দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান গবেষণায় আগ্রহী করে তুলতে আবারো শুরু হচ্ছে চিলড্রেন রিসার্চ ফান্ড প্রোগ্রাম। এই ফান্ডের মাধ্যমে ৬ষ্ঠ-১২শ শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা তাদের নিজস্ব গবেষণা প্রকল্পগুলিতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পেতে পারবে। বাংলাদেশ বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতি (এসপিএসবি) এবং মাকসুদুল আলম বিজ্ঞানাগার (ম্যাসল্যাব) যৌথভাবে এ রিসার্চ ফান্ড প্রোগ্রামের আয়োজন করেছে।
২০২৪ সালে বাংলাদেশে অধ্যয়নরত ৬ষ্ঠ থেকে দ্বাদশ বা সমমান পর্যায়ের শিক্ষার্থীর জন্য এই ফান্ড প্রদান করা হবে। ৬ষ্ঠ – ৮ম, ৯ম – ১০ম, ১১শ – ১২শ – এই তিনটি বিভাগে এ ফান্ডের জন্য শিক্ষার্থীদেরকে আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্ধারিত লিঙ্কে আবেদন করে একটি গবেষণা প্রস্তাব জমা দিতে হবে।
এক্ষত্রে শিক্ষার্থীরা প্রথমে যে বিষয় নিয়ে গবেষণা করতে চায় সেটির একটি কনসেপ্ট পেপার (ধারণাপত্র) জমা দিতে হবে। এই কনসেপ্ট পেপার সর্বোচ্চ এক বা দুই পাতার হতে পারবে। এখানে গবেষণার নাম, গবেষণার বিষয়, কিভাবে গবেষণা করা হবে এবং গবেষণার প্রভাব – এসবের সারসংক্ষেপ নিয়ে কনসেপ্ট পেপার (ধারণাপত্র) তৈরি করতে হবে। একক বা দুইজনের দল হিসেবে গবেষণা কনসেপ্ট পেপার জমা দেয়া যাবে। দলগতভাবে আবেদন করলে সকল সদস্যকে অবশ্যই নিজ নিজ বিভাগের হতে হবে। সেই সাথে দলের সকলের নাম, স্কুল/কলেজের নাম এবং একজন মেন্টরের নাম যুক্ত করতে হবে।
প্রস্তাবটিতে নির্দিষ্ট প্রকল্পের উদ্দেশ্য, পদ্ধতি, ফলাফলের এবং এর সম্ভাব্য প্রভাবকে ব্যাখ্যা করতে হবে। ফান্ডপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদেরকে তাদের গবেষণা প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, প্রশিক্ষণ ও ভাতা প্রদান করা হবে। ভৌত বিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও রোবটিকস, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন, সামাজিক বিজ্ঞান, কৃষি এবং শিক্ষা – এই বিষয়গুলোর উপরে কনসেপ্ট পেপার জমা দেয়া যাবে। কনসেপ্ট পেপার জমা দেয়ার পর ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখতে হবে কনসেপ্ট পেপার একসেপ্টেড হয়েছে কিনা।
ধারণাপত্র গৃহীত হলে শিক্ষার্থীদের বিস্তারিত গবেষণা প্রস্তাব জমা দিতে হবে। কনসেপ্ট পেপার অনুযায়ী সম্ভাব্য খরচসহ একটি রিসার্চ প্রপোজাল বা গবেষণা প্রস্তাব তৈরি করতে হবে। যেখানে কি করতে, কিভাবে করতে চাওয়া হয়েছে, এই গবেষণা করলে কী ফলাফল আসতে পারে এবং এর প্রভাব কী, তার বিস্তারিত থাকবে। সেই সাথে এই প্রপোজালে কি ধরণের সরঞ্জাম, ল্যাব বা প্রশিক্ষন দরকার সেটিও জানাতে হবে। ইকুইপমেন্টের মূল্যসহ বাজেট উল্লেখ করতে হবে। একই সাথে কনসেপ্ট পেপারে যে শিক্ষক বা মেন্টরের সাহায্য নিয়ে এই গবেষণা করা হবে, তার একটি সুপারিশপত্র বা রেফারেন্স লেটার প্রপোজালের সাথে যুক্ত করতে হবে।
তবে একবার কনসেপ্ট পেপার বাতিল হলে যে কেউ আরেকটি কনসেপ্ট পেপার জমা দিতে পারবে। এ গবেষণার সময়সীমা এক থেকে সর্বোচ্চ তিনমাস পর্যন্ত হতে পারবে। এর মাঝেই ফলাফলসহ প্রয়োজনীয় রিপোর্ট প্রস্তুত করতে হবে। যাদের কনসেপ্ট পেপার গৃহীত হবে, তাদের সবাইকে ‘প্রপোজাল কিভাবে লিখতে হবে’ সে বিষয়ে অনলাইনে ওয়ার্কশপ করানো হবে। আবেদনপত্রগুলি একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি দ্বারা মূল্যায়ন করা হবে। রিসার্চ প্রপোজাল সাবমিট করার দুই সপ্তাহ পরে, কাদের রিসার্চ ফান্ড দেয়া হবে সেই ফলাফল ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে। ফান্ডপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা তাদের গবেষণা প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, ওয়ার্কশপ ও ভাতা হিসেবে ফান্ড ব্যবহার করতে পারবে। ফান্ডপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের অবশ্যই এসপিএসবির নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে এবং ফান্ডপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের অবশ্যই গবেষণা প্রকল্পের ফলাফল এই প্রতিষ্ঠানের সাথে শেয়ার করতে হবে।
এই প্রোগ্রাম ভবিষ্যৎ বিজ্ঞানীদের সৃজনশীল চিন্তা এবং উদ্ভাবনী ক্ষমতাকে বিকশিত করার সুযোগ করে দেবে বলে বিশ্বাস করেন এই প্রোগ্রামের আয়োজকেরা।