বিজ্ঞান কেবল উপভোগের নয়। নয় শুধুই মজা করার অনুষঙ্গ। তাই বিজ্ঞানী হতে হবে মানব কল্যাণে- এমন মন্ত্রে ‘বিজ্ঞানে বিকাশ’ স্লোগানে দেশের সাতটি বিভাগীয় শহরে বসছে খুদে বিজ্ঞানীদের উৎসব।
ঢাকার পর শনিবার চট্টগ্রামের আইস ফ্যাক্টরি রোডের প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (পিটিআই) স্কুলের মাঠে অনুষ্ঠিত হলো বিজ্ঞান উৎসবের দ্বিতীয় উৎসব। পরিবেশ বান্ধব ও মানব হিতৈষী উদ্ভাবনের প্রত্যয়ে এই উৎসবে সাত সকালে জড় হয়েছিলো ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণিপড়ুয়া অন্তত ৪০০ শিক্ষার্থী।
বিজ্ঞান প্রজেক্ট ও কুইজ প্রতিযোগিতা—দুই ক্যাটাগরিতে নিজেদের প্রকল্প নিয়ে হাজির হয়েছিলো খুদে বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞান ম্যাজিক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, প্রশ্নোত্তর পর্বসহ আরও অনেক মজার আয়োজনে দিনভর ব্যস্ত সময় পার করেছে তারা।
সকালে জাতীয় পতাকা ও উৎসবের পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত এবং শান্তির পায়রা উড়িয়ে বিজ্ঞান মেলার উদ্বোধন করেন ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গৌতম বুদ্ধ দাশ।
দৈনিক প্রথম আলো পরিবারের বিজ্ঞান চিন্তা সময়িকীর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিকাশের ইভিপি ও হেড অব রেগুলেটরি অ্যান্ড করপোরেট অ্যাফেয়ার্স কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক বিশ্বজিৎ চৌধুরী, চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মুস্তফা কামরুল আখতার।
আরও উপস্থিত ছিলেন বিকাশের রেগুলেটরি অ্যান্ড করপোরেট অ্যাফেয়ার্সের অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার মাহবুবুর রহমান ও বিজ্ঞানচিন্তার নির্বাহী সম্পাদক আবুল বাসার।
প্রথম আলো বন্ধুসভা চট্টগ্রামের উপদেষ্টা ফাহিম উদ্দিনের সঞ্চালনায় অভিভাবকদের উদ্দেশে উপাচার্য গৌতম বুদ্ধ দাশ বলেন, সন্তান যেদিকে যেতে চায়, তাকে সেদিকে যেতে দিন। গণিত ভালোবাসলে উৎসাহ দিন। গণিত সব কাজেই লাগে। কম্পিউটার সায়েন্স পড়তে হলে গণিত লাগে। আধুনিক মানুষ হতে গেলে বিজ্ঞান লাগে।
সাহিত্যিক ও সাংবাদিক বিশ্বজিৎ চৌধুরী বলেন, ‘যে শিশুরা বিজ্ঞানমনস্ক হয়ে বড় হবে, সে কখনো ধ্বংসাত্মক পৃথিবী মেনে নেবে না। বিজ্ঞান আমাদের প্রাণ বাঁচায়, আমাদের স্বপ্ন দেখায়। তাই বিজ্ঞানমনস্ক হয়ে বড় হতে হবে। বিজ্ঞান আধুনিক করে তুলবে। ভাবতে শেখাবে।’
চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামরুল বলেন, ‘বিজ্ঞান আমাদের অনেক দূর এগিয়ে নিয়েছে। একটা ছুরিও বিজ্ঞানের আবিষ্কার। সেই ছুরি দিয়ে সার্জারি করে প্রাণ বাঁচানো যায়। আবার প্রাণ নেওয়া যায়। ফলে বিজ্ঞানকে কল্যাণের কাজে ব্যবহার করতে হবে।’
বিকাশের কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বলেন,দেশের প্রকৌশলীরা বিকাশ অ্যাপের অনেকগুলো ভার্সন তৈরি করেছে। তাদের হাত ধরেই বিকাশ এখন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় আর্থিক সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি। আন্তর্জাতিক বড় বড় প্রতিষ্ঠান বিকাশে বিনিয়োগ করেছে। শিশুদের উদ্দেশ্যে তিনি আরো বলেন, বিজ্ঞানের কারণে আমরা গ্লোবাল সিটিজেন। বিজ্ঞানের কারণে পৃথিবী হাতের মুঠোয়। মোবাইল দিয়ে যেকোনো জিনিস তোমরা পড়তে পারো। শিখতে পারো। আর তোমরাই একদিন এ রকম নতুন নতুন উদ্ভাবনের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নেবে।