অন্তত ৩ হাজার কোটি সূর্যের জায়গা হবে এমন একটি কৃষ্ণগহ্বরের সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। লক্ষ লক্ষ আলোকবর্ষ দূরে ‘অ্যাবেল ১২০১’ গ্যালাক্সি ক্লাসটার বা ছায়াপথ-পুঞ্জের মধ্যে একটি ছায়াপথের কেন্দ্রে রয়েছে এটি।
স্পেস ডট কমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পৃথিবী থেকে মিলিয়ন মিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে এই ব্ল্যাকহোল অবস্থিত। আকারে বিশাল বড় হওয়ার এটিকে ডাকা হচ্ছে ‘আলট্রা ম্যাসিভ ব্ল্যাক হোল’ নামে। মহাবিশ্বের সবচেয়ে বড় এই ব্ল্যাকহোলটি সক্রিয় নয়। অর্থাৎ, এটি এখন কিছু গিলছে না। এ ছাড়া, অন্যান্য ব্ল্যাকহোলে শক্তিশালী এক্স-রে রেডিয়েশন থাকলেও নতুন আবিষ্কার হওয়া এই ব্ল্যাকহোলে সেই রেডিয়েশন শনাক্ত করা যায়নি।
‘দ্য রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি’ জানিয়েছে, গ্রাভিট্যাশনাল লেন্সিং নামে নতুন একটি পদ্ধতি ব্যবহার করে এই কৃষ্ণগহ্বর আবিষ্কৃত হয়েছে। টেলিস্কোপ দিয়ে যতটুক পর্যন্ত দেখা যায়, তার চেয়েও বেশি দূরত্বের জিনিসের অবস্থান এই পদ্ধতিতে শনাক্ত করা সম্ভব।
‘রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি’-র পত্রিকা ‘মান্থলি নোটিসেস’-এ প্রকাশিত হয়েছে গবেষণাপত্রটি।
গবেষণা দলের প্রধান ব্রিটেনের ডুরহ্যাম ইউনিভার্সিটির জ্যোতির্পদার্থবিদ ড. জেমস নাইটিঙ্গেল বলেন, ‘ব্ল্যাকহোলটি এতই বড় যে এর আকার সঠিকভাবে বলা কঠিন। তবে রাতের আকাশে যত নক্ষত্র ও গ্রহ দেখা যায়, সবগুলোকে একসঙ্গে রাখলেও ব্ল্যাকহোলটির এক শতাংশও হবে না। এটি মহাবিশ্বের বেশির ভাগ গ্যালাক্সির চেয়েও আকারে বড়।’
কৃষ্ণগহ্বরের সৃষ্টি হয় বিশাল আকার ও ভরের নক্ষত্রের মৃত্যুর মাধ্যমে। জ্বালানি ফুরিয়ে গেলে সেই নক্ষত্র মহাকর্ষীয় বলের প্রভাবের নিজের মধ্যে সংকুচিত হয়ে ব্ল্যাকহোল বা কৃষ্ণগহ্বরে পরিণত হয়। ফলে কৃষ্ণগহ্বরের আয়তন অনেক কম কিন্তু ভর অত্যন্ত বেশি। এর ভর এত বেশি থাকে যে এর মহাকর্ষীয় শক্তি কোনো কিছুকেই এর ভেতর থেকে বের হতে দেয় না। এমনকি আলোও কৃষ্ণগহ্বরের মহাকর্ষীয় বল উপেক্ষা করে বেরিয়ে আসতে পারে না। ফলে টেলিস্কোপ দিয়ে সরাসরি কৃষ্ণগহ্বর দেখা যায় না। আশপাশের বস্তুর ওপর এর প্রভাব নির্ণয় করে বিজ্ঞানীরা কৃষ্ণগহ্বরের অস্তিত্ব বোঝেন।