‘ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন জনগুরুত্বপূর্ণ আইন’ উল্লেখ করে ‘ডিজিটাল অপপ্রয়োগ রোধে অন্য দেশের সাথে চুক্তিও থাকা প্রয়োজন’ বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলা’র শেষ দিন শনিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন প্রণয়ণ করা হয়েছে। আইন হলে আইন এর অপব্যবহার হবে বিষয়টি মেনেই এগিয়ে যেতে হবে। আইনের অপপ্রয়োগ রোধে সচেতনতা জরুরী। এক্ষেত্রে ডিজিটাল অপপ্রয়োগ রোধে অন্য দেশের সাথে চুক্তিও থাকা প্রয়োজন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিজিডি ই-গভ সিআইআরটির প্রকল্প পরিচালক তারেক এম বরকতউল্লাহ।তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত অর্থনীতিতে প্রবেশ করবে। গেল কয়েক বছর ১৪০০০ বেশি ম্যালওয়ার সক্রমিত আইপি এড্রেস সনাক্ত হয়েছে। এভাবে ম্যালওয়ার দিয়ে রেনস্যামওয়ার হিসেবে হ্যাকাররা ক্ষতি করতে পারে যেকোন আইডি। একই সাথে ডিডিওএস অ্যাটাকের প্রবনতা বাড়ছে। বাংলাদেশে এডভান্স পারসিসেটেন্স থ্রেট,আইপিটির ঝুকি বেড়ে গিয়েছে। হ্যাকাররা তথ্য চুরি করে সেগুলো ডার্ক ওয়েবে ফাস বা বিক্রি করে। তিনি মন্তব্য করেন দুর্বল পরিষেবার কারনে অন্য দেশ থেকেও বাংলাদেশের নথি চুরি হচ্ছে।
এপিনিক এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল সদস্য সুমন আহমেদ সাবিরের সঞ্চলনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান বলেন, সাইবার সিকিউরিটি কোন একক পক্ষের বিষয় নয়, সকলের সমন্বয় প্রয়াস এখানে জরুরী। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োগের ক্ষেত্রে কিছু কো-লেট্রারাল ড্যামেজ থাকবে, কিন্তু আমাদের ট্রায়াল অ্যান্ড ইরোর প্রসেস এর মাধ্যমে ভুল-ত্রুটি গুলো বের করে নিয়ে আসতে হবে। জনগনের ইতিবাচক মাইন্ডসেট তৈরি করতে হবে। ব্যুরোক্র্যাটদের আইটি বিষয়ে জ্ঞান সম্পন্ন হওয়ার সময় দিতে হবে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা এজেন্সির মহাপরিচালক মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, প্রতিনিয়ত হ্যাকারদের গতি প্রকৃতি পরিবর্তন হচ্ছে। বাংলাদেশে এখন সাইবার সিকিউরিটি স্পেশালিস্ট এর অভাব আছে। বাচ্চাদের এবং কিশোরদের সাইবার বুলিং ও হ্যাকারদের থেকে রক্ষা করতে আরো পদক্ষেপ নিতে আহব্বান জানিয়েছেন তিনি।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি মোঃ নাজমুল ইসলাম বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে আইনের প্রয়োগ যথাযথ করা দরকার। সাইবার সিকিউরিটি যেমন রাষ্ট্রের জন্য প্রয়োজন তেমনি ব্যক্তিগতস্তরেও খুব দরকারি। তাই বাংলাদেশ এর সকল অঞ্চলে সবার জন্য সাইবার সিকিউরিটি প্রদানের দাবি তার। তিনি বলেন, অপরাধ যেখান থেকেই করা হোক না কেন সনাক্ত করার সক্ষমতা থাকতে হবে। জনগনকে সাইবার সিকিউরিরির জন্য পুলিশের সহযোগীতা নিতে বিন্দু মাত্র দ্বিধাবোধ না করার আহব্বান জানিয়েছেন।
প্রতিদিনের বাংলাদেশের টেকনোলজি এডিটর রাশেদ মেহেদী বলেন, এখন ডাটা সায়েন্স এর যুগ চলছে, রাষ্টীয় ভাবে ডাটা সায়েন্সের ক্যাপাবিলিটি তৈরি না হলে বাংলাদেশ পিছিয়ে যাবে। আমাদের সমাজের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করা কারণ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমেই বেশিরভাগ গুজব ছড়ানো হয়।
বিটিআরসির কমিশনার সৈয়দ দিলজার হোসেন বলেন, ওটিটি বিষয়ক নিতিমালা প্রণায়ন হলে জুয়া ও পর্ণ সাইটগুলো বন্ধ করা যাবে।