দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকার ক্রয়াদেশ পেয়ে দ্বিতীয় অ্যাডভান্সড টেকনোলজি সল্যুশন-এটিএস এক্সপো শেষ হলো দেশের পতাকাবাহী হাইটেক প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন। আগামী তাই দ্বিগুণ পরিসরে এই মেলা আয়োজনের কথা ভাবছেন কোম্পানিটির শীর্ষ কর্মকর্তারা।
শনিবার (৭ ডিসেম্বর, ২০২৪) রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটির রাজদর্শনে অনুষ্ঠিত ‘এটিএস এক্সপো-২০২৪’ এর সমাপনীতে আয়োজক প্রতিষ্ঠান ওয়ালটনের কাঝ থেকে এই তথ্য মিলেছে। একক এই শিল্প মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য এবং বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা শেখ বশীর উদ্দিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বাণিজ্য সচিব সেলিম উদ্দিন।
সমাপনী অনুষ্ঠানে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি’র চেয়ারম্যান এস এম শামছুল আলম, ভাইস-চেয়ারম্যান এস এম আশরাফুল আলম, ম্যানেজিং ডিরেক্টর এস এম মাহবুবুল আলম, পরিচালক এস এম নূরুল আলম রেজভী, ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর সিয়াম আহমেদ ও বিদ্যা সিনহা মীমসহ ওয়ালটনের অন্যান্য ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তাগণ এবং সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, সফলতা হচ্ছে ধারাবাহিক প্রচেষ্টার ফসল। ওয়ালটন পণ্যসারির বৈচিত্রময়তা, স্মার্ট প্রযুক্তির ব্যবহার এবং সাশ্রয়ী মূল আমাকে মুগ্ধ করেছে। আমি চাই, ওয়ালট নিজেদের অর্জন যেভাবে সবার সঙ্গে ভাগ করে নিচ্ছে তা আরো বাড়াবে।
এটিএস এক্সপো’র সমাপনী দিনে বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন বাণিজ্য এবং বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা শেখ বশীর উদ্দিন। এসময় তিনি ওয়ালটনের অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ‘হট অ্যান্ড কুল’ ফিচারসমৃদ্ধ নতুন মডেলের কমার্শিয়াল ভিআরএফ এসি উদ্বোধন করেন। পরিদর্শনকালে ওয়ালটনের সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল পণ্য সামগ্রীসহ ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্পে ব্যবহার উপযোগী ইন্ডাস্ট্রিয়াল সল্যুশন, ম্যাটেরিয়ালস ও কম্পোনেন্টস দেখে অভিভূত হন। এসব পণ্য সামগ্রী দেশীয় অন্যান্য শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাছে তুলে ধরতে ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ আগামীতেও এ ধরণের মেলা আয়োজন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এটিএস এক্সপো আয়োজক কমিটি জানায়, এটিএস এক্সপোতে প্রত্যাশার চেয়েও অনেক বেশি সাড়া পেয়েছি তারা। দেশি-বিদেশি বেশিরভাগ শিল্প প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গসহ এনবিআর চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, বাণিজ্য সচিব, বিভিন্ন দেশের ডিপ্লোম্যাট, সরকারি-বেসরকারি সংস্থার উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিবৃন্দ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, বিভিন্ন ব্যাংকের প্রতিনিধিগণ, বেশ কয়েকজন সুপরিচিত অভিনয় শিল্পী ও দেশের তরুণ উদ্যোক্তারা ওয়ালটনের এই শিল্পমেলা পরিদর্শন করেছেন।
ওয়ালটন কর্তৃক এটিএস এক্সপো আয়োজনের এই উদ্যোগ সকল মহলে অত্যন্ত প্রসংশিত হয়েছে। এটিএস এক্সপো আয়োজনের মূল লক্ষ্যই ছিলো দেশীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহকে আমদানি বিকল্প গুণগতমানের ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যাটেরিয়ালস, কম্পোনেন্টস ও সল্যুশন প্রদানের মাধ্যমে দেশের আমাদনি নির্ভরতা কমিয়ে দেশীয় শিল্পের ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি করা। সার্বিক বিবেচনায় বলা চলে আমাদের সেই লক্ষ্য অনেকাংশেই সফল হয়েছে। এক্সপোতে আগত শিল্পোদ্যাক্তা, ক্রেতা ও দর্শণার্থীদের ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখে আমরা খুবই আনন্দিত ও সন্তুষ্ট। যা আগামীতে আরো এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ওয়ালটনকে উৎসাহ যোগাবে।
এটিএস এক্সপোতে দেশি-বিদেশি শিল্প প্রতিষ্ঠান থেকে যেভাবে ব্যাপক সাড়া পেয়েছি এবং ওয়ালটন ব্র্যান্ড ও পণ্যের প্রতি তাদের যে আস্থা দেখেছি তা আমাদেরকে আগামীতেও এই ধরণের শিল্পমেলা আয়োজনে আরো বেশি অনুপ্রাণিত করেছে। নতুন নতুন উদ্ভাবনের মাধ্যমে আমাদের বৈশ্বিক মর্যাদা এবং রফতানি আয় আরো বাড়াতে হবে।
নিজস্ব চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি দেশের অন্যান্য শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহকে আমদানি বিকল্প গুণগতমানের ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যাটেরিয়ালস, কম্পোনেন্টস ও টেস্টিং সলিউশনস প্রদানের মাধ্যমে আমদানি নির্ভরতা হ্রাসের মাধ্যমে বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় ও দেশীয় শিল্পের ক্ষমতায়নে অবদান রাখবে ওয়ালটন।