অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ও তার স্ত্রী আরিফা জেসমিন কনিকার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। পলকের ২৫টি ব্যাংক হিসাব এবং কনিকার ৩১টি ব্যাংক হিসাবের আর্থিক বিবরণীতে অসঙ্গতিপূর্ণ লেনদেনের হিসাবের সূত্র ধরে অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) দুদকের সহকারী পরিচালক মো. ফেরদৌস রহমান বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন। অনুসন্ধানে পলকের বিরুদ্ধে ৮ কোটি ৭৩ লাখ ৪৭ হাজার টাকা জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া গেছে।
পলক তার ২৫টি ব্যাংক হিসাবে ৩২ কোটি ৪ লাখ ৯৫ হাজার ৩১৪ টাকা জমা ও ২৯ কোটি ৮৪ লাখ ৭২ হাজার টাকা উত্তোলনের মাধ্যমে অস্বাভাবিক লেনদেন করেছেন। অপরদিকে তার স্ত্রী আরিফা জেসমিনের নামে ৯ কোটি ৫৮ লাখ ৯৩ হাজার ৪৩৩ টাকা জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ পাওয়া যায়। তার নামে ৩১টি ব্যাংক হিসাবে ২২ কোটি ৩৪ লাখ ৭১ হাজার ৯৭৯ টাকা জমা এবং ১৭ কোটি ৫৬ লাখ ৮২ হাজার ৮৭৭ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।
দুদক আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়।
এর আগে আগষ্টে অর্থপাচার নিরোধসংক্রান্ত ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী পলক, তার স্ত্রী, পরিবার এবং তাদের মালিকানাধীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করে পরবর্তী ৫ কর্ম দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলো বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
জুনাইদ আহ্মেদ পলক নাটোরের একটি আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে দেশ ছাড়ার পর সাবেক এই প্রতিমন্ত্রীকে বিমানবন্দর হয়ে বিদেশে পালানোর সময় আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে নেওয়া হয়।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ও পরবর্তী সময়ে সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবির কর্মসূচি চলাকালে সরকারি দুই সংস্থা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ও ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) ইন্টারনেট বন্ধের নির্দেশ দিত। এমনকি তখনকার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলকও সরাসরি ফোন করে ইন্টারনেট বন্ধের নির্দেশ দেন বলে অভিযোগ রয়েছে।