প্রতি বছর বাজেট ঘোষণার পরপর বেশ কিছু পণ্য ও সেবার দামের পরিবর্তন ঘটতে দেখা যায়। মূলত সাধারণত অর্থমন্ত্রী বাজেট প্রস্তাবনায় যেসব পণ্যের শুল্ক ও কর কমানো বা প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেন সেসব পণ্যের দাম কমে। বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মোহাম্মদ আলী জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে যে প্রস্তাবনা দিয়েছেন সেই সূত্র ধরে আগামী দিনে দেশে আমাদানীকৃত ল্যাপটপ ও কম্পিউটারের দাম বর্তমান বাজার থেকে ১০ শতাংশ কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তবে দেশে হার্ডওয়্যার শিল্প প্রতিষ্ঠা বা উৎপাদনে কোনো সুবিধা রাখা হয়নি বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির সভাপতি সুব্রত সরকার। বাজেট পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেছেন, ল্যাপটেরপ দাম ১০ শতাংশ কমা ছাড়া আর কোনো সুখবর নেই আমাদের জন্য। উপরন্তু ম্যানুফ্যকচারিংয়ের ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ মূসক দিতে হলে দেশেও কম্পিউটার হার্ডওয়্যার পণ্য উৎপাদন কার্যক্রম নিরুৎসাহিত হবে। একইভাবে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করা দুরুহ হবে এবং রফতানি ব্যয় বাড়বে।
তিনি আরো বলেছেন, আমাদের দাবি থাকলেও হার্ডওয়্যারের খাতকে আইটিআইটিএএস-এ রাখা হয়নি। প্রিন্টারে ওপর যথারীতি ১৫ শতাংশ ভ্যাট এবং ২২ মনিটর ও ২৪ ইঞ্চি মনিটরকে আলাদা এইচএস কোডে রাখা হয়েছে। তাই বলতে পারি, বাজেটে আমাদের দাবি পূরণ হয়নি।
বিকলে সংসদে বাজেট প্রস্তাবনায় অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, বর্তমান সরকার ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ স্লোগান বাস্তবায়নের উদ্দেশে ল্যাপটপ পণ্যটি দেশীয় ভোক্তাদের নিকট সহজলভ্য করতে এবং নকল বা রিফারবিশড ল্যাপটপ ক্রয়ের মাধ্যমে প্রতারণার হাত থেকে ক্রেতাদের রক্ষা করতে ল্যাপটপ এর আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করছি। একইসঙ্গে আমদানি পর্যায়ে আরোপিত মূসক প্রত্যাহারের সুপারিশ করছি। এতে সর্বমোট করভার ৩১ শতাংশ হতে কমে ২০ দশমিক ৫০ শতাংশ এ গিয়ে দাঁড়াবে।’
বস্তুদ বিদয়ী অর্থ বছরে ল্যাপটপ আমদানিতে সবমিলে যে করহার ছিল ৩১ শতাংশ তা কমে দাঁড়াবে ২০ দশমিক ৫০ শতাংশে। আমদানি করা ল্যাপটপের ওপর ভ্যাট ছিল ১৫ শতাংশ।
এদিকে প্রস্তাবিত বাজেটে আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে পাঁচ শতাংশ করায় আসছে অর্থ বছরে দেশে তৈরি মোটরসাইকেলের সিকেডি ইঞ্জিনের পার্টসের আমদানি শুল্ক কমছে। এতে দেশে তৈরি মোটরসাইকেলের দাম কমতে পারে। উড়োজাহাজ রক্ষণাবেক্ষণে খরচ কমায় সেখানেও কিছুটা সুবিধা আসতে পারে। বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত সুইচ-সকেটের দাম কমার সম্ভাবনা আছে। কারণ দেশে উৎপাদিত সুইচ-সকেট, হোল্ডার, ইলেকট্রিক মোটর, ডায়লেসিস ফিল্টারের দামও কিছুটা কমার কথা।