দক্ষিণ কোরিয়ার ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান স্যামসাং এবং সৌদি কোম্পানি আরামকোকে বিগত সরকার বিমানবন্দর থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছিলো বলে অভিযোগ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেছেন, দেশের জন্য বাণিজ্য একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ খাত। তবে অতীতে ভুল নীতির কারণে অনেক বিনিয়োগকারী চলে গেছেন। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, সৌদি আরবের আরামকো, দক্ষিণ কোরিয়ার সামসাং কোম্পানি। সেটা ছিল ভুল নীতি। এখন এসব শুধরে নিতে হবে।
রবিবার (৫ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ‘সৌদি-বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি : প্রবণতা, মূল চ্যালেঞ্জ এবং দীর্ঘমেয়াদী সম্ভাবনা’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় এ তথ্য দেন উপদেষ্টা। এসময় বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদির বিদায়ী রাষ্ট্রদূত ইসা ইউসুফ ইসা আল দুহাইলান, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন, পররাষ্ট্রসচিব (পূর্ব) মো. নজরুল ইসলাম এবং পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পররাষ্ট্রসচিব রাষ্ট্রদূত এম জসীম উদ্দিন।
বক্তব্যে বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার কথা তুলে ধরেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদির বিদায়ী রাষ্ট্রদূত ইসা ইউসুফ ইসা আল দুহাইলান। জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, অতীতে বিদেশি বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিয়ে সমালোচনা ছিল। বর্তমান সরকার বিনিয়োগবান্ধব। আমি বিদেশি বিনিয়োকারীদের নিশ্চয়তা দিতে চাই, বিনিয়োগকারীদের এখন আর আগের মতো পরিস্থিতিতে পড়তে হবে না। আমরা বিদেশি বিনিয়োকারীদের স্বাগত জানাতে চাই।
দেশে-বিদেশে দক্ষ কর্মীর প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে তিনি আরো বলেন, আমাদের দক্ষ কর্মীর অভাব। এটা শুধু যে সৌদি আরবের জন্য বিষয়টি এমন নয়, সারা বিশ্বে দক্ষ কর্মীর যে চাহিদা সেই অনুযায়ী দক্ষ কর্মী আমরা তৈরি করতে পারছি না। আমরা যত বেশি দক্ষকর্মী তৈরি করতে পারব তারা তত বেশি দেশের জন্য অবদান রাখতে পারবে। দক্ষ কর্মী তৈরিতে আমাদের দক্ষতার ভিত্তিতে উন্নতি এবং প্রশিক্ষণ দরকার।
অপরদিকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের বহুমাত্রিক সম্পর্ক। আমাদের জন্য ব্যবসা-বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক বিবেচনায় সৌদির গুরত্ব অনেক। অনেক দেশ আমাদের মুক্ত বাণিজ্য করার কথা বলছে। আমরা মুক্ত বাণিজ্য করার জন্য প্রস্তুত হচ্ছি। বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। সরকারের একার পক্ষে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বেসরকারি খাতের সহায়তা দরকার।
শেয়ার মার্কেটের সমালোচনা করে তিনি আরো বলেন, শেয়ার মার্কেটে অনেক কোম্পানি বিনিয়োগ করছেন। তবে দেখছি, কিছু কোম্পানির ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়ে গেলেও তাদের শেয়ারের দাম বাড়ছে। এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে।
এসময় সংস্কারের লক্ষ্যে এক থেকে অন্তর্বর্তী সরকার দেড় বছরের বেশি থাকবে না বলেও জানান উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, কিছু ভালো কাজের উদাহরণ রেখে যেতে চাই। আমরা একটি মেঠোপথ রেখে যাবো, অন্যরা যেন সে পথে এগিয়ে যেতে পারেন।