প্রযুক্তি খাতে গবেষণা ও উন্নয়নের জন্য গাজীপুরের কালিয়াকৈর হাইটেক পার্কে ১২ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করছে চীনের কোয়ার্টজ ম্যানুফ্যাকচারিং লিমিটেড। বাংলাদেশের সামিট টেকনোপলিস লিমিটেডের সঙ্গে যৌথ অংশীদারিত্বের ভিত্তিত্বে এই বিনিয়োগ করছে তারা। বাংলাদেশেই গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে যৌথভাবে সার্ভিলেন্স প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদন করতে যাচ্ছে সামিট গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠানটি।
সূত্রমতে, গবেষণার মাধ্যমে হাইটেক পার্কেরপার্কের ২ ও ৫ নম্বর ব্লকে নির্মিত প্লান্টে বায়োমিট্রিক ডিভাইস, সিকিউরিটি সিস্টেম হার্ডওয়্যার, সোলার প্যানেল, আইপিপিবিএক্স অ্যাসেম্বিলিং ও ম্যানুফাকশ্চারিয় হবে। এখানে কর্মসংস্থান হবে ৩০০ জনের। বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি -তে উৎপাদিত পণ্য প্রাথমিকভাবে ভারত, শ্রীলংকা, ভুটান, নেপাল ও মালদ্বিপে রপ্তানী করা হবে এবং পরবর্তীতে আমেরিকা ও আফ্রিকা মহাদেশে রপ্তানী করা হবে বলে জানিয়েছেন কোয়ার্টজ ম্যানুফেকচ্যারিং লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাহেদ আযম।
বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) আইসিটি বিভাগের সম্মেলন কেন্দ্রে উভয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এ বিষয়ে একটি চুক্তি করেছে। সামিট টেকনোপলিশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু রেজা খান এবং কোয়ার্টজ্ ম্যানুফ্যাকচারিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জায়েদ আজম আইপি ফোন, বায়ো-মেট্রিক ডিভাইস, সিকিউরিটি সিস্টেম হার্ডওয়্যার, সোলার প্যানেল এবং আইপি পিবিএক্স এর সংযোজন এবং উৎপাদন প্ল্যান্টে বিনিয়োগের জন্য রেডি-স্পেস বরাদ্দ চুক্তি সই করেন।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম এসময় উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে জুনাইদ আহমেদ পলক জানান, ইতিমধ্যেই হাইটেক পার্কে ৮০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ প্রস্তাব পেয়েছে।
তিনি বলেন, দেশে মেধার কোনো ঘাটতি নেই। এখন ক্ষেত্র তৈরি করলেই যথেষ্ট। সেই কাজটিই হাইটেক পার্ক করছে। কিন্তু একসময় অনেকেই কালিয়াকৈর হাইটেক পার্ককে জুরাসিক পার্ক হিসেবে ব্যঙ্গ করতো। আর কোয়ার্টজ আজ ১২ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে তাদের মুখে জবাব দিয়ে দিয়েছে। পাশাপাশি তারা এখানে গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগ প্রতিষ্ঠা করায় বাংলাদেশে বিশ্বের কাছে একটি অন্যতম গবেষণা ও উন্নয়ন হাব হিসেবে পরিচয় লাভ করবে।
পলক বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ধাক্কা সামলাতে হলে আমাদেরকে এখনই উচ্চতর প্রযুক্তির দিকে নজর দিতে হবে। বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি -তে এখন বিনিয়োগের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে। আশা করছি থাইল্যান্ড ও চীনের মতো ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ম্যানুফ্যাকচারিং হাবের পাশাপাশি গবেষণা উন্নয়নের হাব হবে।
বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সচিব) হোসনে আরা বেগম এনডিসি সভাপতির বক্তব্যে বলেন, বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটিতে ইতোমধ্যে প্রায় ৮২২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাবনা পাওয়া গিয়েছে যার মাধ্যমে প্রায় ৩৮ হাজার জনের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে আমরা আশাবাদী। আমরা বিনিয়োগকারীদের জন্য ১৪টি প্রণোদনা সুবিধা দিচ্ছি। এছাড়া বিনিয়োগকারীদের সেবা সহজীকরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ অন লাইন ভিত্তিক ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু করা হয়েছে।