এবার ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে যুক্ত করা হবে সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের। সব মন্ত্রণালয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের কাজে সহযোগিতা করতে তাদের ‘সহকারী উপদেষ্টা’ হিসেবে সম্পৃক্ত করা হবে। তবে কীভাবে শিক্ষার্থীদের এই কাজে সম্পৃক্ত করা হবে, সেই কাঠামো কী হবে, সেটি পরে ঠিক করা হবে।
শুক্রবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের প্রথম অনানুষ্ঠানিক বৈঠক শেষে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
এ নিয়ে অন্তবর্তীকালীন সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, প্রক্রিয়াটি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু প্রাথমিকভাবে একটি সিদ্ধান্ত আগেও ছিল; সেটি হলো ‘সহকারী উপদেষ্টা’ বা এ রকমভাবে কোনো পদায়ন করে মন্ত্রণালয়ে ছাত্রদের তদারকির সুযোগ থাকা; সেই ব্যবস্থাটি থাকবে।
তিনি আরও বলেন, উপদেষ্টা পরিষদে দক্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের মনোনীত করা হয়েছে। একই সঙ্গে পর্যবেক্ষণ ও তদারকির জন্য এবং ছাত্রদের কণ্ঠ থাকার জন্য দুজন ছাত্র প্রতিনিধিও এই উপদেষ্টা পরিষদে রয়েছে। এর পাশাপাশি সামনের দিনে ছাত্র প্রতিনিধিরা অন্য উপদেষ্টাদের সঙ্গে সহকারী হিসেবে কাজ করার সুযোগ পাবেন।
এসময় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানিয়েছেন, ব্যবসায়ীদের উজ্জীবিত করা, যত দ্রুত সম্ভব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া, বাজার নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপসহ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
তিনি বলেন, ‘বৈঠকে অর্থের বিষয়ে কথা হয়েছে। আর্থিক খাতগুলো শুধু চালু করলেই হবে না, সক্রিয় করতে হবে। সেখানে নেতৃত্বের স্থানে পরিবর্তন আনার প্রয়োজন যেগুলোতে আছে, অনতিবিলম্বে সেসব পরিবর্তন আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
তিনি আরো বলেছেন, সব সেক্টরের রিফর্ম (সংস্কার) নিয়ে আমরা কথা বলেছি। এভাবে চলে না, চলতে পারে না, সিস্টেমটা আমাদের বদলাতে হবে। সেই রিফর্মগুলো একা তো আর করা যাবে না। সমাজের সবার সঙ্গে কথা বলা হবে, সবার সঙ্গে কথা বলে রিফর্ম এজেন্ডা ঠিক করে আমরা আলাপ-আলোচনায় যাবো।’
এ সরকারের মেয়াদ কতদিন হবে বৈঠকে সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মেয়াদের বিষয়ে এখন আলোচনা বা সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব না। আপনি কী রিফর্ম চান সেটা না বুঝে তো আমি মেয়াদের কথা বলতে পারবো না। রিফর্ম যদি আপনারা না চান তাহলে আরেক কথা। কাজেই এখন মেয়াদ মেয়াদ করে অস্থির হওয়ার কিছু নেই।’
রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘আমরা সবাই যাতে দেশে একটা গণতান্ত্রিক যাত্রা শুরু করতে পারি, সেটার প্রস্তুতির জন্যই তো এই অন্তর্বর্তী সরকার। সে প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য যেটুকু সময় দরকার শুধু সেটুকু সময়ই আমরা নেবো। শেষ পর্যন্ত গণতন্ত্রের দিকেই আমাদের যাত্রা করতে হবে।’
