চট্টগ্রামের জামালখান ওয়ার্ড কাউন্সিলর শৈবাল দাসের তুঘলকি কাণ্ডে বৃহস্পতিবার ডিজিটাল ব্লাকআউটে পড়েছিলো জামালখান, রহমতগঞ্জ, দেওয়ান বাজার, খাতুনগঞ্জ, চকবাজার, পূর্ব বাকলিয়া, পশ্চিম বাকলিয়া, মোহড়া, চান্দগাঁও, বহদ্দারহাট, চাক্তাই, বোয়ালখালী, কর্ণফুলী ও পটিয়া অঞ্চলের ইন্টারনেটে যুক্ত নগরবাসী। ব্যাংক, স্কুল ও অফিস-বাড়ি মিলিয়ে ওই এলাকার সাড়ে ৫ হাজার ব্রডব্যান্ড সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে মুহূর্তেই। ফেসবুক লাইভে রাস্তার ওপরের তার কাটার নামে অনেকটাই ত্রাসের রাজম্বে পরিণত হয়েছিলো ওই এলাকা। সংযোগ পুণঃস্থাপনে গিয়ে বাধার মুখে পড়েন ইন্টারনেট সেবাদাতাদের টেকনিশিয়ানরা। ফলে সংযোগ পুণঃস্থাপন কার্যক্রম সাময়িক স্থগিত করে আইএসপিএবি। এতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে নগর জীবন।
এহেন নাজুক পরিস্থিতি সামাল দিতে রাতেই আইএসপিএবি’র নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন চসিক মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী। রাত ৮টায় মেয়র ভবনে বৈঠকে মেয়র কাউন্সিলরের কাণ্ডে ব্রিবত বোধ হয়ে দুঃখ প্রকাশ করে আর তার না কাটার প্রতিশ্রুতি দেন। বৈঠক শেষে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের সহসভাপতি আনোয়ারুল আজিম ও সংস্থাটির চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিটির আহ্বায়ক রাজিব শাহরিয়ার রুবেন্স মধ্যরাতেই সংযোগ পুণঃস্থাপনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। ধীরে ধীরে ফিরতে শুরু করে ইন্টারনেট সংযোগ।
ফেসবুক লাইভে বিচ্ছিন্ন সংযোগ: চট্টগ্রামের জামালখানে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ
বৈঠকে অংশগ্রহণকারী রাজিব শাহরিয়ার রুবেন্স জানান, ২৫ বছর ধরে যে ক্যাবল পিলারে পিলারে টানা হয়েছে সেটি রাতারাতি পরিষ্কার করা সম্ভব না, এই বাস্তবতাটা মেয়র মহোদয় সেটা বুঝতে পেরেছেন এবং উনি ফাইবার ক্যাবলের সব সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। ফলে কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনা করেই তাৎক্ষণিক ২১নং জামালখান ওয়ার্ডে ইন্টারনেট সংযোগ সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম পুনরায় শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়া হয়।
শুক্রবার শেষ খবর পর্যন্ত ৬০ শতাংশ সংযোগ পুণঃ স্থাপনের কাজ সম্পন্নের কথা নিশ্চিত করেছেন আইএসপিএবি সাধারণ সম্পাদক নাজমুল করিম ভূঁইয়া। আগামীকাল শনিবার বাকি ৪০ শতাংশও শেষ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
তিনি বলেন, সৌন্দর্যহানী ও অগ্নি ঝুঁকির কথা বলে বিনা নোটিশে ফেসবুক লাইভে ফিল্মি কায়দায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় নির্বিচারে ক্যাবল কাটায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৪ লক্ষাধিক গ্রাহক। ব্যাংক-বীমা আর্থিক প্রতিষ্ঠান ছাড়াও এই ক্যাবলের মাধ্যমে সম্প্রচারিত মিডিয়াগুলোও সাড়ে ৭ ঘণ্টা পর্যন্ত বিকল ছিলো। এতে গ্রাহক পর্যায়ে ২ কোটি টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে। আমাদের ব্যবসায়ী ভাইদের আবার নতুন লাইন স্থাপনে বাড়তি ক্যাবলসহ আনুষঙ্গিক ব্যয় করতে হচ্ছে। এতে তাদের নিট ক্ষতি হয়েছে ৩০-৪০ লাখ টাকা। এমন পরিস্থিতির অবসান হওয়া দরকার।