ইংরেজি নতুন বছর বরণ করতে থার্টি ফার্স্ট নাইটে উন্মুক্ত স্থানে কোনো অনুষ্ঠান না করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক। তবে সেই অনুরোধ উপেক্ষা হয়েছে অনেক ক্ষেত্রেই। উন্মুক্ত স্থানের চেয়ে বাড়ির ছাদের ওপর থেকে আতশবাজিতে খৃষ্টিয় নতুন বছরকে বরণ করেছেন নগরবাসী। পৌষ-সংক্রান্তি বা সাকরাইন সন্ধ্যায় পুরোন ঢাকা, মিরপুর ও মোহাম্মদপুরে ছিলো যথারীতি ফানুসের রঙে বর্ণিল।
ফলে ইংরেজি নববর্ষের প্রথম প্রহরে সারাদেশ থেকে শব্দদূষণ সংক্রান্ত ৩৬৫ ফোন পেয়েছে ‘জরুরি সেবা ৯৯৯’। এর মধ্যে অধিকাংশ অভিযোগই ছিল আতশবাজি ও বোমাবাজি নিয়ে। এছাড়াও বিভিন্ন তার এবং বাড়িতে ফানুস পড়ে আগুনের খবরও পাওয়ার কথা জানিয়েছেন ৯৯৯ এর পরিদর্শক (মিডিয়া) আনোয়ার সাত্তার।
তিনি জানান, ৩১ ডিসেম্বর রাত ১২ টার পর সারাদেশ থেকে শব্দদূষণ সংক্রান্ত ৩৬৫টি ফোন এসেছে। এর মধ্যে শুধু ঢাকা মেট্রো এলাকা থেকে ১৬০টি কলের বিপরীতে সেবা দিতে হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ফানুস থেকে আগুনের ঘটনায় মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোড থেকে রাত ১২ টা ৯ মিনিটে একটি ফোন এসেছিল। তবে ফায়ার সার্ভিস যাওয়ার আগেই আগুন নিভে গেছে।
নববর্ষ উদযাপন সংক্রান্তে ৯৯৯ নম্বরে এই একটিমাত্র অগ্নিকাণ্ডের খবর এসেছে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।
এদিকে পুলিশের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও নববর্ষের প্রথম প্রহরে ফানুস পড়ে মোহাম্মদপুর ছাড়াও ঢাকার আরও তিনটি স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে একটি পুরান ঢাকার লালবাগ, অপরটি সদরঘাট এবং মিরপুর।
এছাড়াও বর্ষবরণ উদযাপনের রাতে ওড়ানো অসংখ্য ফানুস উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেলের বৈদ্যুতিক লাইনের বিভিন্ন স্থানে আটকে যায়। এতে সকাল ৮টা থেকে বন্ধ করা হয় মেট্রোরেল চলাচল। দুই ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর সকাল ১০টার দিকে ফের মেট্রোরেল চলাচল শুরু হয়। সকাল ১০টা ৫ মিনিটে উত্তরা স্টেশন থেকে একটি ট্রেন আগারগাঁও স্টেশনে এসে থামে।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ম্যানেজার (সিভিল অ্যান্ড পি-ওয়ে) মাহফুজুর রহমান জানান, সকালে সুইপিং ট্রেন এসে দেখে লাইনে ফানুস আটকে আছে। সঙ্গে সঙ্গে টেন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। সুইপিং ট্রেন সকালে চালানো হয় লাইন চেক করার জন্য। এখন পর্যন্ত ১৫টির মতো পোড়া ও আধাপোড়া ফানুস অপসারণ করা হয়েছে।
২০২১ সালের থার্টি ফার্স্ট নাইটে ওড়ানো ফানুস পড়ে রাজধানীর প্রায় ১০টি স্থানে আগুন লাগে। মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যে সারাদেশ থেকে প্রায় ২০০টি অগ্নিকাণ্ডের খবর আসে ফায়ার সার্ভিস ও ৯৯৯ এর কন্ট্রোল রুমে। ওই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না হয় এজন্য এবার রাজধানীতে ফানুস উড়ানো ও আতশবাজির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল ডিএমপি। কিন্তু শনিবার সন্ধ্যা থেকেই এ নিষেধাজ্ঞা মানতে দেখা যায়নি নগরবাসীকে।