চলতি বছরের প্রথম চার মাসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের গ্রাহক কমেছে ৮২ লাখ ৪২ হাজার। গত বছরের ডিসম্বরের চেয়ে শতকরা ২৮ দশমিক ৩৪ শতাংশ কমে এপ্রিলে এসে গ্রাহক দাঁড়িয়েছে দুই কোটি ৯১ লাখে। তবে গ্রাহক কমলেও কমেনি লেনদেন। গত এপ্রিলে মোবাইল ব্যাংকিং এর লেন-দেন হয়েছে প্রায় ৩৪ হাজার কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত প্রতি মাসেই টানা মোবাইল ফাইন্স্যাসিয়াল সেবা ব্যবহারকারীর সংখ্যা কমেছে। চলতি বছরের শুরুতে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের কার্যকর অ্যাকাউন্ট ছিল তিন কোটি ৭৩ লাখ।
জানুয়ারি শেষের হিসাব অনুযায়ী, দেশে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস) বা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নিবন্ধিত গ্রাহক সংখ্যা ছিলো ৬ কোটি ৭২ লাখ ৮৮ হাজার। যা আগের মাসে (ডিসেম্বর) ছিল ৬ কোটি ৭৫ লাখ ১৯ হাজার। অর্থাৎ এই এক মাসে গ্রাহক কমে ২ লাখ ৩১ হাজার।
তবে ডিসেম্বরে সর্বোচ্চ কার্যকর অ্যাকাউন্ট নিয়েও ওই মাসে যেখানে মোট ৩২ হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল, সেখানে এপ্রিলে হয়েছে প্রায় ৩৪ হাজার কোটি টাকা।
সূত্রমতে, প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে গত বছর থেকে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে এক্সিম ব্যাংক ও আইএফআইসি ব্যাংক। তবে এই সেবায় নতুন করে যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ ডাকঘরের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা ‘নগদ’।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, সুবিধাবঞ্চিতদের ব্যাংকিং সেবার আওতায় আনতে ২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং চালুর অনুমতি দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পরের বছর পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা করে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু হয়। ১৯৯৯ সালে ইউরোপিয়ান ব্যাংকে সর্বপ্রথম মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু হয়। মূলত, স্মার্টফোন উদ্ভাবনের পর মোবাইল ওয়াপ (ওয়্যারলেস অ্যাপ্লিকেশন প্রটোকল) পদ্ধতির মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিং শুরু হয়।
পৃথিবীর অন্যান্য দেশে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা মোবাইল অপারেটরভিত্তিক হলেও বাংলাদেশে এ সেবা ব্যাংকভিত্তিক। ব্যাংকগুলো বিভিন্ন মোবাইল ফোন অপারেটরের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে এ সেবা দিচ্ছে।
২০১৮ সাল পর্যন্ত মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ২৯টি ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে অনুমোদন নিয়েছে। যদিও কার্যক্রম পরিচালনা করছে মূলত ১৮টি ব্যাংক।