বিজয়ের মাস ডিসেম্বরের শুরুতেই বিজয়ের কেতন উড়ালো আমাদের জেনজি প্রজন্ম। মেধা আর উদ্ভাবনের খেলায় কেশর ফুলিয়েই এক কাতারে ‘কাতার জয় করলো’ বাংলার ২৭ কিশোর। এবারের ওয়ার্ল্ড ম্যাথমেটিকস টিম চ্যাম্পিয়নশিপে (ডব্লিউএমটিসি ২০২৪) রীতিমতো ছক্কা হাঁকিয়ে ভূমিধস জয় পেলো খুদে গণিতবিদেরা। এজন্য বিজয়ীদের একক পর্বে এমসিকিউ ও লিখিত প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়েছে তাদের। নাম্বার থিওরি, জিওমেট্রি, অ্যালজেবরা ও কম্বিনেটরিকস থেকে প্রশ্ন ছিলো প্রতিযোগিতায়। ছিলো ১৫টি এমসিকিউ প্রশ্নও। প্রতিযোগিতায় নম্বরে এগিয়ে থাকতে সর্বোচ্চ উত্তর দেয়ার পাশাপাশি কোনো ভাবেই যেনো ভুল না হয় সেদিকে সতর্ক থাকতে হয়েছে তাদের। চোখ রাখতে হয়েছে ঘড়ির কাটায়। এভাবেই দলগত পর্যায়ের বাংলাদেশের সব কটি দলই শীর্ষ ৩০ শতাংশ দলের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে এবার। ‘টপ টিম’ শ্রেষ্ঠ গণিতবিদের ক্লাবে জায়গা করে নিয়েছে লাল-সবুজের পতাকাবাহী ইন্টারমিডিয়েটের ৩টি এবংঅ্যাডভান্সড লেভেলের ১টি দলসহ বাংলাদেশের ৪টি দল।
ভেনি-ভিডি-ভিসি
গত ২৮ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর কাতারের রাজধানী দোহাতে অনুষ্ঠিত হয় গণিতের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা ওয়ার্ল্ড ম্যাথমেটিকস টিম চ্যাম্পিয়নশিপ। কাতার ফাউন্ডেশনের আয়োজনে একযুগ ধরে চলছে গণিতের সমস্যার সমাধান, যৌক্তিক কারণ নির্ণয় এবং নেটওয়ার্কিং প্রতিযোগিতাটি। তবে গণিত ভিত্তিক স্টার্টআপ বাংলার ম্যাথ এর প্রোযোজনায় এবারই প্রথম এই আসরে যোগ দেয় বাংলাদেশ। বিশ্বের ২৭টি দেশ থেকে ১২০টির বেশি দলের সাত শতাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় বাংলাদেশের ৫টি টিম-‘দ্যা বেঙ্গল হেক্সাগন’, ‘দ্যা রয়েল সিক্স অব বেঙ্গল’, ‘দ্যা ডেল্টা সিক্স’, ‘দ্যা বেঙ্গল হেক্সা’ এবং ‘দ্যা বেঙ্গল ট্রাইনোমিয়াল’। এই ছয়টি দল থেকে একেকজন সদস্য বাজিমাত করে এক ঘণ্টার তিন ধাপের পরীক্ষায়।
প্রথমবারে অংশ নিয়েই রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজারের উচ্চারিত ‘ভেনি, ভিডি, ভিসি’ কে বাস্তবে রূপ দিয়ে পারস্য জয় করলো টিমের ২৭ জন সদস্যই। ছয়টি স্বর্ণপদক, ১১টি রোপ্য, সাতটি ব্রোঞ্জ এবং তিনটি মেরিট নিয়ে এই ভূমিধস বিজয় ছিনিয়ে এনেছে বাংলাদেশ।
প্রথম সফরেই ছক্কা হাঁকিয়ে ‘এলো, দেখলো এবং জয় করলো’ পুরান ঢাকার সেন্ট যোসেফের হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের ৭ম শ্রেণীর ছাত্র জুনিয়র বিভাগের অহন বনিক। একইভাবে একই স্কুলের ৮ম শ্রেণীর তাহমীদ আল আসাদ ও নবম শ্রেণীর সাকিফ মিহরান সাবির; ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণীর নাশওয়ান হক মাহির; মতিঝিল গভঃ বয়েস স্কুলের অষ্টম শ্রেণীর প্রজেশ ভৌমিক এবং বীরশ্রেষ্ঠ নূর মুহাম্মদ পাবলিক কলেজের নবম শ্রেণীর মোবাশ্বির আরিক ইন্টারমিডিয়েট বিভাগে স্বর্ণজয় করে। এছাড়াও দেশের পক্ষে জুনিয়র লেভেলে সেন্ট যোসেফের ৭ম শ্রেণীর আরমান মালিক, ঢাকার আগা খান একাডেমীর ৫ম শ্রেণীর ফাতিমা জাহরা শেখ, যশোর সরকারি গার্লস স্কুলের ৮ম শ্রেণীর জান্নাতুল ফেরদৌস নওশিন; ইন্টারমিডিয়েট গ্রুপে প্রেসিডেন্সি ইন্টাঃ স্কুলের ৮ম শ্রেণীর লাইবা সারিনা ইসলাম, গ্লেনরিচ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল উত্তরার গ্রেড-৯ এর শিক্ষার্থী আয়্যান জামান, বান্দরবানের লামা উপজেলার কোয়ান্টাম কসমো স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র পিতৃহীন উছাই মং মার্মা, সেন্ট যোসেফের ৮ম গ্রেডের মো. তাহসিন ইসলাম, রাফিদ উন নবী ও কুমিল্লা জেলা স্কুলের নবম শ্রেণীর মো. সারাফ নুহিল ইসলাম রৌপ্য জয় করে। একই গ্রুপে সেন্ট যোসেফ থেকে ৮ম শ্রেণীর মোহাম্মদ ইবতেসাম ইসলাম মো. ফাহিম, ৭ম শ্রেণীর শুভ্র অনিন্দ্য বেপারী; আরএসএফ মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণীর মোঃ ফাহিম, এক্সেল একাডেমির ৭ম শ্রেণীর মোহাম্মদ সাইফান হায়দার এবং গ্লেনরিচ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ৮ম শ্রেণীর সাকিন আল সাদাফ ব্রোঞ্জ জয় করেছে। এছাড়াও অ্যাডভান্সড গ্রুপে সেন্ট যোসেশের একাদশের শিক্ষার্থী ইনতেশার আলম মানাম ব্রোঞ্জপদক, ক্যান্টঃ ইংলিশ স্কুল অ্যান্ড কলেজের ১০ম শ্রেণীর মোহাম্মদ মারজুক রহমান ও সেন্ট গ্রেগরি হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের ১০ শ্রেণীর সাদ বিন আহমেদ সিলভার পেয়েছে। আর ইন্টারমিডিয়েট থেকে মেরিট সার্টিফিকেট পেয়েছে ব্রিটি স্ট্যান্ডার্ড স্কুলের ৭ম শ্রেণীর হুমায়রা আফিয়া, এবিসি ইন্টাঃ স্কুলের নবম শ্রেণীর অহম সাহা এবং ব্রিটিশ স্ট্যান্ডার্ড স্কুলের ৫ম শ্রেণীর গৈরিক পাল।
বিজয়ের আগে–পরে
অবশ্য এই বিজয় কিন্তু চকিতে ধরা দেয়নি। যাত্রার শুরুটাও ছিলো দুরু দুরু কাঁপন তোলা। ওয়ার্ল্ড ম্যাথমেটিক্স টিম চ্যাম্পিয়নশিপ (WMTC) এর জন্য বাংলাদেশ গণিত দলের সদস্যদের নির্বাচনে সারা দেশ থেকে দুই হাজারের অধিক শিক্ষার্থী নিবন্ধন করে। নিবন্ধনকৃত শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রথমে অনুষ্ঠিত হয় ‘অনলাইন বাছাই রাউন্ড’। এই ধাপে নির্বাচিতদের নিয়ে ‘গণিত হোক আনন্দের’ স্লোগানে গত ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকার সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে (SEU) অনুষ্ঠিত হয় বাংলার ম্যাথ টিম চ্যাম্পিয়নশিপ (BMTC) এর জাতীয় পর্যায়। দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৪৫০ শিক্ষার্থী এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। প্রতিযোগিতায় জুনিয়র, ইন্টারমিডিয়েট ও অ্যাডভান্সড লেভেলে মোট ১০১ জন বিজয়ী হয়। টিম রাউন্ডে জুনিয়র লেভেলে ৫টি দল, ইন্টারমিডিয়েট লেভেলে ১০টি দল এবং অ্যাডভান্সড লেভেলে ৩টি দল বিজয়ী হয়। বিজয়ীদের জাতীয় পর্বের পরীক্ষা এবং পরবর্তীতে নির্বাচনী পরীক্ষার মাধ্যমে জুনিয়র লেভেলে ৬ জনের একটি টিম, ইন্টারমিডিয়েট লেভেলে ১৮ জনের তিনটি টিম এবং অ্যাডভান্সড লেভেলে ৩ জনের একটি টিমকে ওয়ার্ল্ড ম্যাথমেটিক্স টিম চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৪ (WMTC-2024) এর জন্য নির্বাচিত করা হয়। এদের দুই মাসের প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে তৈরি করা হয় বিশ্বমঞ্চের জন্য। আর এই মঞ্চে ওঠার মধ্য দিয়ে অংশগ্রহণকারীদের প্রায় সাবাই এবার প্রথম বারের মতো পা রাখে দেশের বাইরে।
বিদেশের মাটিতে প্রথম
সেখানে গিয়ে গণিতে জাদরেল দেশ হিসেবে পরিচিত চীন, আমেরিকা, বুলগেরিয়, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও প্রতিবেশীর ভারতের শিক্ষার্থীদের কাছে তাদের মনে হয়েছিলো ‘ওদের কাছে তারা নস্যি’। কেননা, যাওয়ার পরের দিনই প্রতিযোগীদের স্মার্টনেসে তারা আপসেটয়। ওদের কারো কাছে আইপড। কারোবা আইপ্যাড। দামী দামী ডিভাইস আর অভিজাত দেশের আভিজাত্যের খুশবু ছড়াচ্ছিলো তারা। কিন্তু ‘বাংলাদেশ’ নাম শুনে ততটা গ্রাহ্য করেনি তারা। তবে বিজয়ের পর সূর্যালোকিত হবার মতোই হাত বাড়িয়ে দেয় বন্ধুত্বের। সেই দিনের কথা স্মরণ করে বাংলার ম্যাথের সহপ্রতিষ্ঠাতা আহমেদ শাহরিয়ার শুভ বললেন, আমরা খেয়াল করি, বিশ্বের নানা দেশের অসংখ্য শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে আমাদের শিক্ষার্থীরা বেশ ঘাবড়ে গেছে। ফলে অংশগ্রহণকারীদের মানসিকভাবে চাঙ্গা করতে দলের চারজন কোচ তাদেরকে প্রফুল্ল রাখার জন্য সাধ্যমতো চেষ্টা করেন। এর হলেন- বাংলাদেশ দলের কোচ আহমেদ শাহরিয়ার, মাহ্তাব হোসাইন, আশরাফুল আল শাকুর ও ফারহান উদ্দিন। মূল প্রতিযোগিতার আগের দিন সকল প্রতিযোগীকে মানসিকভাবে চাঙ্গা করি। তারা আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠে। এরপর জুনিয়র ক্যাটাগরিতে যখন এওয়ার্ড ঘোষণা শুরু হলো তখন আমরা খেয়াল করলাম আমাদের একজন শিক্ষার্থী গোল্ড মেডেল পেয়েছে। ইন্টারমিডিয়েট ক্যাটাগরিতে গিয়ে দেখা গেল একে একে ৫ জন শিক্ষার্থী গোল্ড মডেল পেয়েছে। একবার করে বাংলাদেশ দলের নাম ডাকা হচ্ছে সবাই পিছনে তাকাচ্ছে। এটি আমাদের জন্য অনেক সম্মানের এবং আনন্দের এক অভিজ্ঞতা ছিল।
স্বর্ণজয়ীদের মধ্যে অহন বনিকের বাবা সঞ্জয় কুমার বনিক বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশনের চেয়ারম্যান। মা- সরকারি বাঙলা কলেজের শিউলী ভদ্র উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। অহন গত বছর অনলাইনে বুলগেরিয়ায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক গণিত প্রতিযোগিতায় (আইএমসি) অংশ নিয়ে অনারেবল মেনশন পেয়েছিলো। কোন প্রতিযোগিতায় এটাই প্রথম বিদেশ যাওয়া। প্রথম অভিজ্ঞতাটা ছিলো ভয়ের। প্রত্যাশার চেয়ে ঢের ভালো ফলাফল করে সে বললো, প্রথম চায়না, বুলগেরিয়ান ইন্ডিয়াকে দেখে একটু ভয় পেয়েছিলাম এই ভেবে যে ওরা dominating টিম। ওদের তুলনায় আমরা কেমন করব কে জানে!! পরে অবশ্য আমারা ইন্ডিয়া এবং বুলগেরিয়া থেকে ভাল করেছি। শুরুতে ডোমিনেটিং টিমগুলোর প্রতিযোগিদের সাথে অল্প কিছু সৌজন্যমূলক কথা হয়েছিল। রেজাল্টের পরে অবশ্য অনেকের সাথেই বন্ধুত্ব হয়েছে। USA, South Koria, Philippines, India, কাজাকস্থান এই সব টিমের সঙ্গে বেশ ভাল বন্ধুত্ব হয়েছে। এর মধ্যে ফিলিপিনের একজন প্রতিযোগী বাংলাদেশে আসতে চেয়েছে। এই বন্ধুত্বের বন্ধন শুধু গণিতের হিসাবের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। ওরা আমাদের দেশের জীবন যাপন পদ্ধতি, আমাদের কালচার ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। বিজয়ের পর তাদের চোখে আমাদের জন্য অন্যরকম সম্মান দেখতে পেয়েছি।
তার মতোই জুনিয়ার গ্রুপের স্বর্ন-কিশোর সেন্ট জোসেফের হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের ৭ম শ্রেণীর ছাত্র সাকিফ মিহরান সাবির জানালো, ওমরা করতে বাবা মায়ের সঙ্গে সৌদি আরব গিয়েছিলো। এর পর এবার তুরস্কে প্রতিযোগিতার জন্য। এই সফরটা ছিলো স্বপ্নের মতো। শুরুতে ভয় পেলেও স্বর্ণজয় করার পর আত্মবিশ্বাস বেড়ে গিয়েছে। আমার বিশ্বাস, আগামীতে চীন এবং আমেরিকাকেও আমরা টপকাতে পারবো। সাকিফের বাবা হাসান সাবির একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের আইটি বিভাগে কর্মরত। আর মা-জিনাত ফার্মা ঘরগেরস্থলির পাশাপাশি ছেলেকে শেখাচ্ছেন জীবনের হিসাব-নিকাশ।
গণিতে নেই ভয়, গণিতেই বিশ্বজয়
প্রত্যন্ত অঞ্চলে নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যে বেড়ে উঠলেও গণিতের লড়াইয়ের অন্যতম সৈনিক হয়ে ওঠে বান্দরবানের পিতৃহীন উছাইওয়াং মারমা। সে জানালো ‘এবারই প্রথমবারের মতো গণিত প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে। বান্দরবানের মতো এলাকা থেকে কাতারের দোহায় যাওয়ার সুযোগটা তার জন্য দারুণ এক অভিজ্ঞতা। রৌপ্যপদক পেয়ে আনন্দ আরও বেড়ে গেছে। প্রশ্ন বেশ কঠিন হলেও বুদ্ধি খাটিয়ে সমাধান করেছে সে।
তার মতো বগুড়া রুরাল সার্ভিস ফাউন্ডেশন গ্রানাডা একাডেমির দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. ফাহিম জানিয়েছে, প্রথমবার কোনো বড় আয়োজনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পেয়েছে এবারে অলিম্পিয়াডে অংশ নিয়ে। পরীক্ষায় বইয়ের বাইরের সব গণিতের প্রশ্ন তাকে বেশ রোমাঞ্চিত করেছে। সহজে সমাধান করা যায়, এমন প্রশ্নগুলোর উত্তর দিয়ে ব্রোঞ্জপদক জিতেছে সে।
বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরাও আগে পাঠ্যসূচিতে গণিত নিতে ভয় করত। এখন শিক্ষার্থীরা উৎসাহ নিয়ে গণিত শেখে। গণিত উৎসব করে। সেই উৎসবে নতুন পালক যুক্ত করছে বাংলার ম্যাথ। গণিতে ছয়টি স্বর্ণ পদক অর্জন সম্ভব হয়েছে এই স্টার্টআপটির কল্যাণেই। তবে এই উদ্যোগে গণিতে নিরঙ্কুশ বিজয়ী বাংলাদেশ দলের ভ্রমণ সহযোগী ছিল দেশের পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস।