হুন্ডি, অনলাইন গ্যাম্বলিং, গেমিং, বেটিং, ফরেক্স এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে অবৈধ লেনদেন বেড়েই চলেছে। মোবাইল ব্যাংকিংসহ ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেমকে কাজে লাগিয়ে এসব অপরাধ হুন্ডি প্রক্রিয়াকে সহজ ও ত্বরান্বিত করছে। এর ফলে একদিকে মুদ্রাপাচার বেড়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে, দেশ প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা হারাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে অর্থনীতি।
আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), বাংলাদেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস ডিপার্টমেন্ট ও বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ এবং বিকাশ, নগদ, রকেট ও উপায় এর এমডি ও সিইওদের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব তথ্য জানানো হয়। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএফআইইউ প্রধান মো. মাসুদ বিশ্বাস। অবৈধ হুন্ডি, অনলাইন গ্যাম্বলিং, গেমিং, বেটিং, ফরেক্স এবং ক্রিপ্টো ট্রেডিংয়ের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরেন। তিনি সব সংস্থার একযোগে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এ সংক্রান্ত সংস্থাসমূহের কাজের সমন্বয় সাধন ও জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বানও জানান তিনি। এছাড়াও অবৈধ হুন্ডি, অনলাইন জুয়া, বেটিং, ফরেক্স ও ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে প্রচার-প্রচারণা বাড়ানোর তাগিদ দেন বিএফআইইউ প্রধান।
সভায় জানানো হয়, মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কাজে অর্থায়ন প্রতিরোধে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সংস্থা হিসেবে বিএফআইইউ সব ধরনের অর্থপাচার বন্ধে অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে একযোগে কাজ করছে। এ সমস্ত অপরাধ প্রতিরোধে বিএফআইইউ ইতোমধ্যেই ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াসহ বিভিন্ন মিডিয়াতে বিজ্ঞপ্তি ও বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধির কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। এছাড়াও বিএফআইইউ প্রতিনিয়ত আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহকে এ বিষয়ে তথ্য সরবরাহ করছে। এ সংক্রান্ত ওয়েবসাইট, অ্যাপ, ফেইসবুক পেজ ও ইউটিউব লিংক চিহ্নিতকরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইন প্রয়োগকারী ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা বরাবর প্রেরণ করছে। সম্প্রতি ইলেকট্রনিক ও ওটিটি প্লাটফর্মে অনলাইন বেটিং ও গ্যাম্বলিং সংক্রান্ত বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা তাদের সেবার অপব্যবহার বন্ধের লক্ষ্যে গ্রাহকের কেওয়াইসি প্রসিডিউর ও লেনদেন মনিটরিং জোরদারকরণের বিষয়ে অঙ্গীকার করেন। সভায় অংশগ্রহণকারী এমএফএস প্রতিষ্ঠান প্রধানরা অবৈধ হুন্ডি, অনলাইন গ্যাম্বলিং, গেমিং, বেটিং, ফরেক্স ও ক্রিপ্টো ট্রেডিং প্রতিরোধে একযোগে কাজ করার কথাও জানান। পাশাপাাশি এমএফএস প্রতিষ্ঠানসমূহ এজেন্ট ও গ্রাহক পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আরো জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে একমত পোষণ করেন।
বৈঠকের বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, হুন্ডি, অনলাইন গ্যাম্বলিং, গেমিং, বেটিং, ফরেক্স এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে সংঘটিত অবৈধ লেনদেন বৃদ্ধি পেয়েছে। ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেমকে কাজে লাগিয়ে এসব অপরাধ হুন্ডি প্রক্রিয়াকে সহজ ও ত্বরান্বিত করছে। এর ফলে একদিকে মুদ্রা পাচার বেড়ে যাচ্ছে এবং অন্যদিকে দেশ প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা হারাচ্ছে। এরফলে দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।