ডিজিটাল প্রযুক্তি শহর-গ্রাম এবং ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান দূর করে সাম্যাবস্থা তৈরি করে উল্লেখ করে মোবাইল নেটওয়ার্ক মার্কেটে বাংলালিংক প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ সৃষ্টি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি বলেছেন, প্রযুক্তির মাধ্যমে মধ্যসত্বভোগীদের দূর করে গণতান্ত্রিক বৈষম্যমুক্ত সমাজ গঠন করতে সক্ষম হয়েছে আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশ।
ফেসবুকে নিজের ২৭ লাখ ফ্যান রয়েছে জানিয়ে পলক বলেন, ‘আমরা যদিও পলিটিক্যাল ওয়ার্কার; তারপরেও আমরা এক অর্থে কন্টেন্ট ক্রিয়েটর। আমরা প্রতিনিয়ত কন্টেন্ট ক্রিয়েট করছি। বিভিন্ন বিষয়ে বক্তব্য দিচ্ছি। ফলে মটিভেশনাল বক্তব্যও এখন দেশে জনপ্রিয় কন্টেন্ট হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রীর আইসিট উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ ডিজিটাল অবকাঠামো তৈরি করে দেয়ার ফলেই আজ সৃজনশলী ও মেধাবীদের জন্য এই সুযোগটা তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী।
আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশে যতকিছু ডার্টি বা সৃজশীল কাজ তা রোবট বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স দিয়ে করবে। আর যতকিছু সৃজনশীল কাজ আমাদের মানুষকেই করতে হবে। তাই সৃজনশীল কাজের যথাযথ মূল্যায়ন আমাদের কাম্য।
বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর সোনরগাঁও হোটেলে বাংলায় বিনোদনের ইউজিসি প্লাটফর্ম টফি কন এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘গত প্রায় ২০ মাস ধরে টফি গুগল প্লে স্টোরে জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে। তাই আজকের এই সাফল্যের জন্য ডিজিটাল বাংলাদেশের আর্কিটেক্ট, তারুণ্যের গর্ব জয় ভাইয়ের প্রতি ধন্যবদা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে চাই।’
পলক আরো বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি যদি আমরা সরকার এবং বেসরকারি খাত গত ১৩ বছর ধরে যেভাবে একসাথে কাজ করে জনাব সজীব ওয়াজেদ জয় ভাইয়ের ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করেছি; একই রকমভাবে আমাদের সামনে ১৮ বছর সময় আছে; মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যে টেকসই, সাশ্রয়ী, জ্ঞানভিত্তিক, উদ্ভাবনী স্মার্ট বাংলাদেশ এর যে ভিশন ২০৪১ দিয়েছেন, সেখানেও কিন্তু আমরা একটা আত্মনির্ভরশীল স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে পারবো। সেইদিন বেশি দূরে নয়; যেদিন বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে যেই টেলিভিশন আছে সেগুলো স্মার্ট ইন্টারনেট কানেক্টেড স্মার্ট টিভিতেত কনভার্ট হয়ে যাবে।’
নিজেও বাংলালিংক এর টফিতে একাউন্ট খুলেছেন জানিয়ে এসময় এই অ্যাকাউন্ট থেকে অর্জিত অর্থ মেধাবী ও সৃজনশীল অস্বচ্ছল কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের কল্যাণে ব্যয় করার পাশাপাশি ফেসবুক, ইউটিউবে থাকে নিজস্ব কন্টেন্টগুলো বাংলালিংককে টফিতে ব্যবহারের অনুমতি দেন জুনাইদ আহমেদ পলক। টফি শুধু বিনোদন নির্ভর কন্টেন্টের প্লাটফর্ম হবে না প্রত্যাশা করে তিনি বলেন, আমি সবসময় প্রোমোট করছি এ্যডুট্রেইনমেন্টকে। কীভাবে এড্যুকেশন, ট্রেইনিং এবং এন্টারটেইনমেন্টকে এক সাথে করে কন্টেন্ট তৈরি করতে পারি সে দিকে গুরুত্ব দিতে হবে।
বাংলালিংক চিফ কর্পোরেট অ্যন্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমানের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় চলচ্চিত্র বিজয়ী খ্যাতিমান অভিনেতা তারিক আনাম খান, বিকাশ এর চিফ কমার্সিয়াল অফিসার আলী আহম্মেদ, নগদ প্রতিষ্ঠাতা ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক এবং বাংলালিংক এর চিফ কমার্সিয়াল অফিসার উপাঙ্গ দত্ত।
তারিক আনাম খান বলেন, নেশা থেকে পেশাকে উজ্জীবিত করতে টফি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এটা বাংলা বিনোদন কন্টেন্টের মাধ্যমে পেশাদারিত্বকে নিশ্চিত করতে পারবে। সৃশনশীল ক্রিয়েটরদের যথাযথ মূল্যায়নে এই খাতটিও সমৃদ্ধ হবে।
একটি প্লাটফর্ম মানুষের জীবনকে বদলে দিতে পারে উল্লেখ করে তানভীর এ মিশুক বলেন, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কিংবা ইউটিউব-ফেসবুক থেকে আয় দেশে আনার ক্ষেত্রে যে বাধা রয়েছে বা দেশের টাকা বাইরে পাচার হয়ে যাচ্ছে তার অবসান ঘটাবে। টফি’র মাধ্যমে দেশের টাকা দেশেই রাখা সম্ভব হবে।
এছাড়াও বিলিয়ন ডলারের বাজারের এক শতাংশও নিজেদের করতে পারলে ‘টফি’ দেশের ট্যালেন্টদের জন্য একটি নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে বলে মন্তব্য করেন বিকাশ এর চিফ কমার্সিয়াল অফিসার আলী আহম্মেদ।
অনুষ্ঠানে টফি স্টার সার্চ মহিমা দেব ত্রয়ী, রানার্স আপ কৃষাণ দে ও সাদমান খান এবং অপর বিজয়ী হুমায়রা হোসেন টুকটুকি ও পুষ্প ফেরদৌস হাতে সনদ তুলে দেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী।