ডজনের বেশি নতুন সঙ্গা যুক্ত করে এবং ৪টি অপরাধকে অজামিন যোগ্য করে হালনাগাদ করা হলো সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫। রহিত করা হয়েছে বিতর্কিত ৯টি ধারা। জনপরিসরে আপত্তির প্রতি সম্মান জানিয়ে এই আইন থেকে বুলিংকে বাদ দেয়া হয়েছে। এতে সরকারকেও স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অধীনে আনার পাশাপাশি অধ্যাদেশের ২৫ এর ৩ এ নারী ও শিশু সাইবার অপরাধকে শাস্তিযোগ্য করা হয়েছে।
টিআইবিসহ বিভিন্ন নাগরিক সমাজের পরামর্শে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার পর এই হালনাগাদ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইসিটি উপদেষ্টা শীষ হায়দার চৌধুরী। বুধবার আইসিটি বিভাগের সচিবের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই জানিয়েছেন তিনি। স্বচ্ছতা ও জবাদিহিতা নিশ্চিত করতে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হালনাগাদ এই অধ্যাদেশ নিয়েও অনলাইনে মতামত দেয়া যাবে। মতামত দিতে হবে [email protected] এবং [email protected] মেইলে।
সংবাদ সম্মেলনে আইসিটি সচিব শীষ হায়দার বলেছেন, এরপরও যদি কারো কোনো অভিযোগ থাকে তবে তা জানালে আইন পাশের আগে সংশোধন, পরিমার্জনের সুযোগ থাকছে। দেশে সুপ্রসস্ত সাবাইর স্পেসকে সুরক্ষায় নিবর্তন মূলক না হয় সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখা হয়েছে। তবে সংস্কারের মানসিকতায় এটি নিয়মিত হালনাগাদ হতে পারবে। প্যানালকোডে যেসব বিষয় আছে তা এখানে অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি।
এক প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, বিজিডি গভসার্ট প্রকল্পের অধীনে যে কাজ চলছে তার বাইরে জনপ্রেক্ষিতে ন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি এজেন্সিকে আরো কার্যকর করতে অধ্যাদেশ বাস্তবায়নের পর এর পরিধি আরো বাড়বে।
সংবাদ সম্মেলনে সচিবের সঙ্গে আইসিটি নীতি উপদেষ্টা ফয়েজ আহমেদ তাইয়্যেব ও আইসিটি অতিরিক্তসচিব কামরুন নাহার সিদ্দীকা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে ফয়েজ বলেন, অপরাধবোধের দায়মুক্তি দিতে সক্ষম হবে। ভবিষ্যতে সোকো সরকার একে কালাকানুন হিসেবে ব্যবহার করতে না পারে সে দিকটায় নজর দেয়া হয়েছে। এটা যেনো নিবর্তনমূলক না হয় সে জন্য সব ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সাইবার সুরক্ষার সঙ্গায় ইন্টারনেটের সার্বক্ষণিক সংযুক্তি, জাতীয় সাইবার সুরক্ষা গঠন, ব্যক্তির পাশাপাশি ভবিষ্যতের সম্ভাব্য বিষয়কেও সংযুক্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এই আইন বাংলাদেশের সব পেশাজীবিদের সুরক্ষা দেয়া হয়েছে। শব্দ চয়নে বিতর্কিত বিষয়গুলোকে সতর্কতার সঙ্গে সঙ্গায়ন করা হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিসিসি’র নিজস্ব সার্ট থাকবে। তবে এনসার্টকে ক্ষমতায়নের মাধ্যমে কেবল অপেনসোর্স সফটওয়্যার নয় নিজস্ব সফটওয়্যারের মাধ্যমে সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে।
প্রসঙ্গত, রহিত হওয়া বিতর্কিত ৯টি ধারার মধ্যে রয়েছে- ২০ ধারায় কম্পিউটার সোর্স কোড পরিবর্তন সংক্রান্ত অপরাধ ও দণ্ড; ২১ ধারায় মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় সংগীত বা জাতীয় পতাকা সম্পর্কে বিদ্বেষ, বিভ্রান্তি ও কুৎসামূলক প্রচারণার দণ্ড; ২৪ ধারায় পরিচয় প্রতারণা বা ছদ্মবেশ ধারণ; ২৫ ধারায় আক্রমণাত্মক, মিথ্যা বা ভীতি প্রদর্শক, তথ্য-উপাত্ত প্রেরণ, প্রকাশ ইত্যাদি; অনুমতি ব্যতীত পরিচিতি তথ্য সংগ্রহ, ব্যবহার ইত্যাদির দণ্ড; ২৬ ধারায় অনুমতি ব্যতীত পরিচিতি তথ্য সংগ্রহ, ব্যবহার ইত্যাদির দণ্ড; সম্প্রচার ইত্যাদি; মানহানিকর তথ্য প্রকাশ, প্রচার ইত্যাদি; পরোয়ানা ব্যতিরেকে তল্লাশি, জব্দ ও গ্রেপ্তার; ২৯ ধারায় মানহানিকর তথ্য প্রকাশ, প্রচার ইত্যাদি; ৩১ ধারায় আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানো, ইত্যাদির অপরাধ ও দণ্ড; ৩২ ধারায় হ্যাকিং সংক্রান্ত অপরাধ ও দণ্ড এবং মহাপরিচালকের ক্ষমতা অর্পণ সংক্রান্ত ৫৫ ধারা।