আগামী ৩ বছরের মধ্যে ই-কমার্স ব্যবসায় খাতের প্রবৃদ্ধি হবে ১০-১৫ শতাংশ। আর এজন্য ক্রসবর্ডার নীতি সহায়তার পাশাপাশি অন্তত ৫ বছর মেয়াদী ডিজিটাল কৌশলপত্র প্রত্যাশা করছেন এই খাতের ব্যবসায়ীরা। একইভাবে ভোক্তার আস্থা অর্জন এবং পণ্য ও সেবার পরিসর বাড়ানো ও বৈচিত্র্যময়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন বাজার বিশ্লেষকরা। এছাড়াও উপমহদেশীয় ই-কমার্সের সংস্কৃতি সহ ওপেন ডিজিটাল কমার্স, ই-কমার্সের স্থানীয় ও ক্রস বর্ডার লজিস্টিক সমাধান, ই-কমার্সের চ্যাট জিপির প্রয়োগ এবং বাংলাদেশে এফ-কমার্সের প্রসারের বিষয়টিও উঠে এসেছে গুরুত্বের সঙ্গে।
বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের আয়োজনে রোববার (২৮ মে) রাজধানীর রেডিসন ব্লু ঢাকা ওয়াটার গার্ডেন হোটেলে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় বাংলাদেশ ই-কমার্স সামিটের বিভিন্ন সেমিনার ও প্যানেল আলোচানায় এমন অভিব্যক্তি তুলে ধরেন বক্তরা। দিনব্যাপী সম্মেলনে ৪টি কিনোট, ৩টি প্যানে আলোচনা, ২টি ইনসাইট সেশন, ২টি কেস স্টাডি এবং ১টি পলিসি ডায়লগ অনুষ্ঠিত হয়। সোমিনারগুলোতের আধুনিক যুগের জন্য ই-কমার্সকে নতুনভাবে গড়ে তোলার মূলমন্ত্র নিয়েই আলোচনা আবর্তিত হয়।
ই-কমার্স ব্যবসায় চ্যাট এ আই ও গুগল’র নতুন নতুন সেবা ও প্রযুক্তির ব্যবহার, জালিয়াতি নিরাপত্তা, ভোক্তা পুনরাবৃত্তি, লজিস্টিক ম্যানেজমেন্ট, পেমেন্টসহ ই-কমার্স সম্পৃক্ত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয় প্রতিটি সেশনেই।
দিনব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন করেন ই-কমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি শমী কায়সার। বক্তব্যে বাংলাদেশের ই-কমার্স খাতের প্রবৃদ্ধি সহ বাংলাদেশ ই-কমার্স সামিট আয়োজনটির প্রাসঙ্গিকতা ও প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন তিনি।
এছাড়াও আয়োজন পৃষ্ঠপোষক হিসেবে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন দারাজ বাংলাদেশের চিফ মার্কেটিং অফিসার তালাত রহিম, মাস্টারকার্ড বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল এবং চায়না কাউন্সিল ফর দ্য প্রমোশন অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডের (সিসিপিআইটি) এসিস্টেন্ট রিসার্চার চোংয়া ওয়াং।
স্বাগত বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরিফুল ইসলাম বলেন,”ই-কমার্স একটি দ্রুত অগ্রগতিশীল খাত। প্রতি বছরই আমরা এই খাতে অনেক আধুনিক উদ্ভাবন ও অনুশীলন লক্ষ্য করেছি। তাই, এসকল পরিবর্তনগুলির যথাযথভাবে বাস্তবায়ন সম্পর্কে আলোচনা করা আমাদের দায়িত্ব। এই সম্মেলনটি ই-কমার্স খাতকে অভিনব যাবতীয় পরিবর্তনের সাথে সমন্বয় ঘটিয়ে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
ই-কমার্স খাতে অপেক্ষমান অমিত সম্ভানা এবং তা উন্মোচনে পথরেখা নিয়ে প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন চালডাল সহ-প্রতিষ্ঠাতা ওয়াসিম আলিম, দারাজ বাংলাদেশের চিফ অপারেটিং অফিসার খন্দকার তাসফিন আলম, এটুআই হেড অব ই-কমার্স রেজওয়ানুল হক জামি এবং সেবা প্লাটফর্ম লিমিটেড প্রতিষ্ঠাতা আদনান ইমতিয়াজ হালিম।
চ্যাটজিপিটি’র মাধ্যমে দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ায় ই-কমার্স এর বাড়ন্ত বাজার নিয়ে আলোচনা করেন স্টার্টআপ বিল্ডার রাশেদুন্নবী। দ্বিতীয় প্যানেল আলোচনায় স্থানীয় এবং ক্রসবর্ডার লজিস্টিক সমাধান নিয়ে আলোচনা করেন পেপারফ্লাই প্রতিষ্ঠাতা শাহরিয়ার হাসান, ই-কুরিয়ার প্রতিষ্ঠাতা বিপ্লব জি রাহুল, সেলেক্সট্রা সহ-প্রতিষ্ঠাতা সাকিব আরাফাত এবং প্রাণগ্রুপের ই-কমার্স অথবা’র বিজনেস হেড ইব্রাহিম স্বপন। সঞ্চালক ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফ বিন তাজ।
এরপরই গুগল এর মাধ্যমে ব্যবসায় প্রসারের কৌশল তুলে ধরেন রেককিট এর প্রাক্তন গ্লোবাল মার্কেটিং ডিরেক্টর জাকারিয়া বেগ।
ইউনিলিভার বাংলাদেশের ভোক্তা বিপনন পরিচালক সামি আশরাফ এর সঞ্চালনায় সরাসরি ভোক্তার সঙ্গে ব্যবসায়ের মৌলিক বিষয়ের ওপর আলোকপাত করে প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন বার্জার পেইন্ট বাংলাদেশের প্রধান বিপনন কর্মকর্তা তানজিন ফেরদৌস আলম, নেসলে বাংলাদেশের ব্যবস্থাপক সিফাত ই জামালি, আরং এর জেনারেল ম্যানেজার তানভীর হোসাইন।
ই-কমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, এসপায়ার টু ইনোভেট এবং মাস্টারকার্ড, দ্য ডেইলি স্টার ও উইমেন এন্ড ই-কমার্স এর যৌথ সঞ্চালনায় দিনব্যাপী এই আয়োজনে দেশ এবং বিদেশের ই-কমার্স খাতে কর্মরত বিশেষজ্ঞ, সিদ্ধান্ত প্রণেতা এবং চিন্তাবিদেরা অংশগ্রহণ করেন। আয়োজন বাস্তবায়ন করে ব্র্যান্ড ফোরাম বাংলাদেশ।