আজ মঙ্গলবার থেকে ফ্রান্স ও স্পেন -এ শুরু হলো ফেসবুকের ‘ভার্চুয়াল জগত‘- ’ফেসবুক হরাইজন’। এই সেবার মাধ্যমে ঘরে বসে ভার্চুয়াল অফিস এর কাজ হবে আরও বেশি বাস্তব। বাসায় বসেই সামনে দেখতে পাবেন অফিসের ডেস্ক, কম্পিউটার। সামনাসামনি বসে চলবে আড্ডা; ভার্চুয়ালি-মিটিং হবে অফিসের কলিগদের সাথে।
ফ্রান্স এবং স্পেনে পরীক্ষামূলক যাত্রা শেষে বিশ্বের অন্যান্য দেশেও চালু হবে। অবশ্য এরইমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং যুক্তরাজ্যে ‘মেটাভার্স’ দুনিয়া গড়তে শুরু করেছিলে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।
এক ফেসবুক পোস্টে সোশ্যাল জায়ন্টটির প্রধান নির্বাহী মার্ক জুকারবার্গ একটি আবেদনহীন ছবির সাথে নতুন দুই শহরে তাদের ভার্চুয়াল জগত বিস্তৃতির ঘোষণা দিয়েছেন। উল্লেখ করেছেন, সহসাই আরও কয়েকটি দেশে প্ল্যাটফর্মটি প্রসারিত করার পরিকল্পনার কথা।
গত বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডায় ১৮ বছরের বেশি বয়সী সকল ব্যবহারকারীদের জন্য হরাইজন ওয়ার্ল্ড চালু করে মেটা। জুনে চালু করা হয় যুক্তরাজ্যের ব্যবহারকারীদের জন্য। গত এপ্রিলে মেটা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলো, তারা একটি ওয়েব সংস্করণে কাজ করছে, যাতে লোকেরা একটি ভিআর হেডসেটের মালিকানা ছাড়াই ভার্চুয়াল জগতের অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারেন ব্যবহারকারী।
গত কয়েক মাস ধরে, সুরক্ষা ফিচার হিসেবে হরাইজন ওয়ার্ল্ডস প্ল্যাটফর্মে ভয়েস চ্যাটের জন্য নিয়ন্ত্রণ এবং হরাইজন ওয়ার্ল্ডের চারপাশে অ্যাভাটারের জন্য ৪-ফুট ব্যক্তিগত সীমানা প্রাচীরের ব্যবস্থা করে মেটা।
মূলতঃ প্রচলিত ভিডিও কনফারেন্সিং সফ্টওয়্যারের একটি বিবর্তন ফেসবুক হরাইজন বা ফেসবুক হরাইজন ওয়ার্করুম; যা মানুষকে একটি ভার্চুয়াল জগতে নিয়ে আসে। এই জগতে পৃথিবীর মতোই একটি প্রাকৃতিক পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা করা হয়েছে। ভার্চুয়াল বাস্তবতাকে মাথায় রেখেই এটি ডিজাইন করেছে মেটা। যার অর্থ ওয়ার্করুমের অংশ হিসাবে উপলব্ধ বেশিরভাগ বৈশিষ্ট্য উপভোগ করার জন্য আপনার একটি ভার্চুয়াল রিয়ায়ালিটি (VR) হেডসেট এবং আরও নির্দিষ্টভাবে Oculus Quest 2-এর প্রয়োজন হবে৷ তবে অনেকের কাছেই যে VR হেডসেট নেই। সে জন্যই একটি ওয়েব অ্যাপ চালু করা হয়েছে। এই অ্যাপের মাধ্যমে ওয়ার্করুমের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবেন ব্যবহারকারীরা।
পৃথিবীর মতো নিখুঁত না হলেও এই ভার্চুয়াল ওয়ার্কস্পেসে আপনি দেখতে পাবেন জানলার পাশ দিয়ে মেঘ চলে যাচ্ছে, চিমনি থেকে ধোঁয়া উঠছে, সমুদ্রের ঢেউ, পাহাড়, জঙ্গল, দোকান-পাঠ, অফিস, ক্লাব ইত্যাদি।
এই ওয়ার্করুমে কয়েকটি লেআউট তৈরি করা হয়েছে। যেখানে
একটি বৃত্তাকার টেবিলের চারপাশে প্রত্যেককে বসার জায়গা রয়েছে যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রসারিত বা সঙ্কুচিত হয়। এখানে অফিসের সহকর্মীদের সাথে জরুরি মিটিং করতে পারবেন, প্রেজেন্টশন রাখতে পারবেন এবং আড্ডাও দিতে পারবেন।
এই Facebook Horizon এ প্রত্যেককে দেখা যাবে থ্রি ডি অ্যাভাটার। ব্যবহারকারীর দেহের গঠন এবং পোশাক অনুযায়ী তৈরি হবে এই অ্যাভাটারগুলো। এই থ্রি ডি অ্যাভাটারগুলিতে জীবনের সঞ্চার না হলেও হ্যান্ড-ট্র্যাকিং বৈশিষ্ট্য রয়েছে এতে। এর জন্য প্রয়োজন Oculus Quest 2। এর অর্থ হল আপনি বাস্তব জীবনে আপনার হাত দিয়ে যা কিছু করবেন তা ভার্চুয়াল জগতে ট্র্যাক এবং পুনরুৎপাদন করা হবে। যদিও স্বাভাবিক পৃথিবীতে যেমনটি অনুভূত হয় ঠিক তেমনটা নয়।