সকলের জন্য সারা দেশে দ্রুত ইন্টারনেট সেবা চালুর দাবি জানিয়েছেন গ্রাহক অধিকার নিয়ে সোচ্চার সংগঠন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন (বামুগ্রাএ)। একই দাবি জানানো হয়েছে, বেসিস ও বাংলাদেশ ফ্রিল্যান্সার ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (বিএফডিএস)। মঙ্গলবার বেসিস আনুষ্ঠানিক ভাবে সংবাদ সম্মেলন করে প্রযুক্তি খাতের জন্য আগে ইন্টারনেট চালুর দাবি জানিয়েছিলো। অপরদিকে বিএফডিএস প্রেসিডেন্ট ডা. তানজিবা রহমান সরকারকে দেশের রেমিটেন্স যোদ্ধাদের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধ রেখে হলেও সবার জন্য ইন্টারনেট সংযোগ চালুর আহ্বান জানান।
বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বামুগ্রাএ সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ ইন্টারনেট চালুর জোরালো দাবি তুলে ধরে বলেছেন, গত ১৭ তারিখ থেকে সারা দেশে বন্ধ হয়ে গেছে মুঠোফোন ভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা এবং ১৮ তারিখ থেকে সারা দেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা বন্ধ আছে। এতে করে ১৩ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সাথে ইন্টারনেট সুবিধাভোগী আরো ৫ কোটি গ্রাহক ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এছাড়া ব্যাবসা বাণিজ্য, শিল্প কারখানা, চিকিৎসা, শিক্ষা, ব্যাংক- বীমা, সফটওয়্যার শিল্পে ধস নেমেছে। একই ভাবে টেলিযোগাযোগ শিল্পে ৩০ শতাংশ ব্যাবসা কমেছে।
‘সরকারি সকল ইউটিলিটি গ্রাহকদের বিশেষ করে গ্যাস, বিদ্যুৎ, সুপেয় পানি, এটিএম বুথে টাকা উত্তোলন, মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় ব্যাপক বিপর্যয় নেমে এসেছে। সব মিলিয়ে দৈনিক গ্রাহকদের খতির পরিমাণ প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। তাই সারা দেশে দ্রুত মুঠোফোন ভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা চালু করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি’ -যোগ করেন তিনি।
মহিউদ্দিন আরো বলেন, ইন্টারনেটের সকল এক্সেস ব্যবহার করা যায় সেই ব্যবস্থা সরকারকে করতে হবে। মনে রাখতে হবে, ইন্টারনেট এখন শুধু কথা বলার জন্য না। এই মাধ্যম এখন আন্তর্জাতিক ভাবে জাতিসংঘ ঘোষিত মৌলিক মানবাধিকার। পাশাপাশি সরকারের ও বিটিআরসির কাছে আমাদের দাবি থাকবে যে, অব্যাহত ইন্টারনেট ডাটা ইন্টারনেট সেবা চালুর সাথে সাথে ব্যবহার উপযোগী করে তুলতে। কোন ভাবেই পরের রিচার্জ এর সাথে যুক্ত করা যুক্তিযুক্ত নয়। কারণ গ্রাহক ইতিমধ্যে ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে। সেই সাথে গ্রাহকদের কাছে অনুরোধ করছি কোন ভাবেই যেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে দেয়া না হয় এবং ভয়ভীতি তৈরি হয় এমন কিছু পোষ্ট না করতে। দেশের সুনাম ক্ষুন্ন হয় বহির্বিশ্বে এমন কিছু বা নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে এমন মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকুন।
এদিকে বিএফডিএ সভাপতি তানজিবা রহমান বলেছেন, যে ফ্রিল্যান্সাররা কর্মসংস্থানের ঘাটতি দূর করে নিজের পাশাপাশি আরো কয়েক জনের কাজের সুযোগ করে দিচ্ছেন তারা ইন্টারনেট না থাকায় বিপাকে পাড়েছেন। আর দেশের অধিকাংশ ফ্রিল্যান্সারই ঢাকার বাইরে থাকেন। তাই শুধু ঢাকা নয় দেশেজুড়েই ইন্টারনেট সেবা খুলে দেয়া যৌক্তিক হবে। এ জন্য যে সুরক্ষা ব্যবস্থা নেয়া দরকার তা আমাদের নিতে হবে। তবে আমাদের মনে রাখতে হবে, হঠাৎ করেই ইন্টারনেট চলে যাওয়ায় তারা ক্লায়েন্টদের সঙ্গে যোগাযোগও করতে পারছেন না। এতে প্রতি দিন দেশ বিপুল অংকের ডলার হারাচ্ছে। ফ্রিল্যান্সিং খাতে এই ক্ষতির পরিমান শত কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে শঙ্কা করা হচ্ছে। দীর্ঘ মেয়াদে এই ক্ষতি আরো বারতে পারে। কেননা, এই পরিস্থিতি তাদের রিভিউ এর ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।