যে-কোনো ভাষার প্রায়োগিক ক্ষেত্রে ফন্ট বা হরফের বিন্ন্যাস গুরুত্বপূর্ণ। ডিজিটাল এই যুগে ইলেকট্রনিক ডিভাইসে লেখা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে বিভিন্ন সৃষ্টিশীল ফন্টের ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলা ভাষার প্রতি ভালোবাসা আর ফন্টের ব্যবহারকে আরও সাবলীল করতে বসুন্ধরা গ্রূপ ভাষার মাসে এনেছে ৩টি নতুন ফন্ট- ‘বসুন্ধরা ৫২’, ‘বসুন্ধরা ৭১’ ও ‘বসুন্ধরা ২১’।
শনিবার বাংলা একাডেমী মিলনায়তনে নতুন ফন্ট তিনটির উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বসুন্ধরা গ্রূপ থেকে উপস্থিত ছিলেন এম এম জসীম উদ্দিন (সি.ও.ও., ব্র্যান্ড এন্ড মার্কেটিং, সেক্টর এ), কাজী রোকন উদ্দিন, ম্যানেজার, মিডিয়া ও পি. আর, সেক্টর-এ, বসুন্ধরা গ্রূপ), তাকবীর হাসান (ডেপুটি ম্যানেজার, ব্র্যান্ড, বসুন্ধরা ফুড এন্ড বেভারেজ লি.)-সহ আরও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
ফন্ট তিনটি দেশবরেণ্য তিনজন মানুষের হাত দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সবার ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। বাংলা একাডেমির সভাপতি, ঔপন্যাসিক, লেখক ও কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন; বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নুরুল হুদা; এবং প্রখ্যাত কবি হেলাল হাফিজ। দেশ বরেণ্য কথাসাহিত্যিক, কবি, ঔপন্যাসিক, লেখদের মিলনমেলায় পরিণত হয় এ আয়োজন। গালুমগিরি সংঘের প্রধান সমন্বয়ক কবি শিমুল সালা্হউদ্দিন এর সঞ্চালনায় এ আয়োজনে আরো উপস্থিত ছিলেন ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের পরিচালক ও প্রখ্যাত সাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন, কবি ও অনুবাদক রাজু আলাউদ্দিন, কবি ও শিক্ষাবিদ শোয়াইব জিবরান সহ দেশ বরেণ্য সাহিত্যিকরা।
উদ্বোধনী স্যুভেনিরে, বসুন্ধরা গ্রুপের সম্মানিত চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান বলেন, দেশ ও মানুষের কল্যাণে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছে বসুন্ধরা গ্রূপ। বাংলা ভাষার প্রতি দায়বদ্ধতা, বাঙালি জাতির ইতিহাস ও নিজস্ব সংস্কৃতি চর্চাকে আরো বেগবান করতে বসুন্ধরা গ্রুপ নানা সময়ে নানা পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। আমাদের গৌরবজ্জ্বল লড়াই ও সংগ্রামের সময়কার অনন্য চেতনাদীপ্ত বর্ণগুলোকে পূর্ণাঙ্গভাবে ফন্ট আকারে বাংলা ভাষায় যুক্ত করার ক্ষুদ্র প্রয়াস হাতে নিয়েছি আমরা। নতুন এই ফন্ট সৃষ্টিশীল ও কর্মোদ্যোগী মানুষের নিত্যদিনের ব্যবহার্য হয়ে উঠুক, পরিচিতি পাক এবং সমৃদ্ধ হোক বাংলা ভাষা।
উক্ত স্যুভেনির-এ বসুন্ধরা গ্রূপের ভাইস চেয়ারম্যান, জনাব সাফায়াত সোবহান বলেন, ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলন থেকেই বাংলাভাষী মানুষের স্বাধিকার সংগ্রামের ইতিবৃত্ত রচিত হয়। তাঁদের সম্পৃক্ততা ও বীরত্বের কথা লেখা ছিল সেই সময়ের ব্যানারে পোস্টারে ও দেয়ালে দেয়ালে। সিএ অক্ষরগুলো সম্মানের ও গৌরবের। সেই বর্ণমালাকে সমৃদ্ধ করতে বসুন্ধরা গুঁড়া মশলা তথা বসুন্ধরা গ্রূপ এক অনন্য উদ্যোগ নিয়ে সৃষ্টি করছে ৩ টি ফন্ট। আশা করছি এই ফন্টগুলো আপামর জনসাধারণের কাছে ব্যবহার্য হয়ে উঠবে আর বাংলা ভাষাকে সমৃদ্ধ করবে। আমাদের প্রত্যাশা এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা বাংলা ভাষার সাবলীল প্রকাশ ও ব্যবহারে অবদান রাখবে। সেই সাথে পাঠক, লেখক, ভাষাবিদ ও বাংলা ফন্টের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার ন্যূনতম উপকারে এলেই আমাদের কষ্ট সার্থক হবে।
বাংলা ফন্ট নিয়ে বহু বছর ধরে কাজ করছেন এমন একজন হলেন ফন্ট ডেভেলপার সেলিম হোসেন সাজু। এই ৩টি ফন্ট তৈরি করতে তিনি অনুপ্রেরণা হিসেবে নিয়েছেন স্বাধীনতার সংগ্রামকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা নানা আন্দোলন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও আপামর বাংলার রূপবৈচিত্র্যকে। আর এই পুরো কর্মযজ্ঞটিতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে তাদের পাশে ছিল বসুন্ধরা গুঁড়া মশলা তথা বসুন্ধরা গ্রুপ।