গোবর। জমির উর্বরতায় দশকের পর দশক ব্যবহৃত হয়ে আসছে দেশে দেশে। কিন্তু জৈব এই সারের ব্যবহার কমে আসছে রাসায়নিক সারের আধিপত্যে। একইভাবে লাঙল-জোয়ালের স্থলে দখল করেছে ট্র্যাক্টর।
কৃষিপ্রধান বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে বেশ পরিচিত একটি নাম। চাষাবাদসহ বিভিন্ন কাজে ট্রাক্টর ব্যবহার করা হয়। চাষের জমি প্রস্তুত করতে এখন ট্রাক্টরই অনেকের ভরসা।
এবার এই ট্র্যাক্টর চালাতে তেলের বদলে গোবর ব্যবহারের প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে যুক্তরাজ্যের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান।
কৃষি শিল্পপ্রতিষ্ঠান সিএনএইচএ এর সঙ্গে যৌথ অংশীদারিত্বে গোবর থেকে সৃষ্ট মিথেন গ্যাসের মাধ্যমে সবুজ শক্তিতে চালিত বিশেষায়িত একটি ট্র্যাক্টরও এরইমধ্যে তৈরি করেছে ফেলেছে বেন্নামান নামের ওই গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি। ট্র্যাক্টরির নাম দেয়া হয়েছে নিউ হল্যান্ড টিসেভেন (৭)। পরীক্ষামূলক চালনায় দেখা গেছে, ৭২০ হর্স পাওয়ারের এই ট্র্যাক্টরটি যে কোনো ডিজেল চালিত ট্র্যাক্টরের সমকক্ষ।
ট্রাক্টরটির পেছনে রয়েছে একটি ‘ক্রায়োজেনিক ট্যাঙ্ক’। সেই ট্যাঙ্কে মিথেন গ্যাস শীতল করে হিমাঙ্কের ১৬২ ডিগ্রি নিচে তরল মিথেন গ্যাসে পরিণত করা হয়। তরল মিথেনের দহনের মাধ্যমেই শক্তি উৎপন্ন হবে। ডিজেলে যে পরিমাণ শক্তি উৎপাদিত হয়, মিথেন গ্যাস থেকেও একই পরিমাণ শক্তি উৎপাদিত হয়।
গবেষকদের দাবি, এটিই বিশ্বের প্রথম গোবর-চালিত ট্রাক্টর। জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমাবে এবং পরিবেশ রক্ষায় ভূমিকা রাখবে ট্রাক্টরটি। যে সময় পরিবেশ দূষণ কমাতে বিশ্বে শুরু হয়েছে নানান উদ্যোগ, তখন এই ট্রাক্টর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে জানিয়েছে গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি।
ট্রাক্টরটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বেন্নামান সহ-প্রতিষ্ঠাতা ক্রিস ম্যান জানিয়েছেন, টানা ১০ বছরের গবেষণা ফসল এই ট্র্যাক্টরটি। উদ্ভাবনের পর কর্নওয়ালের একটি ফার্মে তারা পরীক্ষামূলক পর্যবেক্ষণে দেখেছেন, মাত্র এক বছরে টি সেভেন ট্র্যাক্টর কার্বনডাই অক্সাইড নিঃসরণ ২,৫০০ থেকে ৫০০ টনে নামিয়ে এনেছিলো।
তার দাবি, কৃষিক্ষেত্রকে কার্বনমুক্ত করতে বড় পদক্ষেপ হতে পারে এই গবেষণা। কৃষি পেশার সাথে জড়িত অনেকেই গরু পালন করেন। গোবরের অনেক ধরনের ব্যবহার রয়েছে। সেই পদ্ধতিকেই আধুনিক রূপ দিতে চেষ্টা করছে তারা।