নির্দিষ্টসীমা পর্যন্ত ঋণ গ্রহণ ও ক্রেডিট কার্ডে লেনদেনের ক্ষেত্রে রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা শিথিল করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ফলে এখন থেকে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণগ্রহণ ও দুই লাখ টাকা পর্যন্ত ক্রেডিট কার্ডে লেনদেনে কোনো আয়কর রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র দিতে হবে না।
রবিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) এনবিআরের দ্বিতীয় সচিব মো. মহিদুল ইসলাম চৌধুরী সই করা এক বিশেষ আদেশে এ নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ এর ধারা ১৮৪ এ এর উপধারা ৪-এর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে করারোপ যোগ্য আয় না থাকা সাপেক্ষে ২০ লাখ টাকা সীমা পর্যন্ত ঋণ গ্রহণ এবং শিক্ষার্থী ক্যাটাগরিতে ২ লাখ টাকা সীমা পর্যন্ত ক্রেডিট কার্ডে লেনদেনের ক্ষেত্রে তফসিলি ব্যাংকসমূহে আয়কর রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা শিথিল করা হলো।
এই নির্দেশনা আগামী বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত বলবৎ থাকবে বলেও এতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এর আগে ঋণ ও ক্রেডিট কার্ড নিতে টিআইএন (ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর) সনদ দেখানোর পাশাপাশি, নিয়মিত রিটার্ন জমা দিচ্ছেন কি না, তার প্রমাণপত্র দেখাতে হতো ব্যাংককে। সেই প্রমাণপত্র ছাড়া কাউকে ক্রেডিট কার্ড দিলে সেই ব্যাংককে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান ছিল।
প্রসঙ্গত, দেশে বর্তমানে টিআইএনধারীর সংখ্যা ৭৫ লাখের বেশি। কিন্তু বার্ষিক রিটার্ন জমা দেন ২৫ লাখের মতো। প্রায় অর্ধকোটি টিআইএনধারী রিটার্ন দাখিল করেন না। তাদের জন্য ক্রেডিট কার্ড এবং ব্যাংক থেকে পাঁচ লাখ টাকার বেশি ঋণ নিতে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়। কিন্তু অন্যান্য অর্থবছরগুলোতে শুধু কর শনাক্তকরণ নম্বর বা টিআইএন সনদ দেখালেই ক্রেডিট কার্ড পাওয়া যেতো। তবে চলতি অর্থবছরের বাজেটে টিআইএনের বিপরীতে নিয়মিত রিটার্ন জমা দেওয়া হচ্ছে কি না, তারও প্রমাণপত্র দেখানো বাধ্যবাধকতা আরোপ করে সরকার। আর রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র ছাড়া ক্রেডিট কার্ড দিলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানারও বিধান করা হয়। ক্রেডিট কার্ড ছাড়া আরও ৩৭ ধরনের সেবা পেতে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র ব্যাংকে দেখাতে হচ্ছে।