এক কোটি ২০ লাখ মানুষের ভার্চুয়াল অংশগ্রহণে শনিবার শেষ হলো দ্বিতীয় ডিজিটাল ডিভাইস অ্যান্ড ইনোভেশন এক্সপো। এরমধ্যে ২১৭টি প্রতিষ্ঠানের ভার্চুয়াল প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করেছেন ২ লাখ ৭৬ হাজার দর্শনার্থী। তিনদিনের এই ভার্চুয়াল মেলায় ১০টি সেমিনার, ৪টি কর্মশালা এবং চারটি ফোকাস গ্রুপের সভায় ব্যক্ত হয়েছে ডিজিটাল ডিভাইস তৈরি ও উদ্ভাবনে দেশকে বিশ্বে নেতৃত্বস্থানীয় অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়। এজন্য নীতি সহায়তা ও বিনিয়োগ আকর্ষণের পাশাপাশি মেধাসম্পদের উন্নয়ন ও অধিকার সংরক্ষণের বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে সবার ওপরে।
সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে করোনাকালীন সময়ে দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় ডিজিটাল ডিভাইস অন্যতম ভূমিকা রেখেছে এবং এর প্রতি দেশের মানুষের আস্থা বেড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন।
শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন
তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে আমরা কোভিডকালীন প্রত্যেকটি, উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখেছি। মিল, কলকারখানা থেকে শুরু করে, গণমানুষের কাছে তাদের বার্তা পৌঁছে দিয়ে স্বাস্থ্যসম্মত সবকিছুই আমরা তাদেরকে জানিয়ে দিলাম। তারা আশ্বস্ত হলেন। বঙ্গবন্ধুর কন্যার প্রতি তারা নতুন করে আস্থা স্থাপন করলেন। যার জন্য ষড়যন্ত্রকারীরা এখনো কোনো সুযোগ পাচ্ছে না।’
উদ্ভাবনকে এগিয়ে নিতে মেধাস্বত্ত্ব সংরক্ষণে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে বলে পরামর্শ দেন শিল্পমন্ত্রী।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক
করোনা মহামারিতে ডিজিটাল ডিভাইস অ্যান্ড ইনোভেটিভ সল্যুশন এবং পণ্যগুলো শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, বাণিজ্য চলমান রাখতে ভূমিকা পালন করছে বলে জানান আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
করোনাকালীন সময়ে দেশে এসেছে বিদেশি বিনিয়োগ। গত চার পাঁচ বছরে আইটি সেক্টরে দেশ বিনিয়োগের অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে তৈরি হয়েছে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমরা কেবল ৪ থেকে ৫ বছরের মধ্যেই বিশ্বের কাছে কিন্তু আমরা ডিজিটাল ডিভাইস ম্যানুফ্যাকচারিং হাব হিসেবে, বিনিয়োগের স্থান হিসেবে আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত হয়েছি। করোনাকালীন সময়েও গত ১২ মাসে কালিয়াকৈর হাইটেক সিটিতে ৩০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ এসেছে অরিক্স বায়োটেকের পক্ষ থেকে। সিলেটের হাইটেকপার্কে ৩৫ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ এসেছে জাপানের সনি এবং বাংলাদেশের র্যাংগসের জয়েন ভ্যাঞ্চারিং ইনভেস্টমেন্ট থেকে।’
হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সচিব) হোসনে আরা বেগম
করোনাকালে আইটির বিস্তার লাভ করেছে। দক্ষ জনবল তৈরিতে দেওয়া যাচ্ছে ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ। দেশীয় প্রতিষ্ঠান বা দেশে কারখানা স্থাপনকারী বিদেশি প্রতিষ্ঠান দেশের গণ্ডি পেড়িয়ে বাইরে পণ্য বিক্রি করছে। ফলে দেশের মানুষ গর্ব করে বলতে পারছে মেইড ইন বাংলাদেশ, মেক হেয়ার, সেল এভরিহোয়ার। এমন মন্তব্য করেন বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সচিব) হোসনে আরা বেগম।
বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির মহাসচিব মনিরুল ইসলাম
স্বাগত বক্তব্যে বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির মহাসচিব মনিরুল ইসলাম জানান, এই এক্সপো সরকার-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, উদ্যোক্তাদের ও বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সেতু বন্ধন তৈরি করেছে।
তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য ডিজিটাল ডিভাইস এবং ইনোভেশন এক্সপো একটি মাইলফলক। এই এক্সপোর মাধ্যমে সরকার-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, উদ্যোক্তা ও বি্নিয়োগ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সেতু বন্ধন তৈরি হয়েছে। এই সম্পর্কের মাধ্যমে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। তরুণরা উনুপ্রাণিত হয়েছে।’
তথ্যপ্রযুুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ডা. বিকর্ণ কুমার ঘোষ
ডিজিটাল ডিভাইস অ্যান্ড ইনোভেশন এক্সপো ফিজিক্যালি হওয়ার কথা থাকলেও করোনার কারণে এই আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়েছে ভার্চুয়ালি। ফলে এবারের এক্সপোতে অসংখ্য মানুষ অংশ নিতে সক্ষম হয়েছেন বলে জানান তথ্যপ্রযুুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ডা. বিকর্ণ কুমার ঘোষ।