দেশে বর্তমানে মোট জনসংখ্যার চাইতে সক্রিয় সিমের সংখ্যা বেশি। যার পরিমাণ প্রায় ১৮ কোটি ৪৫ লাখ। দেশের সরকারি চাকরিজীবী নিরাপত্তা বাহিনী মন্ত্রী-এমপি এমনকি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ বেসরকারি মোবাইল ফোন অপারেটরের সিম ব্যবহার করে থাকে। এ সকল অপারেটরে সিম ব্যবহার করার কারণে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বেসরকারি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে চলে যায়, আইনগতভাবে তথ্যের নিরাপত্তা দেওয়ার শর্ত থাকলেও এই তথ্যের গোপনেতা রক্ষার নিশ্চয়তা বর্তমান প্রযুক্তির যুগে দেয়া যায় না। তাই রাষ্ট্রের নিরাপত্তার স্বার্থেই রাষ্ট্রীয় বা সরকারি কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গের রাষ্ট্রীয় টেলিকম অপারেটর টেলিটকের সিম ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা উচিত বলে মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
এ নিয়ে গ্রাহক স্বার্থ নিয়ে কাজ করা সংগঠন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, গত ২৯ জুন থেকে গ্রামীণফোনের নতুন সিম বিক্রি করা বন্ধ রয়েছে। গ্রামীণফোনের গ্রাহকসংখ্যা ৮ কোটি ৪০ লাখ। এই হিসেবে তাদের তরঙ্গের ব্যবহার এখন পর্যন্ত খুব একটা বাড়েনি। আবার ফেব্রুয়ারিতে তরঙ্গ বরাদ্দ নিলেও সেই তরঙ্গ এখনো সম্পূর্ণ রোল-আউট করতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। স্বাভাবিকভাবে গ্রাহক সেবা চরমভাবে ব্যাহত হয়েছে। কিন্তু দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানটি সিমের চাহিদা রয়েছে এ কথাও সত্যি। আমরা লক্ষ্য করলাম সরকারি প্রতিষ্ঠানের চাহিদার ভিত্তিতে ৭৮ হাজার সিএম গ্রামীণফোনকে বিক্রয় করার অনুমতি দিয়েছে বিটিআরসি। আমরা মনে করি, রাষ্ট্রের নিরাপত্তার স্বার্থেই রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান টেলিটকের সিম ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক করা উচিত সরকারের। এতে করে টেলিটকের গ্রাহক সংখ্যা বাড়বে আয় বৃদ্ধি হবে এবং সেবার মান ও বৃদ্ধি পাবে। সেই সাথে রাষ্ট্রীয় তথ্য রাষ্ট্রের কাছে আমানত হিসেবে সঞ্চিত থাকবে।
‘ আমরা সরকারের কাছে আহ্বান জানাতে চাই বিশেষ করে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান সরকারি নিরাপত্তায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গের এবং সরকারের উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিবর্গের মুঠোফোন সিম অবশ্যই টেলিটকের হতে হবে’-যোগ করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, টেলিকম সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানে গ্রাহক সংখ্যা আনুপাতিক হারে রবি আজিয়াটার গ্রাহকসংখ্যা ৫ কোটি ৪৮ লাখ, সিমের সংখ্যা ১০ কোটি ২৬ লাখ, বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশন লিমিটেডের গ্রাহকসংখ্যা ৩ কোটি ৮৫ লাখ, সিমের সংখ্যা ৮ কোটি ২৬ লাখ আর টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের গ্রাহকসংখ্যা ৬৭ লাখ এক হাজার, সিমের সংখ্যা ১ কোটি ৩৩ লাখ।