তরুণদের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর ভালোবাসা, শান্তি ও স্বাধীনতার দর্শন ছড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশ্যে তিনি বলেছেন,যদি তোমরা বঙ্গবন্ধু রাজনৈতিক দর্শন সম্পর্কে জানতে চাও তবে সবসময় তোমাদের মাথায় রাখতে হবে যে, বঙ্গবন্ধু তাঁর জীবনের অধিকাংশ সময় রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে কাজ করেছেন। কিন্তু সবসময় তিনি অহিংস ও শান্তিপূর্ণ কর্মপন্থাকে প্রাধান্য দিয়েছেন।
পলক মনে করেন, ন্যূনতম সুখী এবং সৎ জীবনের নিশ্চয়তাই সকলের জন্যেই কল্যাণমুখী সমাজ উন্মুক্ত করবে।
শুক্রবার (২৭ আগস্ট) রাতে ‘ভালোবাসা, শান্তি ও স্বাধীনতা: বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন’ শীর্ষক আলোচনায় দেয়া স্বাগত বক্তব্যে এমন বেশ কিছু উদ্ধৃতি উপস্থাপন করে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শনের মৌলিক দিকগুলো তুলে ধরেন পলক।
প্রসঙ্গত তিনি বঙ্গবন্ধুর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ‘একজন মানুষ হিসাবে সমগ্র মানবজাতি নিয়েই আমি ভাবি। একজন বাঙালি হিসাবে যা কিছু বাঙালিদের সঙ্গে সম্পর্কিত তাই আমাকে গভীরভাবে ভাবায়। এ নিরন্তর সম্পৃক্তির উৎস ভালোবাসা, অক্ষয় ভালোবাসা, যে ভালোবাসা আমার রাজনীতি ও অস্তিত্বকে অর্থবহ করে তোলে।’
১৯৭২ সালে যে বঙ্গবন্ধু জনগণের প্রতি তার ভালোবাসাকে নিজের শক্তি এবং অতিরিক্তি ভালোবাসাকে সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হিসেবে উল্লেখ করেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট, দুর্ভাগ্যের কালো রাতে ঘাতকের বুলট কেড়ে নিয়েছিলো সেই বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের জীবন- যোগ করেন পলক।
রাজনীতিতে গণমানুষের প্রতি ভালোবাসার প্রশান্তি এবং তাদেরকে স্বাধীনতার স্বাদ দিতে বঙ্গবন্ধু দরিদ্র কৃষক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার বিষয়টিও তুলে ধরেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক জীবনে মানুষের বঞ্চনা নিয়ে উত্তাল আন্দোলন করেছেন বঙ্গবন্ধু। কিন্তু তিনি কখনোই অহিংস শান্তিপূর্ণ অবস্থান থেকে বিচ্যুত হননি।
বঙ্গবন্ধুকে উদ্ধৃত করে পলক বলেন, মানবজাতির টিকে থাকা ও সুরক্ষার জন্য শান্তি অনিবার্য। তা শান্তির মধ্যে নিহিত রয়েছে মানবজাতির সকল আশা ও আকাঙ্ক্ষা। ন্যায়বিচারের ওপর প্রতিষ্ঠিত না হলে শান্তি টিকে থাকে না। এ বিষয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই যে, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও অংশীদারিত্ব ছাড়া শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়।
সম্পদের সুষম বন্টন এবং বিশ্ব প্রযুক্তি জ্ঞান অর্জন করে পরমাণু যুদ্ধমুক্ত শান্তিপূর্ণ বিশ্ব গড়ে তুলেতে ঐক্যবদ্ধ ও সম্মিলিত প্রচেষ্টার ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রতিমন্ত্রী।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক দর্শন নিয়ে এক ঘণ্টার এই তাত্ত্বিক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয় বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশের যুগলযাত্রাকে কেন্দ্র করে।
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার শাহ আলী ফরহাদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানো আরো আলোচনা করেন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ফখরুল আলম (অনুবাদক, অসমাপ্ত আত্মজীবনী), বর্ষীয়ান গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব সৈয়দ বদরুল আহসান এবং আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম।
বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পথে বঙ্গবন্ধুর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলো আধুনিক প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে ‘ভালোবাসা, শান্তি ও স্বাধীনতা; বঙ্গবন্ধুর দর্শন’ বিষয়ে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক অথরিটি এবং আইসিটি বিভাগ।