দুই হাত হারানো অদম্য বাহারের পর সরকারি চকরীতে বয়সসীমা উঠিয়ে নেয়ার দাবিতে ক্ষোভে সার্টিফিকেট পুড়িয়ে প্রতিবাদকারী ইডেন কলেজ শিক্ষার্থীর হতাশা ঘুচতে তার পাশে দাঁড়িয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিপ্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া টিভি প্রতিবেদন দেখে তার সঙ্গে যোগাযোগ করে সোমবার সকালে আইটসিটি টাওয়ারে নিজ দপ্তরে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন মুক্তা সুলতানা-কে।
আলোচনার পর তাকেই বাংলাদেশে কম্পিউটার কাউন্সিলে চাকরি দিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী। কাউন্সিলের স্ট্যাবলিশমেন্ট অভ সিকিউরড ইমেইল ফর গভঃ অ্যান্ড ডিজিটাল লিটারেসি সেন্টার প্রকল্পের ‘কন্টেন্ট ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল কমিউনিকেশন অফিসার’ হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় তাকে। ছয় মাস মেয়াদী প্রকল্পে এই পদে ৩৫ হাজার টাকা মাসিক বেতনে আগামী ৪ জুন থেকে কর্মক্ষেত্রে যোগ দেবেন মুক্তা।
মুক্তার সাক্ষাৎ গ্রহণের পর তার হাতে চাকরির অফার লেটার তুলে দেন জুনাইদ আহমেদ পলক। এসময় বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক রণজিৎ কুমার এবং স্ট্যাবলিশমেন্ট অভ সিকিউরড ইমেইল ফর গভঃ অ্যান্ড ডিজিটাল লিটারেসি সেন্টার প্রকল্প পরিচালক সাইফুল আলম খান উপস্থিত ছিলেন।
চাকরি পেয়ে অশ্রুসিক্ত মুক্তা প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন মুক্তা। একজন প্রতিমন্ত্রী ফেসবুক ভিডিও দেখে নাগরিকের ক্ষোভ-দুঃখ হতাশা দূর করতে তাকে খুঁজে এনে ব্যক্তিগত উদ্যোগে চাকরির ব্যবস্থা করবেন তা এখনো তার কাছে বিস্ময়ের বলে মন্তব্য করেন তিনি।
অপরদিকে প্রতিমন্ত্রী পলক বলেছেন, যথাযথ শিক্ষাগ্রহণ করলে বাংলাদেশে কোনো শিক্ষিত তরুণ-তরুণী বেকার থাকবে না। তারুণ্যের শক্তি বাংলাদেশের শক্তি। দক্ষতা আর মেধা দিয়ে নিজেকে তৈরি করতে পারলে সবাই তাদের পেছনে পেছনে ঘুরবে। আইসিটি বিভাগ তরুণদের প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছে এবং ভবিষ্যতেও করবে। তরুনরা যেন হতাশাগ্ৰস্ত না হয় এবং আত্মবিশ্বাসের সাথে এগিয়ে যেতে পারে সেজন্য আমরা প্রশিক্ষণসহ বিভিন্নভাবে সহায়তা দিচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময়ই একটা কথা বলেন, চাকরির পেছনে না ঘুরে, উদ্যোক্তা হন। আর উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য সরকার সবধরনের সহায়তা দিচ্ছে বলেও তিনি জানান।
এর আগে গত ২৩ মে ফেসবুক লাইভে এসে ২৭ বছরের অর্জিত সব একাডেমিক সার্টিফিকেট পুড়িয়ে ফেলেন ইডেন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে সোশ্যাল ওয়ার্ক এ স্নাতকোত্তর অর্জন করা মুক্তা সুলতানা।
প্রসঙ্গত, গতবছর ১৯ সেপ্টেম্বর বিকালে ফেসবুক লাইভে এসে নিজের সনদপত্র ছিঁড়ে নীলফামারীর ডিমলা বালাপাড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ সুন্দর খাতা গ্রামের মো. মহুবার রহমানের ছেলে বাদশা মিয়া নীলফামারী সরকারি কলেজ থেকে (পদার্থ বিজ্ঞান) স্নাতক সম্পন্ন করে দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চালিয়েও চাকরি না পেয়ে হতাশ হয়ে ফেসবুক লাইভে নিজের অ্যাকাডেমিক সনদপত্র ছিঁড়ে ফেলে ভাইরাল হয়েছিলেন।