঙ্গে নেয়ার পরামর্শ দেন মন্ত্রী।
মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা মূল্যায়ন সম্পর্কে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছেন, আমি মনে করি, গোয়ালা কখনো নিজের দই সম্পর্কে খারাপ কিছু বলবে না। আমি বলবো, ২০১৮ সালের আগের টেলিযোগাযোগ খাতের সঙ্গে ২০২৩ সালের অবস্থান নিজেরা অনুসন্ধান করে বের করলে পরিবর্তনটা দেখতে পাবেন। আর আমার কাজ চিরদিনই আমার কাছে ভালো মনে হবে। আমি একবাক্যে বলবো, ২০১৮ সালের যেসব কাজ বা অগ্রগতিগুলো হয়নি, সেগুলো পূরণ করার জন্য আমি সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা করেছি। যে কারণে আমরা অনেক উন্নতি করতে পেরেছি। এই যেমন- বাংলাদেশে শতকরা ৯৮ ভাগ ফোরজি নেটওয়ার্ক আছে এখন। এটি প্রায় দুঃসাধ্য একটি কাজ ছিল। যেখানে থ্রিজি নেটওয়ার্ক প্রসারিত হতে পারেনি। ২০২৩ সালের মধ্যে সারা দেশে ফোরজি নেটওয়ার্ক দিতে পেরেছি।
মোস্তাফা জব্বার আরো বলেছেন, মোবাইল নেটওয়ার্ক সম্পর্কে আমি যে অভিযোগ সবসময় পাই, তার একটি হচ্ছে, চারটি টেলিকম অপারেটরের ভিতরে তিনটি সম্পর্কে তাদের অভিযোগ হচ্ছে, কল ড্রপ হয়, নেটওয়ার্ক পাই না। চতুর্থ অপারেটর টেলিটকে সর্বসাকুল্যে বিনিয়োগ ছিল তিন হাজার ৬০০ কোটি টাকা। টেলিকম খাত এমন যে, নেটওয়ার্ক না থাকলে নাম দিয়ে ব্যবসা করা যাবে না। নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা কঠিন কাজ ছিল। এখন টেলিটকে বিনিয়োগ বেড়ে ১৫ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি। এতে টেলিটক দুর্যোগ প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতেও নেটওয়ার্ক দিতে পেরেছে। আরেকটি বড়ো কাজ হচ্ছে, একটি ডমিস্টিক রোমিংয়ের কাজ শুরু করেছে। সেটি বাংলালিংকের সঙ্গে এখন পরীক্ষামূলকভাবে চলছে। এরমধ্য দিয়ে বাংলালিংকের নেটওয়ার্ক পুরোটাই ব্যবহার করতে পারবে টেলিটক। আবার টেলিটকের নেটওয়ার্কের নেটওয়ার্ক বাংলালিংক ব্যবহার করতে পারবে। এতে লাখ কোটি টাকার বিনিয়োগের সুবিধা পাওয়া যাবে। এমনভাবে ইন্টারনেটের দামের দিকে তাকালে দেখতে পাবেন, আমরা একদেশ এক রেট করেছি। জনগণের প্রতি সুবিচার ও স্বার্থ রক্ষার জন্য যা করার, সেটা আমরা করেছি।