আপডেট: সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ৪৩ লাখ পরিবার বা ফ্যামিলি কার্ড বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশিরউদ্দীন। মঙ্গলবার রাজধানীতে এক প্রোগ্রামে উপদেষ্টা জানান, টিসিবি যে ১ কোটি পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেয়, বছরে ৪,৫০০ কোটি টাকা সরকারি ভর্তুকি দেওয়া হয়। টিসিবির ১৬ অফিসে কর্মকর্তা-কর্মচারি অতি নগণ্য। ১ কোটি কার্ড বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। যাচাই বাছাই করে ৫৭ লাখে নামানো হয়েছে। বাকিগুলো বাদ, যাতে সরকারের ভর্তুকি ইনসাফের সাথে ব্যয় হয়।
দেশেজুড়ে জেলা প্রশাসনের সহায়তায় ডিলারদের মাধ্যমে প্রায় এক কোটি নিম্ন আয়ের ফ্যামিলি কার্ডধারী উপকারভোগী পরিবারের মধ্যে ভর্তুকিমূল্যে পরিবার প্রতি ২ লিটার ভোজ্যতেল, ২ কেজি মশুর ডাল এবং ১ কেজি করে চিনি বিক্রি করছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। তবে এসব কার্ড নিয়ে রয়েছে সমালোচনা। সুবিধাভোগীদের কার্ড ডুপ্লিকেশন, একই পরিবারে একাধিক কার্ডধারী ইত্যাদি বাধা দূর করতে পরিবার প্রতি একটি স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড প্রদানে কার্ডগুলো স্মার্ট করার উদোগ নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এজন্য অনলাইনে সেবা বাতায়ন চালু করা হয়েছে। এত নতুন নিবন্ধনের পাশাপাশি ডুপ্লিকেট কার্ডও সনাক্ত করা যায়।
তাই টিসিবি সেবা বাতায়নের মাধ্যমে ফ্যামিলি কার্ডের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে ফ্যামিলি কার্ড স্মার্ট করার উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বতীকালীন সরকার। এ জন্য প্রাথমিক ভাবে প্রায় ৪৭ লাখ ন্যায্যমূল্যের পণ্য কেনার সুবিধাভোগীর ‘স্মার্ট কার্ড ’করতে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) সহায়তা চেয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দীন।
জেলা প্রশাসকদের কাছে পাঠানো পাঠানো চিঠিতে যারা দীর্ঘদিন পণ্য গ্রহণ করেন না বা কার্ডধারী পরিবার এই সুবিধা পাওয়ার উপযুক্ত নয়, তাদের স্থলে নতুন উপকারভোগী অন্তর্ভুক্ত করে ডাটাবেজ প্রস্তুত করে টিসিবিতে পাঠানোর জন্য চিঠিতে ডিসিদের অনুরোধ করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা।
জেলাপ্রশাসকদের দেয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, এরই মধ্যে ৫৭ লাখ ৩ হাজার ২৯টি কার্ড প্রস্তুত করে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন/সিটি কর্পোরেশন/টিসিবি আঞ্চলিক কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। টিসিবি’র স্মার্টকার্ড প্রস্তুতের সময় জেলা প্রশাসন/সিটি করপোরেশন থেকে দেওয়া উপকারভোগীর ডাটাবেজ বিশ্লেষণে দেখা যায়, অনেক উপকারভোগীর তথ্যে ভুল রয়েছে, উপকারভোগী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে নির্ধারিত মানদণ্ড যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয়নি এবং অনেক কার্ডধারী দীর্ঘদিন ধরে পণ্য উত্তোলন করছেন না।
এতে আরো বলা হয়, ‘দেশের প্রত্যেক সিটি করপোরেশন, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন ওয়ারী উপকারভোগীর সংখ্যা পূর্বেই নির্ধারণ করা রয়েছে। এক কোটি উপকারভোগীর মধ্যে অবশিষ্ট প্রায় ৪৭ লাখ উপকারভোগী নির্বাচনে স্পষ্ট ধারণা পাওয়ার জন্য স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড পোর্টালে লগইন করা যেতে পারে। স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড ড্যাশবোর্ড রিপোর্ট ব্যবস্থাপনা পদক্ষেপ অনুসরণ করে পোর্টালে লগইন করে সব জেলা/উপজেলা/ইউনিয়ন ভিত্তিক উপকারভোগীর স্ট্যাটাসও দেখা যাবে। তাছাড়া এরই মধ্যে প্রস্তুত করা স্মার্টকার্ডের ক্ষেত্রে কোনো পরিবর্তন/সংশোধন প্রয়োজন হলে উল্লিখিত পোর্টালে দেওয়া নিয়ম অনুসরণ করে তা করা যেতে পারে।’
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের মার্চ থেকে চালু করা এ কার্যক্রমকে আরও ফলপ্রসূ করতে উপকারভোগী বাছাইয়ের মানদণ্ড যথাযথভাবে অনুসরণ করে প্রকৃত নিম্নআয়ের পরিবার বাছাই করে পরিবার প্রতি একটি স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড প্রদান করার কার্যক্রম চলমান রাখতেই এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।