অনলাইন থেকে সহিংস চরমপন্থা ও সন্ত্রাসবাদমূলক বাক্য ও আচরণ প্রদর্শন নির্মূল করতে সোচ্চার হয়েছে নিউজিল্যান্ড ও ফ্রান্স। আগামী মাসে প্যারিসে এ নিয়ে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ’র সঙ্গে বৈঠকে বসছেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন।
বুধবার গণমাধ্যমকে আরডার্ন বলেন, তিনি এবং ম্যাক্রোঁ বিশ্ব নেতা এবং প্রযুক্তি কোম্পানিসমূহের প্রধান নির্বাহীদের ‘ক্রাইস্টচার্চ কল’ নামে একটি অঙ্গীকারের বিষয়ে একমত হওয়ার আহ্বান জানাবেন।
অঙ্গীকারের বিষয়ে কোনো বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেননি কিউই প্রধানমন্ত্রী। তবে তিনি বলেন, তারা এখনও এটিকে উন্নত করছেন।
আরডার্ন বলেন, তিনি ফেসবুক, টুইটার, মাইক্রোসফট এবং গুগলসহ প্রযুক্তি কোম্পানিসমূহের প্রতিনিধি এবং বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে কথা বলছেন। অঙ্গীকারটির বিষয়গুলো নিয়ে ঐক্যমতে পৌঁছানোর আশা করছেন নিউজিল্যান্ড ও ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী।
‘এতে বিশেষ করে অনলাইনে সন্ত্রাসবাদের চরমপন্থী কাজ নির্মূল করার ওপর আলোকপাত করা হবে,’ যোগ করেন আরডার্ন।
গত ১৫ মার্চ নিউজিল্যান্ডে ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে ৫০ জনকে হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তি তার হেলমেটে ক্যামেরা বসিয়ে ফেসবুকে সেটি সরাসরি সম্প্রচার করে। ১৭ মিনিটের ওই ভিডিওটি দ্রুত ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে এটি সব জায়গা থেকে মুছে ফেলতে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোকে অনেক বেগ পেতে হয়।
আরডার্ন বলেন, হামলাকারী সন্ত্রাসবাদ ও ঘৃণ্য একটি কাজ প্রচারের জন্য অভূতপূর্ব উপায়ে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করেছিল। এ বিষয়ে কেউ দ্বিমত করবে না যে, একজন সন্ত্রাসীর ৫০ জনকে হত্যা করার সরাসরি ভিডিও সম্প্রচার করার অধিকার আছে।
তিনি আরও বলেন, ‘কোনো প্রযুক্তি কোম্পানি এবং সরকারই অনলাইনে সহিংস চরমপন্থা ও সন্ত্রাসবাদ দেখতে চায় না। এ ব্যাপারে সকলেই একমত।’
গত মাসে ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী মার্ক জুকারবার্গ সরকার ও নিয়ন্ত্রকদের ইন্টারনেটের নীতির ক্ষেত্রে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানান।
ওয়াশিংটনের পোস্টে মতামত প্রকাশ করে জুকারবার্গ বলেন, ‘মানুষকে সুরক্ষিত রাখতে আমাদের কোম্পানির দায়িত্ব রয়েছে। আমরা সবসময় বিশেষজ্ঞদের সাথে আমাদের নীতিসমূহ পর্যালোচনা করি।’
তবে ফেসবুকের সিইও সরাসরি সম্প্রচারের সমস্যাগুলোর সমাধান করেননি। তিনি বলেন, ইন্টারনেট থেকে সমস্ত ক্ষতিকারক কনটেন্ট সরিয়ে ফেলা অসম্ভব।
আরডার্ন বলেন, অনলাইন সন্ত্রাসবাদ নির্মূলের চেষ্টা করার জন্য ম্যাক্রোঁ সাতটি প্রধান অর্থনীতির গ্রুপের মধ্যে নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করেছেন। অনলাইন সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে আগামী ১৫ মে বৈঠক করবেন তারা।